Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

আয়ের থেকে ব্যয় বেশি বালি পুর বাজারের

বালি পুর বাজারকে নিয়ে কার্যত এমনই অভিযোগ হাওড়া পুরসভার বাজার বিভাগের কর্তাদের। তাঁদের দাবি, প্রায় ৫০ বছরের পুরনো ওই বাজার থেকে মাসে যা আয় হয়, খরচ তার বেশি। অগত্যা বাজারটিকে পিপিপি মডেলে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করেছেন পুর কর্তারা।

বালি পুর বাজার। —নিজস্ব চিত্র।

বালি পুর বাজার। —নিজস্ব চিত্র।

শান্তনু ঘোষ
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩১ মার্চ ২০১৮ ০১:৩৭
Share: Save:

এ যেন ‘হাতি পোষা’র মতো অবস্থা!

বালি পুর বাজারকে নিয়ে কার্যত এমনই অভিযোগ হাওড়া পুরসভার বাজার বিভাগের কর্তাদের। তাঁদের দাবি, প্রায় ৫০ বছরের পুরনো ওই বাজার থেকে মাসে যা আয় হয়, খরচ তার বেশি। অগত্যা বাজারটিকে পিপিপি মডেলে দেওয়ার চিন্তাভাবনা করেছেন পুর কর্তারা।

তবে বালির এই বাজারকে নিয়ে হালে হাওড়া পুর কর্তাদের কপালে ভাঁজ পড়ছে, তা নয়। সমস্যার সূত্রপাত বছর ছয়েক আগে, তৎকালীন বালি পুরসভার আমলেই। সেই সময়ে পুর কর্তারা অভিযোগ তুলেছিলেন, ওই বাজার থেকে যে টাকা রোজগার হয়, খরচ হয় তার অনেক বেশি। এমনকী পুর কর্তৃপক্ষ বাজার রক্ষণাবেক্ষণ করছেন না, অভিযোগে সেই সময়ে দৈনিক ভাড়া দেওয়াও বন্ধ করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। পরে অবশ্য আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মেটে। এর পরে ২০১৬-তে হাওড়ার সঙ্গে বালি সংযুক্ত হলেও সমস্যা মেটেনি।

হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ (বাজার) সীমা নস্কর বলেন, ‘‘বালি বাজার নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনা হয়েছে। আয় খুবই কম, তাই এ বার পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে বাজারটি দেওয়ার পরিকল্পনা হয়েছে।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, গোস্বামীপাড়ায় প্রায় কুড়ি কাঠা জমির উপরে বাজারের দু’টি ব্লকে ভাগ করে রয়েছে কাঁচা আনাজ, ফল ও মাছের বাজার। স্থানীয়েরা জানান, প্রথমে ফাঁকা মাঠে বসত এই বাজার। ১৯৯২ সালে তৎকালীন বালি পুরসভার চেয়ারম্যান সত্যপ্রকাশ ঘোষ পাকা বাজারটি তৈরি করেন। সেখানেই একতলায় দু’টি ব্লক মিলিয়ে ২০০টি স্টল থাকলেও আদতে রয়েছেন ১৮৮ জন। মার্কেট দফতর সূত্রের খবর, বা‌ম পরিচালিত পুরসভা দৈনিক ভাড়া সংগ্রহ করত। এখন তা প্রতি সপ্তাহে নেওয়া হয়। পুরসভার স্থায়ী এক জন কর্মী বাজারে গিয়ে তা সংগ্রহ করেন।

পুরসভা সূত্রের খবর, ৪৪ জন ব্যবসায়ীর দৈনিক ভাড়া চার টাকা, চার জনের তিন টাকা এবং বাকি ১৪০ জনের দু’টাকা। অর্থাৎ দৈনিক ৪৫২ টাকা করে মাসে সাড়ে ১৩ হাজার টাকা। দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘আনাজ ও মাছ বাজার থেকে মাসে ১১-১২ হাজার টাকা আদায় হয়।’’ তিনি আরও জানান, দৈনিক নিতে গিয়ে দেখা যেত, মাসে মেরেকেটে ন’হাজার টাকা ভাড়া মিলত। অনেক ব্যবসায়ীই যে দিন স্টল খুলতেন না সে দিনের ভাড়া দিতে গড়িমসি করতেন। পুর কর্তারা জানান, ভাড়া আদায়ের কর্মী, দু’জন সাফাইকর্মী-সহ আরও বিভিন্ন খরচ মিলিয়ে মাসে ৫০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়। তবে প্রতি স্টল থেকে বাজার সংগঠন প্রতিদিন পাঁচ টাকা করে চাঁদা নেয় বলেও অভিযোগ পুর কর্তাদের।

তাঁদের আরও অভিযোগ, অনেক সময়ে দেখা যাচ্ছে পুরসভাকে না জানিয়ে ফাঁকা স্টলে নতুন ব্যবসায়ীকে বসাচ্ছেন বাজার সংগঠন। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে বালি বাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সম্পাদক নারায়ণ কোলে বলেন, ‘‘এত বছর ব্যবসা করছি, এখন পিপিপি মডেল করলে আমরা যাব কোথায়। মাসে কয়েক হাজার টাকা বিদ্যুতের বিল ও অন্য খরচের জন্য পাঁচ টাকা করে নিতে হয়।’’

স্থানীয় কাউন্সিলর বলরাম ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘ওঁরা যদি নিজস্ব মিটার আনতে চান, তার জন্য পুরসভা সহযোগিতা করবে। কিন্তু এত বছর ধরে ভাড়া কম থাকার বিষয়টিতে কড়া নজর রয়েছে পুর কর্তৃপক্ষের।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bally Market
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE