Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
অভিযুক্ত শ্রীরামপুরের কলেজ ছাত্র

প্রেমে না, ছাত্রীকে মার পরীক্ষা হলেই

সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চাননি। এই ছিল ‘অপরাধ’! তাই সহপাঠী তরুণীকে ‘সবক’ শেখাতে পরীক্ষার হলে ঢুকে মারধর এবং তাঁর মোবাইল ছিনিয়ে পালানোর অভিযোগ উঠল শ্রীরামপুর কলেজের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৪৭
Share: Save:

সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে চাননি। এই ছিল ‘অপরাধ’! তাই সহপাঠী তরুণীকে ‘সবক’ শেখাতে পরীক্ষার হলে ঢুকে মারধর এবং তাঁর মোবাইল ছিনিয়ে পালানোর অভিযোগ উঠল শ্রীরামপুর কলেজের এক ছাত্রের বিরুদ্ধে।

শুক্রবার এই ঘটনার পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ এবং পুলিশে অভিযোগ করেছেন নির্যাতিতা। নিরাপত্তা নিয়ে তাঁর আশঙ্কার কথাও জানিয়েছেন। কলেজের কলা-বাণিজ্য-বিজ্ঞান বিভাগের উপাধ্যক্ষ বিদ্যুৎকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘অভিযোগপত্র পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট জানিয়েছে, শ্রীরামপুর থানায় তরুণী বিষয়টি জানিয়েছেন। তবে এফআইআর করেননি। কলেজে জমা করা অভিযোগপত্রেই থানার স্ট্যাম্প মেরে দেওয়া হয়। ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখনই আদালতগ্রাহ্য মামলা হিসেবে দেখা হচ্ছে না। তরুণী যাতে রাস্তাঘাটে ফের বিপদে না পড়েন, পুলিশ তা দেখবে।

কলেজ সূত্রের খবর, সিঙ্গুরের ওই তরুণী বিকম (অনার্স) তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী। এ দিন সকালে তিনি টেস্ট পরীক্ষা দিতে আসেন। অভিযোগ, পরীক্ষা শুরুর আগে বিকম (পাস) তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্র হলে ঢুকে ছাত্রীটির মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। তা ফেরত নিতে ছাত্রীটি বাইরে বেরোতেই ছাত্রটি মারধর করে। তাঁর মাথা দেওয়ালে ঠুকে দেয়। ছাত্রের হাতের বালায় তরুণীর কপাল এবং হাতের আঙুল কেটে যায়। এর পরে অভিযুক্ত কলেজ থেকে সরে পড়ে। শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ছাত্রীটির প্রাথমিক চিকিৎসা হয়। শেষ পর্যন্ত তিনি অবশ্য পরীক্ষা দিয়েছেন।

তরুণী বলেন, ‘‘শিক্ষিকার মোবাইল থেকে বাবাকে ফোন করে বিষয়টি জানাই। তার পরে মোবাইলটা নিতে বাইরে আসি। তখন ছেলেটা আমাকে খুব মারে। এক কলেজে পড়লেও আগে চিনতাম না। কয়েক মাস আগে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলাপ। তার পরে সম্পর্ক হলেও সম্প্রতি আমি সরে আসি। তাতেই ওর আক্রোশ।’’ তরুণীর বাবা এ দিন কলেজে আসেন। তিনি বলেন, ‘‘ছেলেটা এ ভাবে মেয়ের উপর হামলা করবে ভাবিনি। ওর শাস্তি হোক।’’ অভিযুক্তের সঙ্গে চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি। তার মোবাইল বন্ধ ছিল।

তবে ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ এই প্রথম নয়। কয়েক দিন আগেও সে সিঙ্গুরে গিয়ে ওই ছাত্রীকে মারাধর করে এবং তাঁর মোবাইল বার্তা ও ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। ছাত্রীর বাবা বিষয়টি ছাত্রের বাড়িতে জানিয়েছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘ছেলেটি তখন ফোনে ক্ষমা চেয়ে মেয়েকে আর বিরক্ত না করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। ওর বাড়ির লোকও একই আশ্বাস দেন। তাই তখন থানা-পুলিশ করিনি।’’

অভিযুক্ত কলেজের তৃণমূল ছাত্র পরিষদের শ্রেণি প্রতিনিধি ছিল। ছাত্র সংসদ সূত্রের খবর, এর আগেও তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠেছে। কিছু দিন আগে তার বিরুদ্ধে কলেজের অ্যান্টি-র‌্যাগিং সেলে অভব্যতার অভিযোগ জানিয়েছিলেন এক ছাত্রী। ছাত্র সংসদের সভাপতি রুমি দাস ব‌লেন, ‘‘তখন ওই ছেলেটির মায়ের অনুরোধে কড়া পদক্ষেপ করা হয়নি। এই ধরনের ঘটনা ঘটাবে না বলে সে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। শ্রেণি প্রতিনিধির পদ থেকেও ইস্তফা দেয়। এ বার কলেজ কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নিক।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE