মেজাজে মিঠুন। চণ্ডীতলায় দীপঙ্কর দে-র তোলা ছবি।
সাদা সুতির পাঞ্জাবি, কালো জিনস্। গলায় বেগুনি রঙের উড়নি। চোখে কালো সানগ্লাস। এই পোশাকের দীর্ঘকায় চেহারাটা মঞ্চে দেখে তুমুল হাততালিতে ফেটে পড়ল উপস্থিত হাজার কয়েক মহিলা-পুরুষ। বৈশাখের কড়া রোদে হাঁসফাঁস অবস্থা সকলের। তবুও উৎসাহের খামতি নেই।
শুরুতেই তিনি বললেন, “রামমোহনকে প্রণাম জানাই।” হাততালিটা ফের যেন থামতেই চায় না। কিন্তু হঠাৎ রামমোহনকেই সম্মান জানাতে গেলেন কেন? আসলে জায়গাটা তো খানাকুল। রামমোহনের জন্মস্থান বলে কথা। তবু ভোটের প্রচারে এসে রাজা রামমোহনের নামটা উঠে আসবে, হয় তো আশাই করেনি জনতা। তাই নাম শুনেই তারা ভেসে গেল আবেগে।
শুরুতেই ছক্কা মেরে আরামবাগের তৃণমূল প্রার্থী অপরূপা পোদ্দারের হয়ে ভোটের প্রচার শুরু করলেন দলের তারকা সাংসদ মিঠুন চক্রবর্তী।
তাঁর কথার জাদুতে ভোলেনি এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া মুশকিল। বৃহস্পতিবারের বারবেলায় খানাকুলের ফুটবল ময়দানে হাজির কয়েক হাজার মানুষকেও মিঠুন ছুঁয়ে গেলেন সেই জাদুতেই। বললেন, “আমি রাজনীতি জানি না, এমনটা বলছি না। আমি তো কচি খোকা নই।” কালো চশমা খোলার অনুরোধ উড়ে এসেছিল ভিড়ের মধ্যে থেকে। তা শুনে নায়কের ঠোঁটের কোণে হাসির ঝিলিক খেলে গেল। উত্তর এল, “ও চশমা আমি খুলব না। আমার মহিলা ফ্যান প্রচুর।” সামান্য সময় সেই হাসিটুকুই মুখে ধরে মাইক হাতে দাঁড়িয়ে থাকলেন মিঠুন। হাততালিটা থামুক তো আগে!
তৃণমূলের আর এক প্রথম সারির নেতা তথা রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্রকে পাশে বসিয়ে রাজ্যসভার সাংসদ মিঠুন বললেন, “আমি কিন্তু স্বার্থ ছাড়া চলি না।” আবার কিছুটা বিরতি। লোকজনের চোখেমুখে কৌতুহল। এ বার কী বলে বসলেন প্রচারে এসে? মিঠুন বললেন, “আমার একটাই স্বার্থ। বাংলার ভাল হোক।”
আরও কিছু হয় তো বলার ইচ্ছে ছিল মিঠুনের। তেমন অনুরোধও উড়ে এল। রসিকতা করে তারকা বললেন, “জিতলে আবার আসব। তখন আরও অনেক কিছু বলে যাব। এখন বেশি কিছু বললে তো নির্বাচন কমিশন ধরবে!”
হাসির রোল ভেসে এল ভিড়ের মধ্যে থেকে। তবে ভক্তদের অনুরোধ একেবারে ফেরাননি মিঠুন। নিজের ছবি থেকে দু’একটা সংলাপ তাঁকে দিয়ে বলিয়ে ছেড়েছে ভক্তেরা।
এ দিন হেলিকপ্টারে চড়ে মিঠুন আসেন খানাকুলে। শুরুতে বক্তৃতা করতে উঠে আরামবাগের বহিষ্কৃত সিপিএম নেতা অনিল বসু সম্পর্কে কড়া মন্তব্য করেন মদন।
খানাকুলের সভা সেরে হুগলির তৃণমূল প্রার্থী রত্না দে নাগের সমর্থনে মিঠুন সভা করতে যান ধনেখালি থানা-সংলগ্ন মাঠে। তৃণমূলকে লোকসভায় সুযোগ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে মিঠুন স্বভাবসিদ্ধ ঢঙে বলেন, “তিন বছরে (রাজ্যের দায়িত্বে তৃণমূল যত দিন) আপনারা ট্রেলার দেখেছেন। পাঁচ বছরে পুরো সিনেমা দেখবেন।”
চণ্ডীতলার জঙ্গলপাড়ায় শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রচারে মিঠুন বলেন, “বাংলায় নতুন খেলা চলছে। কাটাকাটির (ভোট) খেলা। আপনারা ভাবুন, তাতে যোগ দেবেন কিনা।”
সহ প্রতিবেদন: তাপস ঘোষ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy