জখম: হাসপাতালে জখম সুব্রত কুণ্ডু। নিজস্ব চিত্র
দুপুর ১২টা। জমজমাট পোলবার রামনাথপুর বাজার। কেনাকাটায় ব্যস্ত স্থানীয় বাসিন্দারা। হঠাৎ আর্ত চিৎকারে সকলে দেখেন, রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে রয়েছেন এক ব্যক্তি। গলা দিয়ে রক্ত বেরোচ্ছে। ছুরি হাতে দাঁড়িয়ে অন্য এক যুবক তাঁকে ফের আক্রমণ করার আগেই অবশ্য গলায় রুমাল চেপে বাইক চালিয়ে পালিয়ে গেলেন জখম ওই ব্যক্তি। রক্তমাখা ছুরি হাতে ওই যুবকের দিকে কেউ এগোনোর আগেই বাইক চেপে পালাল সেও।
সোমবার সকালে ভরা বাজারে এমন ঘটনার সাক্ষী থাকলেন পোলবার বাসিন্দারা। সুব্রত কুণ্ডু নামে জখম ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ী আপাতত চুঁচুড়া সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, তাঁর গলায় সাতটা সেলাই পড়েছে। তাঁকে পর্যবেক্ষণ রাখা হয়েছে। সুব্রতবাবুর পরিবারের তরফে সুরজিৎ কুমার নামে ওই যুবকের বিরুদ্ধে খুনের চেষ্টা ও ছিনতাইয়ের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ওই যুবক পলাতক। তাকে ধরতে তল্লাশি শুরু হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পান্ডুয়ার কুলটি রোডের বাসিন্দা বছর চল্লিশের সুব্রতবাবু ১৫ বছর ধরে সোনার কাজ করছেন। বাড়ির নীচেই দোকান রয়েছে তাঁর। প্রতিদিন সকালে ব্যবসার কাজে তিনি বাইক নিয়ে বিভিন্ন এলাকায় যান। মঙ্গলবারও তিনি কাজের সূত্রে রামনাথপুরে যাচ্ছিলেন। মাঝ রাস্তায় দেখা হয় সুরজিতের সঙ্গে। সুব্রতবাবুর দাদা সুজিতবাবু জানান, ওই যুবক তাঁদের পূর্ব পরিচিত। সুব্রতবাবুর সঙ্গে তাঁর ব্যবসায়িক লেনদেনও হয়।
অভিযোগ, এ দিন টাকা-পয়সা নিয়েই রামনাথপুর বাজারের কাছে তাঁদের কথা কাটাকাটি শুরু হয়। সেই সময় সুব্রতবাবুর গলায় সুরজিৎ ছুরির কোপ মারে বলে অভিযোগ। এমনকী সুব্রতবাবুর কাছ থেকে কয়েক হাজার টাকা, সোনার গয়না ছিনতাই করে বলেও অভিযোগ।
ঘটনার পরই গলায় রুমাল জড়িয়ে বাইক চালিয়ে সুব্রতবাবু চলে যান পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে। কিন্তু অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাঁকে চুঁচুড়া সদর হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। আর ঘটনার পর থেকে নিখোঁজ মিলছে না সুরজিতের।
পান্ডুয়া বঙ্গীয় স্বর্ণ শিল্পী সমিতির পান্ডুয়া শাখার সভাপতি গোপালচন্দ্র দের অভিযোগ, ‘‘প্রকাশ্যে যে ভাবে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে ছুরি মারা হল, তা যথেষ্ট ভয়ের। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। দোষীকে না ধরতে পারলে আমরা আন্দোলনে নামব।’’
এ দিনের ঘটনার জেরে আতঙ্কে এলাকার বাসিন্দারাও। ওই এলাকায় কোনও সিসিটিভি ক্যামেরা কেন লাগানো হয়নি, তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন স্থানীয়রা। এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘মাস ছয়েক আগে এলাকায় একটা বড় চুরি হয়েছিল। সেই ঘটনায় অভিযুক্তকে ধরতে পারেনি পুলিশ। আর এমন ব্যস্ত জায়গায় কেন কোনও নজরদারি ক্যামেরা লাগানো হয়নি?’’ তবে পুলিশের দাবি, ওই এলাকায় রাতে নিয়মিত টহল চলে। আর ওই এলাকায় নজরদার ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy