Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

অভিভাবকদের বিক্ষোভের জেরে বন্ধ ডানলপের স্কুল

বন্ধ হয়ে গেল সাহাগঞ্জে ডানলপ ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। বিপাকে ১৩০০ ছাত্রছাত্রী। সাহাগঞ্জের ডানলপ কারখানা দীর্ঘ দিন বন্ধ। ২০০৭ সালে পবন রুইয়া সেই বন্ধ কারখানা কিনে খোলার পরিকল্পনা করেন। হস্তান্তর হওয়ার পরে শ্রমিকরা একটু আশার আলো দেখেছিলেন। কিন্তু কারখানা ফের বন্ধ হয়ে যায়। তবে কারখানা-সংলগ্ন ইংরেজি মাধ্যম স্কুলটি চালু ছিল। অভিভাবকদের একাংশের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে এ বার অনির্দিষ্ট কালের জন্য সেটিও বন্ধ করে দিলেন কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
সাহাগঞ্জ শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৪ ০০:২৭
Share: Save:

বন্ধ হয়ে গেল সাহাগঞ্জে ডানলপ ইংরেজি মাধ্যম স্কুল। বিপাকে ১৩০০ ছাত্রছাত্রী।

সাহাগঞ্জের ডানলপ কারখানা দীর্ঘ দিন বন্ধ। ২০০৭ সালে পবন রুইয়া সেই বন্ধ কারখানা কিনে খোলার পরিকল্পনা করেন। হস্তান্তর হওয়ার পরে শ্রমিকরা একটু আশার আলো দেখেছিলেন। কিন্তু কারখানা ফের বন্ধ হয়ে যায়। তবে কারখানা-সংলগ্ন ইংরেজি মাধ্যম স্কুলটি চালু ছিল। অভিভাবকদের একাংশের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ তুলে এ বার অনির্দিষ্ট কালের জন্য সেটিও বন্ধ করে দিলেন কর্তৃপক্ষ।

কেজি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশোনা হয় ১৯৬৬ সালে স্থাপিত স্কুলটিতে। ডানলপ কর্তৃপক্ষই বর্তমানে স্কুলের পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন। কোম্পানির অচলাবস্থা দেখা দিলেও স্কুলে তার কোনও প্রভাব পড়েনি এত দিন। যদিও মঙ্গলবার স্কুল বন্ধের নোটিস ঝুলিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। বুধবার সকাল থেকে অভিভাবকেরা জড়ো হতে থাকেন স্কুলগেটে। তাঁদের অভিযোগ, পরিকাঠামোগত দিক থেকে স্কুলে বহু সমস্যা আছে। বিদ্যুতের সংযোগ কেটে দেওয়ার পরে জেনারেটরের মাধ্যমে চলছে কাজ। ছাত্রছাত্রীদের জন্য ব্যবহৃত শৌচালয়ের অবস্থা খুবই খারাপ। নিয়মিত সাফাই হয় না। তার উপর, ছাত্রীদের জন্য আলাদা শৌচালয় নেই। যা নিয়ে রীতিমতো উদ্বিগ্ন অভিভাবকেরা।

এপ্রিলের শুরুতে নতুন ক্লাস শুরু হতেই কর্তৃপক্ষ ২০ শতাংশ বেতন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। অভিভাবকদের বক্তব্য, তাঁদের সঙ্গে কোনও রকম কথাবার্তা না বলেই একতরফা ভাবে এই সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ। তারই প্রতিবাদেই গত ১৭ এপ্রিল অভিভাবকেরা স্কুলের প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে দেখা করেন। অভিভাবকদেরা জানিয়ে দেন, বেতন বাড়ানো হলে স্কুলের পরিকাঠামোগত সমস্যাগুলিরও সমাধান করতে হবে। স্কুল কর্তৃপক্ষ অবশ্য কোনও সদুত্তর দেননি বলেই দাবি ওই অভিভাবকদের। উল্টে, অভিভাবকের বিরুদ্ধে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অভিযোগ তোলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। সেই অভিযোগের ভিত্তিতেই স্কুল বন্ধের নোটিস জারি হয়েছে।

অভিভাবক রমানন্দ যাদব এ দিন বলেন, “স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের বেতন বাড়ানো কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব। তাতে কোনও ক্ষতি নেই। কিন্তু স্কুলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও পরিকাঠামোর উন্নয়ন করা উচিত। কর্তৃপক্ষ অভিভাবকদের সঙ্গে কোনও আলোচনা ছাড়াই একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল। তার প্রতিবাদ করায় আজ স্কুল বন্ধ করে ছাত্র-ছাত্রীদের অন্ধকারে ঠেলে দিল। কারখানা শেষ করে এ বার স্কুলটাকে শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।” রমা হালদার বলেন, “পরিকাঠামোর সমস্যা থাকলেও স্কুলে পড়াশোনার মান ভাল। বেতন বাড়ানোর একতরফা সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মুখ খুলতেই বিশৃঙ্খলার অভিযোগ তুলে ছাত্র-ছাত্রীদের সমস্যার মুখে ঠেলে দেওয়া হল।” অভিভাবকেরা বিষয়টি জানিয়েছেন মহকুমাশাসককে। মহকুমাশাসক (সদর) সুদীপ সরকার বলেন, “স্কুল কর্তৃপক্ষ ও অভিভাবকদের নিয়ে বৈঠক ডাকা হবে। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাতে কোনও সাড়া না দিলে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।”

প্রধান শিক্ষিকা চন্দনা চক্রবর্তী এ দিন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, এ বিষয়ে যা বলার ডানলপ কর্তৃপক্ষই বলবেন। কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, “ওখানে বার বারই এক শ্রেণির অভিভাবক স্কুলের পরিবেশ নষ্ট করছেন। গণ্ডগোল লেগেই আছে। তিন বছর পরে ২০ শতাংশ বেতন বাড়ানো হয়েছে। অভিভাবকদের দায়িত্বজ্ঞানহীন কাণ্ডের জেরে এই পদক্ষেপ করতে আমরা বাধ্য হয়েছি।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

dunlop school guardians agitation
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE