Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
পরস্পরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ

কানাইপুরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর কাজিয়া প্রকাশ্যে

ভোটের দিনের গোলমাল নিয়ে দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অবশ্য তার ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের হয়নি।

থমথমে: রাত পোহালেই ভোটের ফল। পুলিশি টহল পান্ডুয়ার তিন্না কলোনিতে। ছবি: সুশান্ত সরকার

থমথমে: রাত পোহালেই ভোটের ফল। পুলিশি টহল পান্ডুয়ার তিন্না কলোনিতে। ছবি: সুশান্ত সরকার

নিজস্ব সংবাদদাতা
উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ১৬ মে ২০১৮ ০২:৩৭
Share: Save:

এত দিন লড়াইটা ছিল ভিতরে ভিতরে। সোমবার ভোটের দিন কানাইপুরে তৃণমূলের দুই নেতার গোষ্ঠী বিভাজন প্রকাশ্যে চলে এল। লড়াইয়ের এক প্রান্তে দলীয় বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল। অন্য দিকে পঞ্চায়েত সমিতির বিদায়ী সভাপতি তথা পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থী আচ্ছালাল যাদব। আচ্ছা‌লালের স্ত্রী নিরূপাদেবীও পঞ্চায়েতের বিদায়ী সদস্য এবং পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল প্রার্থী।

ভোটের দিনের গোলমাল নিয়ে দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত অবশ্য তার ভিত্তিতে এফআইআর দায়ের হয়নি। কেউ গ্রেফতারও হয়নি। চন্দননগরের পুলিশ কমিশনার অজয় কুমার বলেন, ‘‘দু’টি অভিযোগ পুলিশ পেয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে।’’

সোমবার সকাল থেকে তৃণমূলের বাইক বাহিনী দাপিয়ে বেরিয়েছে এলাকায়। অভিযোগ, বিকেল ৩টে নাগাদ আদর্শনগরে গিয়ে আচ্ছালালের বাড়ির সামনে তারা গুলি ছোড়ে। বুথের সামনে গোলমালের চেষ্টা করে। সাধারণ মানুষ এবং নির্দল প্রার্থীর সমর্থকরা তাদের ধরে মারধর করেন। এরপরই বাইক ফেলে তারা পালায়। বাইকগু‌লি ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

রাতে উত্তরপাড়া থানায় বিধায়ক প্রবীরবাবু-সহ তাঁর অনুগামী বেশ কয়েক জন নেতার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন আচ্ছালাল। তাঁর অভিযোগ, দুই সন্তানকে নিয়ে স্ত্রী নিরূপা দরজার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন। দুষ্কৃতীরা তাঁদের দিকে দু’রাউন্ড গুলি চালায়। ভোটের দিন তৃণমূলের প্রাক্তন পুরপ্রধান, বর্তমান কাউন্সিলর-সহ অনেককেই দেখা গিয়েছে বাইক বাহিনী নেতৃত্বে। মঙ্গলবার বিধায়ক গোষ্ঠীর তরফে আচ্ছালালের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করা হয় উত্তরপাড়া থানায়। তাতে আচ্ছালালের বিরুদ্ধে নির্দলদের মদত দেওয়া এবং গোলমাল পাকানোর অভিযোগ করা হয়।

আচ্ছালাল বলেন, ‘‘দুষ্কৃতীরা তাণ্ডব চালিয়ে গোটা এলাকা সন্ত্রস্ত করে দেয়। মানুষ সব দেখেছেন।’’ বিধায়ক প্রবীরবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমাদের দলের ছেলেদের রাস্তায় ফেলে মারধর করা হয়। তাঁদের বাইক পুড়িয়ে দেওয়া হয়। আমরাও পাল্টা অভিযোগ করেছি।’’ বিধায়কের কথায়, দলের ওই ছেলেরা ভোট পরিস্থিতি দেখতে গিয়েছিলেন।

হামলাকারীদের বাইকগুলি মঙ্গলবার উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ। বিধায়ক ‘দলের ছেলেদের বাইক’ বলে জানালেও পুলিশ অবশ্য তাতে আমল দেয়নি। কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, বাইকগুলি কাদের, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েই পরবর্তী পদক্ষেপ করা হবে। বাইকগুলি কেন ওখানে গে‌ল, তা-ও দেখা হচ্ছে।

নির্দল প্রার্থীদের অভিযোগ, ভোটের আগে থেকেই পুলিশকে কাজে লাগিয়ে শাসক দল তাদের কোণঠাসা করার চেষ্টা করছিল। ভোটের দিনও তাই হয়েছে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবারেও এলাকা থমথমে ছিল। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, তৃণমূলের বাইক বাহিনী লাঠি, লোহার রড, হকিস্টিক হাতে দাপিয়ে বেড়ায়। তাদের থামানোর কোনও চেষ্টাই পুলিশ করেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE