আক্রান্ত: ভেঙে গিয়েছে অ্যাম্বুল্যান্সের কাচ। ছবি: সুব্রত জানা
ফাঁকা অ্যাম্বুল্যান্সটি এগিয়ে আসতেই ঘিরে ধরল চারটি মোটরবাইক। প্রতিটি বাইকে দু’জন। অ্যাম্বুল্যান্স চালক কিছু বুঝে ওঠার আগেই চলল পরপর গুলি। দু’টি গুলি লাগল অ্যাম্বুল্যান্সের কাচে। তবে বেঁচে গেলেন চালক।
কোনও সিনেমার দৃশ্য নয়, শুক্রবার রাতে এমন ঘটনারই সাক্ষী রইল হাওড়ার জয়পুরের বাকসি সেতু। অ্যাম্বুল্যান্স চালক শেখ মতিয়রের চিৎকারে আশপাশের লোকজন চলে এলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়।
প্রায় পাঁচ মাস আগে জয়পুরের ভাটোরায় খুন হয়েছিলেন তৃণমূল নেতা শেখ শাহাজান ও তাঁর ভাই ওই দলেরই কর্মী শেখ লালচাঁদ। শেখ মতিয়র হলেন তাঁদের ভাই। তাঁকে লক্ষ করে গুলি চালানোর অভিযোগে শুক্রবার রাতেই শেখ আনিসুর নামে এক জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জেনেছে, দুষ্কৃতীরা বাগনানের দিক থেকে এসেছিল।
অ্যাম্বুল্যান্স চালক। ছবি: সুব্রত জানা
হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, ধৃতকে জেরা করে বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। ঘটনার কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশের কাছে মতিয়র দাবি করেছেন, বাগনানের মানকুর মোড় থেকে চারটি মোটরবাইক তাঁর পিছু নিয়েছিল। বাকসি এলাকায় তারা অ্যাম্বুল্যান্সটি টপকে গিয়ে গুলি চালাতে শুরু করে। অ্যাম্বুল্যান্সটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বালির স্তূপে ধাক্কা মারে।
চলতি বছরের ১৬ জুন প্রকাশ্যে গুলি করে এবং কুপিয়ে খুন করা হয়েছিল জয়পুরের ঘোড়াবেড়িয়ার দোকানিপাড়ার বাসিন্দা, মতিয়ারের দাদা শেখ শাজাহান এবং তাঁদের আর এক ভাই শেখ লালচাঁদকে। এলাকায় আতঙ্ক ছড়াতে এক মহিলা এবং যুবককেও গুলি করেছিল দুষ্কৃতীরা। তার পর জনা চল্লিশ দুষ্কৃতী বন্দুক উঁচিয়ে, তরোয়াল ঘোরাতে ঘোরাতে ঘটনাস্থল ছেড়েছিল। দাদাদের খুনের বিচার চেয়ে থানায় অভিযোগ করেন মতিয়ার। তদন্তে নেমে বেশিরভাগ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে তাদের কয়েকজন সম্প্রতি জামিন পেয়ে গ্রামে ফিরেছে।
গ্রেফতার শেখ আনিসুর। ছবি: সুব্রত জানা
পুলিশ জানিয়েছে, দুই দাদাকে খুনের ঘটনায় ঘোড়াবেড়িয়া-চিৎনান পঞ্চায়েতের প্রাক্তন প্রধানের স্বামী শেখ ইমতিয়াজ এবং তার দুই ছেলে-সহ মোট ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। অভিযুক্ত ইমতিয়াজও আবার তৃণমূলের সঙ্গে যুক্ত। তাই স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, এই ঘটনা তৃণমূলের কোন্দলের ফল।
সপ্তাহখানেক আগে ইমতিয়াজের এক ছেলে-সহ পাঁচ জন জামিন পেয়েছে। তবে ইমতিয়াজ এখনও জেলবন্দি। মতিয়ারের দাবি, জামিন পাওয়ার পর থেকেই অভিযুক্তেরা তাঁকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে। এরকম যে ঘটতে পারে সেটি আশঙ্কা করে তিনি আগেই পুলিশকে জানিয়েছিলেন। তাঁর অভিযোগ, গুলিচালনার সঙ্গে তারাই যুক্ত। মতিয়র বলেন, ‘‘আমি কোনও অবস্থাতেই অভিযোগ তুলব না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy