বার্তা: বৈঠক চলছে। তাই সভাকক্ষের দিকেই কারও যাওয়া নিষেধ। সোমবার চন্দননগর পুরসভায়। নিজস্ব চিত্র
মন্ত্রগুপ্তির শপথ হল। দফতরও ভাগ হল। কিন্তু যে কারণে এমন রদবদল, চন্দননগর পুরসভায় শাসক দলের গোষ্ঠীকোন্দল মিটল কি? পুরসভার অন্দরে গুঞ্জন, মেয়র পারিষদ রদবদলেও তা মেটেনি। বরং দফতর বণ্টন নিয়ে ফের পক্ষপাতের অভিযোগ উঠল ‘বিদ্রোহী’ শিবির থেকে।
চন্দননগর পুরসভার ৩৩টি আসনের মধ্যে শাসকদল তৃণমূলের হাতে রয়েছে ২৩টি। দীর্ঘদিন ধরেই ওই দলের কাউন্সিলরদের মধ্যে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের আগুন ধিকিধিকি করে জ্বলছিল। গত মাস ছ’য়েক তা বড় আকার ধারণ করে। ১৫ জন কাউন্সিলর দলেরই মেয়র এবং কয়েক জন মেয়র পারিষদের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ‘বিদ্রোহ’ ঘোষণা করেন। দলে আলোচনা হলেও সমস্যা মেটেনি।
গত বুধবার সদ্য অপসারিত এক মেয়র পারিষদের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ করেন দলেরই এক কাউন্সিলর। এরপর শুক্রবার কলকাতায় দলের হুগলি জেলা পর্যবেক্ষক অরূপ বিশ্বাসের উপস্থিতিতে পাঁচ মেয়র পারিষদকে সরিয়ে দেওয়া হয়। নতুনদের নাম ঘোষণা করা হয়। সোমবার পুরভবনে ডেপুটি মেয়র এবং মেয়র পারিষদরা শপথ নেন। তাঁদের দফতর ঘোষণা করেন মেয়র রাম চক্রবর্তী। অনুষ্ঠানে ছিলেন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত, ইন্দ্রনীল সেন, অসীমা পাত্র, উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল।
তবে দফতর বণ্টন খুশি করতে পারেনি ‘বিদ্রোহী’ কাউন্সিলরদের। তাঁদের বক্তব্য, পূর্ত, দারিদ্র দূরীকরণ, জল সরবরাহের মতো গুরুত্বপূর্ণ দফতর ফের শাসক গোষ্ঠীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত কাউন্সিলরদের হাতেই দেওয়া হয়েছে। ‘বিদ্রোহী’রা অপেক্ষাকৃত গুরুত্বহীন দফতর পেয়েছেন। ‘বিদ্রোহী’ শিবিরের এক কাউন্সিলর বলেন, ‘‘পুরসভা ওদের হাতে কুক্ষিগত রাখতেই এটা করা হল।’’ অন্য এক কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘দফতর বণ্টন রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে আলোচনা করে হয়েছে বলে তো মনে হয় না। এ নিয়ে অনেক প্রশ্ন আছে।’’ পুরসভা সূত্রের খবর, দলের কোন নেতৃত্বের নির্দেশে দফতর বণ্টন করা হয়েছে, তা নিয়ে মন্ত্রীদের সামনেই প্রশ্ন তোলেন এক কাউন্সিলর।
এ দিন পুরভবনের দোতলায় সভাকক্ষের দিকে যাওয়ার রাস্তায় চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। পুরকর্মীরা ঘরের চৌহদ্দি থেকে সাংবাদিকদের সরিয়ে দেন। তাঁরা জানান, মন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন এমনই নির্দেশ দিয়েছেন। পরে অবশ্য সংবাদমাধ্যমকে শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে ঢুকতে দেওয়া হয়। পুরসভারই এক কাউন্সিলর বলেন, ‘‘পাছে কেউ বেফাঁস কিছু বলে ফেলেন, অথবা অপ্রীতিকর পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাই সংবাদমাধ্যমকে দূরে রাখা হচ্ছিল।’’
মেয়র থেকে দলের জেলা নেতৃত্ব— কেউই অবশ্য কোন্দলের কথা স্বীকার করছেন না। মেয়র রামবাবু বলেন, ‘‘মানুষকে পরিষেবা দেওয়ার লক্ষ্যে পুরসভা কাজ করছে। আশা করছি, কাজে আরও গতি আসবে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ব্যাপার নেই। সাময়িক ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে। আমরা সবাই হাত ধরাধরি করেই কাজ করব। কিছু মানুষ বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে মিথ্যা রটাচ্ছে।’’ তপনবাবুদের বক্তব্য, ‘‘ওখানে কারও মধ্যে কোনও ক্ষোভ নেই। সুষ্ঠু ভাবেই কাজ চলবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy