ফাঁকা: দোকানে খদ্দের নেই। আরামবাগ শহরে। নিজস্ব চিত্র
বাম আমলে আরামবাগের মাংসের দোকানে সিলমোহর দেওয়ার রেওয়াজ চালু করেছিলেন তৎকালীন পুরপ্রধান গোপাল কচ। সেই দিন আর নেই। আর এখন শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, মাংসের দোকানগুলিতে বছর খানেক ধরে পুরসভার ন্যূনতম কোন নজরদারিও নেই।
আরামবাগ পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, শহরে খাসির এবং মুরগি মিলিয়ে মাংসের দোকান একশোর কিছু বেশি। অতীতে এই শহরেই কয়েকবার খাসির মাংসের বদলে মাদি ছাগল কেটে বিক্রির অভিযোগ উঠেছিল। সমস্যার সমাধানে ১৯৮৮ সাল নাগাদ তৎকালীন পুরপ্রধান গোপাল কচ মাংসের দোকানগুলিতে নজরদারির ব্যবস্থা করেন। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত খাসির দোকানগুলিতে পুরসভা কর্মীদের সামনে খাসি কাটতে হত। এবং তা ঝোলানোর আগে পিছনের পায়ে পুরসভার সিলমোহর দেওয়া হত। মুরগির মাংসের দোকানগুলিতে সিলমোহরের ব্যবস্থা না থাকলেও পুরকর্মীরা টহলদারি চালাতেন। এখন পচা মাংস নিয়ে রাজ্য জুড়ে তুলকালাম চললেও আরামবাগ পুরসভা কতৃপক্ষ উদাসীন বলে অভিযোগ স্থানীয় মানুষের।
কতদিন আগের, কী মাংস বিক্রি হচ্ছে তা নিয়ে সন্দিহান সাধারণ মানুষ। চোখের সামনে খাসি বা মুরগি মেরে মাংস তৈরি করলে তবেই তাঁরা কিনছেন।
আরামবাগ-১ নম্বর ওয়ার্ডের সতীতলার বিমল সরকার নামে এক বাসিন্দার কথায়, “প্রতি রবিবার বাড়িতে মাংস খাওয়ার রীতি দীর্ঘদিনের। এখন এমন হয়েছে, কেউ মাংস ছঁুতে চাইছে না।’’ তাঁর অভিযোগ, “চারদিকে এত ধরপাকড় চলছে। কিন্তু আমাদের এখানে কিছুই তো হচ্ছে না।’’
৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা স্কুল শিক্ষক সুদর্শন চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘খাসি বা মুরগি সামনে কেটে দিসে তবেই কিনছি। ফের মাংসে সিলমোহরের ব্যবস্থা চালু করুক পুরসভা।”
ভাগাড় কাণ্ডের পর মাংস ব্যবসা লাটে উঠেছে বলে আফশোস করছেন মাংসের দোকানদাররাও। শহরের এক মাংসের দোকানের মালিক শেখ আব্দুল রহিম বলেন, “ছোট শহরে খারাপ বা পচা মাংস বিক্রির প্রশ্ন নেই। তবে বিক্রি কমেছে। আগে রোজ ১৫টা খাসি কেটে বিক্রি করতাম। সেখানে এখন ৮টা বিক্রি হচ্ছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘পুরসভা সিলমোহরের ব্যবস্থা করলে তো ভালই।’’
আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী বলেন, “শহরে মাংস বিক্রি নিয়ে পুরসভা উদাসীন নয়। ফের সিলমোহর ব্যবস্থা চালুর কথা ভাবছি। ক্যামেরারও ব্যবস্থা করা হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy