বেপরোয়া: এমন দৃশ্যই আকছার দুর্গাপুরের পথে। ছবি: বিশ্বনাথ মশান
দ্রুত স্কুটি ছুটিয়ে এসে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের গেটের সামনে থামলেন এক ছাত্রী। হেলমেটটা ঝোলানো স্কুটিতেই।
দৃশ্য দুই: শহরের ব্যস্ত এলাকা। ভাইয়ের মোটরবাইকের পিছনে বসে যাচ্ছেন দিদি। ভাইয়ের মাথায় হেলমেট থাকলেও, দিদির মাথা ফাঁকা।— দু’টো ছবিই দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের। প্রশাসন এবং বাসিন্দাদের একাংশের ক্ষোভ, লাগাতার প্রচারের পরে পুরুষ মোটরবাইক আরোহীদের মধ্যে হেলমেট পরার চল বেড়েছে। কিন্তু বেশির ভাগ মহিলা চালকদের মধ্যে হেলমেট না পরারই প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
সম্প্রতি জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনায় মরা যান এক স্কুল শিক্ষিকা। পুলিশের দাবি, ওই শিক্ষিকা মাথায় হেলমেট পরেননি। হেলমেট থাকলে হয়তো তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকত। শুধু তাই নয়, শহরের বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসকদের দাবি, মাসে গড়ে পাঁচ থেকে সাতটি মোটরবাইক দুর্ঘটনায় জখম আরোহী ভর্তি হন। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মাথায় হেলমেট থাকে না।
কিন্তু কেন এমনটা? স্কুটিতে চড়ে মেয়েকে স্কুলে দিতে এসেছিলেন এক মা। তাঁর মাথায় হেলমেট নেই। তাঁর যুক্তি, ‘‘তাড়াহুড়োয় আর হেলমেট পরার সময় হয়নি!’’ শহরেরই একটি স্কুলের দশম শ্রেণির এক ছাত্রীর আবার দাবি, ‘‘বাড়ির কাছেই স্কুল। অল্প দূরত্বের জন্য হেলমেট পরি না।’’ শহরের একটি প্রেক্ষাগৃহে বন্ধুর মোটরবাইকে চড়ে সিনেমা দেখতে এসেছিলেন এক তরুণী। হেলমেট না পরার কারণ হিসেবে তিনি আবার বলেন, ‘‘চুলের স্টাইল নষ্ট হবে।’’
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরে ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচি শুরু হয় রাজ্যে। সে জন্য রাস্তা জুড়ে পোস্টার, ব্যানার, ফ্লেক্স লাগিয়ে প্রচার চালায় পুলিশ। পাম্পগুলিতেও ‘নো হেলমেট, নো পেট্রোল’ বোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হয়। তার পরেও পথ-সচেতনতার হুঁশ ফেরেনি বলে শহরবাসীর একাংশের অভিযোগ। অনেক সময়ে হেলমেট ধার করেও মহিলারা পাম্পে গিয়ে তেল নিচ্ছেনে।
অথচ হেলমেট না পরলে হলে জরিমানা, আরোহীকে আদালতে পাঠানোরও নিদান রয়েছে। তার পরেও এই হাল কেন? ট্রাফিক পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘অভিযানের আগাম খবর পেলে অনেকে রাস্তা বদলে নেন। তবু হেলমেট পরেন না।’’ তবে নজরদারি চলায় আগের থেকে মহিলাদের মধ্যে হেলমেটের অভ্যাস বেড়েছে বলে তাঁর দাবি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy