আসানসোলের এক স্কুলে আরপিএফের কর্মশালা। নিজস্ব চিত্র
কলকাতায় কলেজে পড়াশোনা করতেন আসানসোলের তরুণী। থাকতেন সেখানকার হস্টেলে। এক্সপ্রেস ট্রেনে বাড়ি থেকে সেখানেই ফিরছিলেন। চলন্ত ট্রেনের কামরায় তাঁর সঙ্গে অশালীন আচরণ করে এক যুবক। সহযাত্রীদের মারফত দ্রুত সেই খবর পৌঁছে যায় ট্রেনে কর্তব্যরত আরপিএফ কর্মীদের কাছে। অভিযুক্তকে ধরে ফেলে তারা।
সম্প্রতি এলাকার নানা স্কুলে নারীসুরক্ষা বিষয়ক কর্মশালায় রেলের আসানসোল ডিভিশনের আরপিএফের আধিকারিকেরা বছর কয়েক আগের এই ঘটনার কথা বলছেন ছাত্রীদের। তাঁরা জানাচ্ছেন, সে দিন ওই কলেজছাত্রীকে হেনস্থার খবর আরপিএফ কর্মীদের কাছে তাড়াতাড়ি পৌঁছনোয় অভিযুক্তকে ধরে ফেলা সম্ভব হয়েছিল। রেলযাত্রায় মহিলারা এই ধরনের পরিস্থিতিতে পড়লে যাতে দ্রুত সহায়তা পান, রেলবোর্ড সেই ব্যবস্থা করেছে— স্কুলে-স্কুলে কর্মশালা করে সেই বার্তা পৌঁছে দিচ্ছে আরপিএফ।
আসানসোল ডিভিশনের অন্তর্গত বিভিন্ন বালিকা বিদ্যালয়ে এই কর্মশালার আয়োজন করেছে রেল। এই ডিভিশনের আরপিএফ সিবিআই আধিকারিক বাসুকী নাথ জানান, আরপিএফের সহায়তা পেতে রেলের তরফে ১৮২ নম্বর চালু করা হয়েছে। দেশের যে কোনও প্রান্তে রেলে ভ্রমণের সময় বিপদে পড়লে যে কোনও যাত্রী ১৮২ নম্বরে ডায়াল করতে পারেন। সেই খবর পৌঁছে যাবে নিকটতম কন্ট্রোল রুমে। ট্রেনের যাত্রাপথ চিহ্নিত করে আরপিএফ কর্মীরা ওই যাত্রীকে সহায়তা করতে নিকটতম স্টেশনে হাজির থাকবেন। বাসুকী নাথ বলেন, ‘‘এই ব্যবস্থা চালু হওয়ায় আমরা অনেক অভিযুক্তকে হাতেনাতে ধরতে পেরেছি। মহিলা যাত্রীরা ফলও পেয়েছেন।’’ তবে এখনও অনেকেই এ ব্যাপারে সচেতন না হওয়ায় বিভিন্ন স্কুল ও এলাকায় গিয়ে কর্মশালা করার উদ্যোগ হয়েছে বলে তিনি জানান।
আসানসোলের আরপিএফের সিনিয়র কম্যান্ড্যান্ট অচ্যুতানন্দ ঝা জানান, সম্প্রতি রেল মন্ত্রকের তরফে প্রত্যেক ডিভিশনে সব মেয়েদের স্কুলে এই কর্মশালা আয়োজনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘স্কুল-কলেজের ছাত্রীদের সচেতন করা হলে তারা বাড়ি বা এলাকার অন্য মহিলাদের সচেতন করতে পারবে। ফলে সচেতন করার কাজটি অনেক সহজ হবে।’’ আরপিএফ আধিকারিকেরা আরও জানান, অনেক জায়গায় ট্রেনের মহিলা কামরায় পুরুষ যাত্রীদের ভ্রমণের প্রবনতা দেখা যায়। সেক্ষেত্রেও ১৮২ নম্বরে ডায়াল করলে আরপিএফের সহায়তা মিলবে।
কর্মশালাগুলিতে আধিকারিকেরা ট্রেনে যাত্রা করার সময়ে কোনও অপরিচিতের কাছ থেকে খাবার বা পানীয় না খাওয়া, অভিভাবকহীন কোনও বস্তুতে হাত না দেওয়া-সহ বিভিন্ন বিষয়ে সতর্ক করছেন। এই রকম পরিস্থিতিতেও ১৮২ নম্বর ডায়াল করার আর্জি জানিয়েছেন তাঁরা। আরপিএফের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন আসানসোলের বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষিকা, ছাত্রী থেকে এলাকার বাসিন্দারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy