এক বছরের মধ্যে ভোল বদলাতে চলেছে চন্দননগর। হচ্ছে আরও সবুজ, আরও সুন্দর। নিরাপত্তাও বাড়ছে এক সময়ের ফরাসি উপনিবেশের।
রাজ্য সরকার যে পুরসভাগুলিকে ‘গ্রিন সিটি’ করার পরিকল্পনা করেছে, তার মধ্যে রয়েছে গঙ্গাপাড়ের এ শহরও। ইতিমধ্যেই নতুন প্রকল্পের জন্য ৯ কোটি টাকা অনুমোদন করেছে পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর। প্রথম কিস্তির সাড়ে চার কোটি টাকাও চলে এসেছে পুর কর্তৃপক্ষের হাতে। মেয়র রাম চক্রবর্তী জানিয়েছেন, কিছুদিনের মধ্যেই শহরের সবুজায়ন এবং সৌন্দর্যায়নের ওই প্রকল্পে দরপত্র ডাকা হবে। প্রথম কিস্তির টাকায় কাজ শেষের পরে দ্বিতীয় কিস্তির টাকা মিলবে। এক বছরের মধ্যে কাজ শেষের সময়সীমা ধার্য করা হয়েছে।
ঠিক কী হতে চলেছে শহরে?
পুরসভা সূত্রের খবর, ওই প্রকল্পে শহরের ১১টি পার্ককে সাজানো তো হবেই, নতুন কিছু পার্কও তৈরি করা হবে। আটটি বড় পুকুর সংস্কার করা হবে। বিভিন্ন রাস্তায় চারশোরও বেশি এলইডি আলো লাগানো হবে। হাইমাস্ট আলো বসবে একশোরও বেশি জায়গায়। জগদ্ধাত্রী পুজোর সময়ে এ শহরে লক্ষ লক্ষ দর্শনার্থী আসেন। মূলত তাঁদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে পালিকা বাজার, জ্যোতির মোড়, লক্ষ্মীগঞ্জ বাজার এবং স্ট্র্যান্ডে ‘সুলভ শৌচাগার’ তৈরি করা হবে। এ ছাড়াও একটি শৌচাগার বানানো হবে জগদ্ধাত্রীর বিসর্জনের শোভাযাত্রার ‘রুটে’।
এখানেই শেষ নয়। নয়া সাজের শহরের নিরাপত্তা বাড়াতে প্রতিটি ওয়ার্ডে এবং রাস্তার মোড়গুলিতে লাগানো হবে সিসিক্যামেরা। নজরদারির প্রক্রিয়া চালানো হবে পুরভবন থেকে। শহরকে আরও সবুজ করতে বিভিন্ন এলাকায় বৃক্ষরোপণকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। হবে হেরিটেজ ভবন সংস্কারও। পানীয় জল সরবরাহ ব্যবস্থাকেও আরও উন্নত মানের করা হচ্ছে এই প্রকল্পে।
নতুন এই প্রকল্পের জন্য সলতে পাকানোর কাজটা শুরু হয়েছিল গত বছরের মাঝামাঝি। পুর কর্তৃপক্ষ এ সংক্রান্ত প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরে। ওই বছরেরই জুলাইয়ের শেষ দিকে প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। মেয়র বলেন, ‘‘ঐতিহ্যের এই শহরে সৌন্দর্যায়নের কাজ শীঘ্রই শুরু হবে। বর্তমানে সমস্ত দরপত্র অনলাইনের মাধ্যমে হচ্ছে। ফলে, কিছুটা সময় লেগে যাচ্ছে।’’
কিন্তু এখনও এ শহরের বহু রাস্তারই বেহাল দশা। জিটি রোড বা স্টেশন রোডের মতো হাতেগোনা দু’একটি বাদ দিলে অধিকাংশ রাস্তাতেই গর্ত বেরিয়ে এসেছে। উঠে গিয়েছে পিচ। বাড়ছে দুর্ঘটনার আশঙ্কা। গত বছর জগদ্ধাত্রী পুজোর আগে কিছু বেহাল রাস্তায় শুধু তাপ্পি মারা হয়েছিল। সেই তাপ্পিও অনেক জায়গায় উঠে গিয়েছে। ফলে, বেহাল রাস্তাগুলির পূর্ণাঙ্গ সংস্কার কবে হবে, রয়েছে সে প্রশ্নও। বাসিন্দাদের অনেকেই মনে করছেন, ঝকঝকে শহরে গর্তে ভরা রাস্তা বেমানান হবে। সে দিকে পুরসভার নজর দেওয়া উচিত। পুর কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, ‘গ্রিন সিটি’ প্রকল্পে রাস্তার কাজ হয় না। আলাদা প্রকল্পে রাস্তার কাজ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy