Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

সৌদিতে আটকে রায়নার যুবক

 মাটি কাটার যন্ত্র চালিয়ে ৭৫ হাজার টাকা মিলবে, এই আশ্বাস দিয়ে সৌদি আরবে নিয়ে গিয়েছিল এক দালাল সংস্থা। কিন্তু সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরে পাসপোর্ট-ভিসা আটকে রেখে ইচ্ছের বিরুদ্ধে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করানো হচ্ছে, ফোনে ছেলে এ কথা জানানোর পরে চিন্তায় পড়ে গিয়েছে রায়নার যুবকের পরিবার।

উদ্বিগ্ন: কিরণের পরিজনেরা। রায়নার বাঁধগাছায়। নিজস্ব চিত্র

উদ্বিগ্ন: কিরণের পরিজনেরা। রায়নার বাঁধগাছায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৪২
Share: Save:

মাটি কাটার যন্ত্র চালিয়ে ৭৫ হাজার টাকা মিলবে, এই আশ্বাস দিয়ে সৌদি আরবে নিয়ে গিয়েছিল এক দালাল সংস্থা। কিন্তু সেখানে নিয়ে যাওয়ার পরে পাসপোর্ট-ভিসা আটকে রেখে ইচ্ছের বিরুদ্ধে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করানো হচ্ছে, ফোনে ছেলে এ কথা জানানোর পরে চিন্তায় পড়ে গিয়েছে রায়নার যুবকের পরিবার। শেখ কিরণ নামে ওই যুবককে দেশে ফেরানোর জন্য প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন পরিজনেরা।

রায়নার বাঁধগাছার বাসিন্দা শেখ কিরণের বাবা মহাবুদুল শেখ গোটা বিষয়টি পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে জানিয়েছেন। বিস্তারিত জানিয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে বিদেশ মন্ত্রক ও সৌদি আরবের রাষ্ট্রদূতের দফতরে। তাতে মহাবুদুল জানিয়েছেন, কয়েক সপ্তাহ আগে কিরণ ফোন করে জানান, তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। খণ্ডঘোষের গুঁইর গ্রামের শেখ সাকির ওরফে মিলনকে সৌদি আরব যাওয়ার জন্য দু’লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন কিরণ। তাঁকে মাটি কাটার যন্ত্রের চালকের কাজ দেওয়া হবে বলে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁকে দিয়ে নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করানো হচ্ছে।

কিরণের দাদা শেখ সাহেবের দাবি, ‘‘কোনও রকম মুখ খুললেই ভাইয়ের উপরে নির্যাতন করা হচ্ছে। কাজ ঠিকমতো হচ্ছে না বলে মারধরও করা হচ্ছে। তার মধ্যেও দু’বার লুকিয়ে ফোন করে কাঁদছিল‌ আর জানতে চাইছিল, বাড়ি ফেরানোর কোনও ব্যবস্থা হল কি না।’’ খণ্ডঘোষের ওই যুবকের পাল্টা দাবি, ‘‘কিরণ সৌদি আরবে গিয়েছে জানি। ও সৌদি আরবের এক দালাল সংস্থার মাধ্যমে সেখানে গিয়েছে। আমার সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই।’’

এ ভাবেই সৌদি আরবে কাজে গিয়ে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছিল ইনফর্মেশন টেকনোলজিতে স্নাতক মঙ্গলকোটের ভাল্যগ্রামের আশরাফুল হকের। মাসে ৫০ হাজার টাকা বেতনের আশ্বাসে সেখানে গিয়ে জুটেছিল সাফাইকর্মীর কাজ। সঙ্গে মারধর-অত্যাচার। জেলা পুলিশ এবং সিআইডি-র সাহায্যে এক বছর পরে বাড়ি ফেরেন আশরাফুল।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় ছ’বছর ধরে মাটি কাটার যন্ত্র চালাচ্ছেন কিরণ। মাস দুয়েক আগে মোটা আয়ের আশায় সৌদি আরবে যান। নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে কিরণের ফোন আসার পর থেকে চাষি পরিবারের মুখ শুকিয়ে গিয়েছে। ছেলের জন্য কেঁদে চলেছেন মা তাজমিরা বেগম। তাঁর কথায়, ‘‘ছেলেকে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রশাসনই ভরসা।’’ জেলা পুলিশ সুপার কুণাল অগ্রবাল বলেন, ‘‘ঘটনার কথা শুনেছি। রায়না থানার কাছে বিশদে জানার পরে যথাযথ ব্যবস্থা নেব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Saudi Arabia Raina Young Man
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE