বন্ধ: বালির পাঠক ঘাট শ্মশান। নিজস্ব চিত্র
চুল্লি ভেঙে ঝুলছে আধপোড়া শবদেহের একাংশ! দৃশ্যটা দেখে চমকে উঠেছিলেন শ্মশানের কর্মী থেকে ডোম। কোনও মতে বাঁশ দিয়ে ঠেলে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া হলেও শেষরক্ষা হল না। বুধবারের ওই ঘটনার পরে বৃহস্পতিবারও ফের বিগড়ে গেল বৈদ্যুতিক চুল্লি। আর তার জেরে ফের বালি পাঠক ঘাট শ্মশানের ওই চুল্লি বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিল হাওড়া পুরসভা।
মাত্র দু’মাস আগে লক্ষাধিক টাকা খরচ করে ওই শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লি সারানো হয়েছিল। বদলানো হয়েছিল কয়েলও। এ বার ভেঙে পড়ল চুল্লির ভিতরের আগুনের ইট (ফায়ার ব্রিকস)। বিকল হল চুল্লিতে শবদেহ ঢোকানোর ট্রলিও। এই ঘটনার পরে প্রশ্ন উঠেছে, দু’মাস আগে যখন চুল্লিটির কয়েল সংস্কার করা হয়েছিল তখন ঠিকাদার বা পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের চোখে অন্য সমস্যাগুলি ধরা পড়েনি কেন? কারণ, অন্য পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারদের মতে, ফায়ার ব্রিকস ভেঙে পড়ার আগে নিশ্চয় বেশ কিছু দিন ধরে তাতে চিড় ধরেছিল। তা না হলে আচমকা সেটি ভেঙে পড়তে পারে না। তাঁদের মতে, সঠিক নজরদারি না থাকাতেই সমস্যা হয়েছে। হাওড়া পুরসভা সূত্রের খবর বালিতে শ্মশান দেখভালের ইঞ্জিনিয়ারের সংখ্যাও কম। ফলে নজরদারিতে কিছু ঘাটতি থেকেই যায়।
চুল্লির কয়েল বদলানোর সময়েই অন্য সমস্যাগুলি দেখা হয়নি কেন, এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হাওড়া পুরসভার মেয়র পারিষদ শ্যামল মিত্র। তাঁর কথায়, ‘‘যে ঠিকাদার সংস্থা কাজ করেছিল তাদের থেকে জানতে চাইবো, কেন ফায়ার ব্রিকস বা ট্রলির অবস্থা পরীক্ষা করা হয়নি। সেই সময় যদি সমস্যাটি দেখা হত তা হলে তখনই সারানো যেত।’’ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শ্যামলবাবু নিজেও সেখানে যান। তিনি বলেন, ‘‘ভোগান্তি হবে জানি। তবুও কাজের জন্য ১০ দিন চুল্লি বন্ধ রাখতেই হবে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, কয়েক দিন আগে দু’টি ফায়ার ব্রিকসে চিড় দেখা দিলে কর্মীরা সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে জানান। তখন জোড়াতাপ্পি দিয়ে তা সামাল দেওয়া হয়। এর পরে বুধবার বিকেলে এক মহিলার দেহ চুল্লিতে ঢোকানোর কিছু ক্ষণের মধ্যেই ব্রিকস ভেঙে পড়ে। যে জায়গায় ছাই পড়ে সেখানেই ঝুলে যায় ওই মহিলার দেহের একাংশ। এর পরে অবশ্য শবদেহগুলি পুরোপুরি ভাবে চুল্লিতে ঢোকানো সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার সকালে ফের ট্রলিতে চাপিয়ে চুল্লির ভিতরে শবদেহ ঢোকানোর সময় ঘটে বিপত্তি। শবদেহ অর্ধেক ঢুকে ট্রলি আটকে যায়। পরিজনদের সামনেই অর্ধেক দেহ পুড়তে শুরু করে। শেষে কর্মীরা মিলে রীতিমতো ধাক্কা মেরে পুরো ট্রলি ঢোকান। কিন্তু এরপরে আর চুল্লির ভিতর থেকে ট্রলি বের করা যায়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy