বিতর্কে: ভাবাদিঘি। ফাইল চিত্র
তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেল প্রকল্প জনস্বার্থে বলে জানিয়ে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বিচারপতি মির দারা শিকো মঙ্গলবার রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন, হুগলির গোঘাটের ভাবাদিঘির যে অংশ রেলকর্তারা এখনও হাতে পাননি, সেটা রেলের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য সাহায্য করতে হবে। ওই দিঘির একাংশ অধিগ্রহণে কাদের কত টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়েছে, ১৫ ফেব্রুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন আদালতে তা জানাতে হবে রেলকে।
হাইকোর্টের নির্দেশ নিয়ে বুধবারই গ্রামবাসীদের সঙ্গে বৈঠক করেন ‘ভাবাদিঘি বাঁচাও কমিটি’র নেতারা। তাঁরা যে তাঁদের অবস্থান থেকে সরছেন না, সে ইঙ্গিতও দিয়েছেন তাঁরা। কমিটির সম্পাদক সুকুমার রায় বলেন, “জনস্বার্থে রেল লাইনের প্রয়োজনের কথা আমরাও বলছি। দিঘির উত্তর পাড় ঘেঁষে মাঠ দিয়ে রেলপথের প্রকৃত যে নকশা ছিল সেই পথেই দ্রুত কাজ শেষ করা হোক। আদালতের নির্দেশে কোথাও বলা হয়নি দিঘি বুজিয়ে রেলপথ করা হবে। জোর করে দিঘি বুজিয়ে রেলপথ করা যাবে না। প্রয়োজনে সুপ্রিম কোর্টেও যাব।”
দিঘিটির আয়তন ৫২ বিঘারও বেশি। অংশীদার রয়েছেন ২৬৮ জন। রেল সূত্রের খবর, দিঘির তিন একর রেলপথের জন্য অধিগ্রহণ করা হয়। ইতিমধ্যে মোট ১৭৭ জন ক্ষতিপূরণও নিয়েছেন। যদিও তাঁদের ভুল বুঝিয়ে ক্ষতিপূরণ নিতে বাধ্য করা হয় বলে অভিযোগ দিঘি বাঁচাও কমিটির। প্রকল্পের জন্য দিঘির উত্তর পাড়ের জমি অধিগ্রহণের নির্দেশ দিতে হাইকোর্টে আবেদন জানিয়েছিলেন কয়েক জন আন্দোলনকারী। ডিভিশন বেঞ্চ সেই আবেদন মঞ্জুর করেনি। পরে হাইকোর্টে আরও মামলা হয়। কিন্তু আবেদনকারীরা হাজির হননি। সম্প্রতি এক আবেদনকারীর আত্মীয় সেই মামলার শুনানির আবেদন জানান। মঙ্গলবার তারই শুনানি ছিল।
আদালতের নির্দেশ নিয়ে গোঘাটের বিধায়ক তৃণমূলের মানস মজুমদার বলেন, “রায়ে এলাকার মানুষ খুশি। কামারপুকুর-জয়রামবাটির মতো তীর্থক্ষেত্রে রেল সংযোগ হলে লক্ষ লক্ষ মানুষের স্বপ্ন পূরণ হবে। ভাবাদিঘি বাঁচাও কমিটির পক্ষেও বলা হয়েছিল তারা উচ্চ আদালতের রায় মেনে নেবেন।” যদিও ওই কমিটির দাবি, এই মামলাটিই শেষ নয়। ২০১৭ সালে দিঘি বাঁচিয়ে রেলপথ নির্মাণে আর এক গ্রামবাসীর মামলার শুনানি এখনও চলছে।
২০০১ সালে এনডিএ সরকারের রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তারকেশ্বর থেকে বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর এই ৮২.৫ কিলোমিটার রেল প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। ফের ইউপিএ সরকারের রেলমন্ত্রী হওয়ার পর প্রকল্পটিতে গুরুত্ব দেন তিনি। ২০১২ সালের ৪ জুন আরামবাগ থেকে তারকেশ্বর তথা হাওড়া অব্দি রেল চলাচল শুরু হয়। পরে গোঘাট পর্যন্ত রেলপথ সম্প্রসারণ হয়। পরে কামারপুকুর পর্যন্ত রেলপথের মাটির কাজও শেষ হয়। খালি ভাবাদিঘি অংশে কাজ বাকি। কিন্তু আন্দোলনের জেরে কাজ এখন থমকে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy