Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪
হুগলিতে ফের দুষ্কৃতী তাণ্ডব

শ্রীরামপুরে ফের আক্রান্ত ব্যবসায়ী

শনিবার রাতে শ্রীরামপুরের চাতরায় আগ্নেয়াস্ত্রের বাট দিয়ে মেরে দুষ্কৃতীরা ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর মাথা ফাটিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। যদিও তাঁর গয়নার ব্যাগ কেড়ে নিতে পারেনি তারা। ঘটনার জেরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরাও।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ০৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:২৫
Share: Save:

ফের বাড়ি ফেরার পথে হুগলি শিল্পাঞ্চলে দুষ্কৃতীদের হামলার শিকার হলেন এক ব্যবসায়ী।

শনিবার রাতে শ্রীরামপুরের চাতরায় আগ্নেয়াস্ত্রের বাট দিয়ে মেরে দুষ্কৃতীরা ওই স্বর্ণ ব্যবসায়ীর মাথা ফাটিয়ে দেয় বলে অভিযোগ। যদিও তাঁর গয়নার ব্যাগ কেড়ে নিতে পারেনি তারা। ঘটনার জেরে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। আতঙ্কিত ব্যবসায়ীরাও। তদন্তে নেমেছে শ্রীরামপুর থানার পুলিশ। রবিবার বিকেল পর্যন্ত কেউ অবশ্য ধরা পড়েনি।

বিনয়কুমার পাল আক্রান্ত ওই ব্যবসায়ী চাতরার বাসিন্দা। শহরের নেতাজি সুভাষ অ্যাভিনিউতে তাঁর গয়নার দোকান রয়েছে। শনিবার রাত পৌনে দশটা নাগাদ তিনি দোকান বন্ধ করে মোটরবাইকে বাড়ি ফিরছিলেন। অভিযোগ, বাড়ির কাছেই একটি জলট্যাঙ্কের সামনে তাঁর বাইকটি আটকায় কয়েক জন দুষ্কৃতী। আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে তাঁর সঙ্গের সব জিনিসপত্র দিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় দুষ্কৃতীরা। কিন্তু ওই ব্যবসায়ী নিজের সঙ্গে থাকা গয়নার ব্যগটি দিতে চান‌নি। তার জেরেই তিনি আক্রান্ত হন বলে দাবি।

বিনয়বাবু বলেন, ‘‘ওরা তিনটে মোটরবাইকে ছ’জন ছিল। এক জন আগ্নেয়াস্ত্রের বাট দিয়ে আমার মাথায় মারে। আমার ব্যাগ কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। আমার চিৎকারে কয়েক জনকে এগিয়ে আসতে দেখে দুষ্কৃতীরা পালায়। ব্যাগটা ওরা নিতে পারেনি।’’ ওই ব্যবসায়ীর দাবি দুষ্কৃতীরা শূন্যে একটি গুলিও ছোড়ে।

দুষ্কৃতীরা চলে যাওয়ার পরে পুলিশে খবর পৌঁছয়। পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের অফিসারদের দাবি, ছ’জন নয়, দুষ্কৃতীরা সংখ্যায় দু’জন ছিল। তাদের চিহ্নিত করা গিয়েছে। গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। তাদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র থাকলেও গুলি চলেনি। ধ্বস্তাধ্বস্তিতে পড়ে গিয়ে বিনয়বাবুর মাথায় আঘাত লাগে।

ঘটনার জেরে ওই ব্যবসায়ী আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন। শিল্পাঞ্চলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন সাধারণ মানুষ। তাঁদের বক্তব্য, শিল্পাঞ্চলে দুষ্কৃতীদের বাগে আনতে পুলিশি ব্যবস্থায় রদবদল করা হল। কমিশনারেট গঠন করা হল। কয়েক মাসের মধ্যেই পুলিশ কমিশনারও বদল করা হল। কিন্তু কোনও কিছুতেই দুষ্কর্মে ছেদ পড়ছে না।

দেড় মাস আগে চাতরার কয়েক কিলোমিটারের মধ্যেই শেওড়াফুলি স্টেশন থেকে ঢিল ছোড়া দূরত্বে ভরদুপুরে এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীর উপর একই কায়দায় হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। বন্দুকের বাটের আঘাতে ওই ব্যবসায়ীর দোকানের কর্মচারীর মাথা ফাটিয়ে দেয় তারা। তার পরে গয়নার ব্যাগ ছিনিয়ে চম্পট দেয়। গত বৃহস্পতিবার হিন্দমোটরের দেবাইপুকুরে ভরদুপুরে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে ফেরার পথে অবসরপ্রাপ্ত এক সরকারি অফিসার দুষ্কৃতীদের খপ্পড়ে পড়েন। দুষ্কৃতীরা তাঁকে আঘাত করে টাকাভর্তি মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে পালায়। গত ২৫ নভেম্বর ভোরে উত্তরপাড়ার শান্তিনগরে এক বৃদ্ধার হাতে ভোজালির কোপ মেরে আংটি ও বালা ছিনিয়ে নিয়েছিল দুষ্কৃতীরা।

এখনও পর্যন্ত ওই ঘটনাগুলিতে দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার বা খোয়া যাওয়া গয়না-টাকা উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ। প্রতিটি ক্ষেত্রেই কমিশনারেট দাবি করেছে, দুষ্কৃতীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গয়না-টাকা উদ্ধারেরও চেষ্টা করা হচ্ছে। একই আশ্বাস মিলেছে শনিবার রাতের ঘটনাটির ক্ষেত্রেও।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Attack Miscreants Businessman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE