ক্ষত: এমনই হয়েছিল হাতের হাল। এখন খানিক সুস্থ আরিফা। ফাইল চিত্র
পণের দাবিতে অশান্তি চলছিল দু’বছর ধরে। ২০১৬ সালের ১১ নভেম্বর সকালে বধূটিকে শৌচাগারে ঢুকিয়ে সালফিউরিক অ্যাসিড ছুঁড়ে মারে স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ভয়ে দু’হাত দিয়ে মুখ ঢেকেছিল যুবতী। তাই ডান হাতের কনুই থেকে কব্জি পর্যন্ত ঝলসে যায়, পুড়ে যায় বাঁ হাতের অনেকটা। হাসপাতালের লড়াই সেরে আদালতে এসেছেন তিনি।
এক বছরেরও বেশি সময় পেরিয়ে গিয়েছে, পাননি ন্যূনতম ক্ষতিপূরণ, শ্বশুরবাড়ির সকলে জামিনে মুক্ত। সম্প্রতি দেড় বছর পর সেই মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়েছে উলুবেড়িয়া আদালতে। পুলিশের দাবি, মামলার শুনানিও হয়ে যাবে খুব তাড়াতাড়ি। কিন্তু ক্ষতি পূরণ না পেয়ে হতাশ যুবতী।
আরিফা বেগম নামে ওই যুবতীর বাপের বাড়ি উলুবেড়িয়ার দক্ষিণ পালোড়া গ্রামে। বছর তিনেক আগে বিয়ে হয়েছিল উলুবেড়িয়ার বাজারপাড়ার বাসিন্দা শেখ নজরুলের সঙ্গে। তাঁর বাপের বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই অতিরিক্ত টাকার দাবিতে তাঁর উপরে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চলত। ঘটনার দিন তাঁর কান্না শুনে প্রতিবেশীরা বাপের বাড়িতে খবর দেন। পুলিশের সাহায্যে মেয়েকে উদ্ধার করে ভর্তি করানো হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।
আরিফার স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির ছ’জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। নজরুলকে পুলিশ গ্রেফতার করলেও বাকিরা পালিয়ে যান। পরে সকলেই জামিন পেয়ে যায়। চার্জশিটে অবশ্য নাম রয়েছে ছ’জনেরই।
মাস ছয়েক আগে ক্ষতিপূরণের জন্য মহকুমাশাসকের কাছে দরখাস্ত করেন। স্টেট লেভেল লিগ্যাল সার্ভিস অথরিটি বা সালসা-র সুপারিশ মোতাবেক রাজ্য সরকার ক্ষতিপূরণের টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথা। কিন্তু তা মেলেনি। আরিফার অভিযোগ, ‘‘আমার আবেদনের কী পরিণতি হল তা জানতেই পারছি না।’’ এখন তিনি বাপের বাড়িতেই থাকেন। তিনি বলেন, ‘‘টাকাটা পেলে ব্যবসা করে নিজের খরচটুকু চালাতে পারতাম।’’
উলুবেড়িয়া মহকুমাশাসকের অফিস সূত্রের খবর, এই আবেদন উলুবেড়িয়া থানায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট এলেই পরবর্তী প্রক্রিয়া শুরু হবে। হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা আবার বলেন, ‘‘অনেকদিন আগের ব্যাপার। খোঁজ নিয়ে দেখব।’’
বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছেন সেভ ডেমোক্র্যাসির রাজ্য সম্পাদক চঞ্চল চক্রবর্তী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy