লড়াই-জারি: বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী। তবু প্রচার চালাচ্ছেন শ্রীকান্ত সরকার। বাগনানে ওড়ফুলি এলাকায়। ছবি: সুব্রত জানা
বিরোধীরা কার্যত নেই। ভোটও কার্যত নেই। কিন্তু শাসকদলের প্রচার রয়েছে পুরোমাত্রায়!
বাগনান-২ ব্লকের ওড়ফুলির পঞ্চায়েতের বিদায়ী প্রধান শ্রীকান্ত সরকার নিজের এলাকার তো বটেই, পাশের পঞ্চায়েত শরৎ-এরও নেতা। এ বারে পঞ্চায়েতে তাঁর আসনটি সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় তিনি পঞ্চায়েত সমিতিতে দাঁড়িয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন। শুধু তাই নায়, ওই দু’টি পঞ্চায়েতের ৪০টি আসন এবং তাঁকে নিয়ে দু’টি গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন পঞ্চায়েত সমিতির ৬টি আসনের সব ক’টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় হাসিল করেছে তৃণমূলে। এখানে জেলা পরিষদের একটি আসনে ভোট রয়েছে। কিন্তু বিরোধীদের খুঁজতে হচ্ছে আতস কাচে। তারা প্রচারই শুরু করেনি।
কিন্তু জয়ের আনন্দে মাতামাতি নয়, শ্রীকান্তবাবু এখন পুরোদমে প্রচারেই ব্যস্ত। রবিবার বিকেলে দেউলটির শীতলাতলা-সহ তিন জায়গায় বিজয়ী প্রার্থীদের কয়েকজনকে সঙ্গে নিয়ে প্রচার করলেন। এ ছাড়াও চলছে প্রার্থীদের নিয়ে বাড়ি বাড়ি প্রচার। পরিকল্পনা করা হয়েছে এক হাজার বাইক নিয়ে মিছিলের। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মনেই হচ্ছে না এখানে গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে নির্বাচন নেই। দুই পঞ্চায়েতের বিভিন্ন এলাকায় দেখা গেল, তৃণমূল প্রার্থীদের সমর্থনে দেওয়াল-লিখন এবং ফ্লেক্সের ছড়াছড়ি।
হল কী?
শ্রীকান্তবাবু বলেন, ‘‘আমরা কাউকে মনোনয়নপত্র জমা দিতে বাধা দিইনি। সেই কারণে বুক চিতিয়ে সাধারণ মানুষের দরবারে গিয়ে তাঁদের পরামর্শ চাইছি। আরও অনেক জনসভা করব।’’ আর জনসভায় তিনি বলেন, ‘‘আপনাদের খোলাখুলি বলছি সিপিএম, বিজেপি কংগ্রেস নেতাদের আমি জনে জনে বলেছিলাম আপনারা যেখানে খুশি মনোনয়নপত্র জমা দিন। আমরা সাহায্য করব। কেউ আসেননি। গণতন্ত্রে বিরোধী থাকা প্রয়োজন।’’
সাধারণ মানুষ কিন্তু এত প্রচারের পিছন অন্য কারণ রয়েছে বলে মনে করছেন। ওড়ফুলির একাধিক বাসিন্দা মনে করছেন, প্রচার না-করলে এলাকায় তৃণমূলের দাপট দেখানো যেত না। সেটাই করছেন তৃণমূলের নেতারা। একই সঙ্গে ভোট-পরবর্তী আধিপত্য বজায় রাখার কাজটাও তাঁরা শুরু করে দিয়েছেন। তবে শুধু ওই দুই পঞ্চায়েতেই নয়, হাওড়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় যে সব গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতিতে তৃণমূল জিতে গিয়েছে সেখানেও তৃণমূলের প্রচার তুঙ্গে উঠেছে। হাওড়ায় জেলা পরিষদের সব আসনেই ভোট হচ্ছে। উদয়নারায়ণপুরের তৃণমূল বিধায়ক সমীর পাঁজা বলেন, ‘‘প্রতিদ্বন্দ্বিতা হলে প্রার্থীদের পরিচিত করানোর সুযোগ থাকে। বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছি বলে ঘরে বসে থাকলে চলবে? জনসংযোগ তো দরকার।’’
বিরোধীরা মনে করছেন, তৃণমূলের এই প্রচার আসলে ‘চোখে ধুলো দেওয়া’। সিপিএমের জেলা সম্পাদক বিপ্লব মজুমদার বলেন, ‘‘ওড়ফুলি, শরৎ, উদয়নারায়ণপুরে আমাদের প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র জমা দিতে দেওয়া হয়নি। সেই অপরাধ ঢাকতেই জনগণের সামনে প্রচারে নেমেছে তৃণমূল।’’ একই মন্তব্য করেন বিজেপি হাওড়া গ্রামীণ জেলা সভাপতি অনুপম মল্লিক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy