Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

গরুর চিকিৎসায় গ্রামে ঘুরছে গাড়ি

শুধু মঞ্জু বর নন। একই অবস্থা গ্রামের বেশিরভাগ গোপালকের। সেই সমস্যার সমাধান করতেই গ্রামে গ্রামে ঘুরছে ভ্রাম্যমাণ পশু চিকিৎসালয়। মাঠের এক প্রান্তে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে সুদৃশ্য গাড়ি।

ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসালয়ে। নিজস্ব চিত্র

ভ্রাম্যমাণ চিকিৎসালয়ে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:০৫
Share: Save:

কৃমির সমস্যায় জেরবার মঞ্জু বরের গরুটি। অনেক দিন ধরে চেষ্টা করেও ব্লকের পশু হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারেননি মঞ্জুবাবু। তাঁর বাড়ি যে পশু হাসপাতালে থেকে অনেক দূরে। তাই গরুকে নিয়ে যাওয়া ঝক্কির বিষয়। আবার ভ্যান ভাড়া করে নিয়ে যাওয়াটা ব্যয় সাপেক্ষ। ফলে দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ গরুর চিকিৎসা করাতে পারছিলেন না তিনি।

শুধু মঞ্জু বর নন। একই অবস্থা গ্রামের বেশিরভাগ গোপালকের। সেই সমস্যার সমাধান করতেই গ্রামে গ্রামে ঘুরছে ভ্রাম্যমাণ পশু চিকিৎসালয়। মাঠের এক প্রান্তে গিয়ে দাঁড়াচ্ছে সুদৃশ্য গাড়ি। নানা ধরনের ওষুধে সাজানো সেই গাড়িতেই থাকেন পশু চিকিৎসক। গরুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেন তিনি, বিনামূল্যে।

হাওড়া গ্রামীণ জেলায় পরীক্ষামূলক ভাবে ভ্রাম্যমাণ পশু চিকিৎসালয় চালু করেছে রাজ্য প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর। রাষ্ট্রীয় কৃষি বিকাশ যোজনায় এইসব চিকিৎসালয় চালু হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তবে শুধু গরু নয়, সব ধরনের গৃহপালিত পশুরই চিকিৎসা হবে এখানে। তবে গরুদেরই কথা ভেবেই চালু হয়েছে এই পরিষেবা, জানালেন রাজ্য প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের এক কর্তা জানান।

কেন গরুর উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে?

দফতর সূত্রে খবর, গরুদের ঠান্ডা লাগা বা এঁসো রোগের সংক্রমণ খুব বেশি হয়। তাতে প্রাণহানির আশঙ্কাও থাকে গরুর। সে জন্য চিকিৎসার পাশাপাশি নিয়মিত টিকাকরণও জরুরি।কিন্তু ব্লক পশু হাসপাতালের বহির্বিভাগে গরুদের নিয়ে যাওয়া অনেক সময় অসম্ভব হয়ে পড়ে। অনেকের আবার একাধিক গরু থাকে। ফলে সমস্যা বাড়ে।

রাজ্য গৃহপালিত পশু হিসাবে গরুর কদর বাড়ছে বলে রাজ্য প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতরের কর্তারা জানান। মূলত দুধের ব্যবসার জন্যই বাড়ছে গরুর কদর। হাওড়ার শ্যামপুর, উদয়নারায়ণপুর, আমতা প্রভৃতি এলাকায় উন্নত প্রজাতির গরুর চাষ বাড়ছি দিনের পর দিন।

মূলত এইসব এলাকার কথা মনে রেখেই উদয়নারায়ণপুর, আমতা ১ ও ২ এবং শ্যামপুর-১ ব্লকে ভ্রাম্যমাণ পশু চিকিৎসালয় চালু করা হয়েছে। পরবর্তীতে অন্য ব্লকেও এই পরিষেবা চালু হবে বলে জেলা প্রাণিসম্পদ বিকাশ দফতর সূত্রের খবর। দফতরের এক কর্তার দাবি, প্রাণী মিত্র এবং প্রাণী মিত্রারা আছেন প্রতিটি পঞ্চায়েতে। কিন্তু তাঁরা মূলত ছাগল এবং মুরগির চিকিৎসা করান। ফলে ভ্রাণ্যমাণ পশু চিকিৎসা কেন্দ্রগুলিতে মুরগি এবং ছাগলের ভিড় কম থাকে।

সোম থেকে শুক্র— সপ্তাহে পাঁচদিন বিভিন্ন গ্রামে শিবির করা হয়। কোন গ্রামে কবে শিবির বসবে তা আগেই জানিয়ে দেন প্রাণী মিত্ররা। গ্রামেই চলে গরুদের চিকিৎসা এবং টিকাকরণ।

পশু চিকিৎসক কৌস্তুভ বসু বলেন, ‘‘এক একটি গ্রামে প্রতিদিন গড়ে দুশো গরুর চিকিৎসা করতে হয়। সব ধরনের চিকিৎসাই হয়। তবে কৃত্রিম গর্ভধারণ হয় না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE