Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪

হুগলিতে টোটো নিয়ে জনস্বার্থ মামলা দায়ের

রিতাদেবীর আইনজীবী সঞ্জীব দত্তের বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় পরিবহণ আইন অনুযায়ী, ই-রিক্‌শা রাস্তায় নামানোর নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০১৭ ০২:১৯
Share: Save:

হুগলিতে নিয়ম না মেনে টোটো চলাচল নিয়ে অভিযোগ বরাবরের। সম্প্রতি হুগলির বাসিন্দা রিতা মিত্র বেআইনি টোটো নিয়ে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছেন।

রিতাদেবীর আইনজীবী সঞ্জীব দত্তের বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রীয় পরিবহণ আইন অনুযায়ী, ই-রিক্‌শা রাস্তায় নামানোর নির্দিষ্ট পদ্ধতি রয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার অনুমোদিত কোম্পানি থেকে ই-রিকশা কেনা এবং বাজারে তা নামানোর আগে জেলার আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরের ছাড়পত্র নেওয়া বাধ্যতামূলক। কিন্তু বাস্তবে তা হচ্ছে না। অনেক ক্ষেত্রে পুরসভার অনুমতি নিয়ে টোটো চলছে। যদিও পুরসভার সেই এক্তিয়ার নেই।’’

কয়েক বছর আগে হুগলিতে শুরু হয় টোটো চলাচল। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, আইনের তোয়াক্কা না করেই শ’য়ে শ’য়ে টোটো রাস্তায় চলছে। অথচ প্রশাসন নির্বিকার। সমস্যা বেশি শহরাঞ্চলে। উত্তরপাড়া থেকে চুঁচুড়া পর্যন্ত বিভিন্ন পুর-এলাকায় একই পরিস্থিতি।

পরিবহণ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত অনেকের দাবি, টোটোর বাড়বাড়ন্তের ফলে অন্য গাড়ির মালিক-কর্মীরা বেকায়দায় পড়েছেন। বিভিন্ন রুটে বাস কমেছে। কয়েক বছর আগেও শ্রীরামপুর থেকে বাগবাজার ৩ নম্বর রুটে প্রায় ৭০টি বাস চলত। এখন চলে সাকুল্যে গোটা ছয়েক। টোটোর দাপাদাপি কমাতে বিভিন্ন জায়গায় অটো ও বাস কর্মীরা আন্দোলনে নামেন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি। অনেক যাত্রীর বক্তব্য, বাস কমে যাওয়ায় অনেক সময় একাধিক টোটো বা অটো বদল করে গন্তব্যে পৌঁছতে হয়। তাতে বেশি টাকা খরচ হয়। ৪-৫ জন যাত্রী তোলার পক্ষে টোটো কতটা উপযুক্ত, সেই প্রশ্নও তুলছেন তাঁরা।

বছর দু’য়েক আগে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে বৈঠকের পরে জেলা প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা টোটো নিয়ন্ত্রণের আশ্বাস দিয়েছিলেন। মাস কয়েক আগে চন্দননগর কমিশনারেটের তরফে উত্তরপাড়া থেকে বৈদ্যবাটি পর্যন্ত টোটো চালানো নিয়ে নানা নিয়ম জারি হয়। কিন্তু আখেরে কাজের কাজ হয়নি। অভিযোগ, শাসক দলের নেতারা নেপথ্যে থাকাতেই টোটোর সংখ্যা এবং দাপট মাত্রাছাড়া। কমিশনারেটের কর্তাদের অবশ্য আশ্বাস, সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী টোটো চালানোর ব্যবস্থা করা হবে।

হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা না মেনে জিটি রোড, অসম লিঙ্ক রোডের মতো রাস্তাতেও টোটো চলছে। যত্রতত্র টোটো-স্ট্যান্ড গজিয়ে উঠছে। বেলাগাম টোটোয় যানজট বাড়ছে। সঞ্জীববাবুর বক্তব্য, নির্দিষ্ট নিয়ম না মানায় টোটোর দুর্ঘটনা বিমা নেই। ফলে দুর্ঘটনায় টোটোর কোনও যাত্রী আহত হলে বা মারা গেলে বিমার টাকা তিনি পাবেন না। সঞ্জীববাবুর কথায়, ‘‘হুগলির বিভিন্ন পুরসভা, থানা, পরিবহণ দফতর বা পুলিশ-প্রশাসনের দফতরে এমনকি নবান্নেও লিখিত ভাবে সমস্যার কথা জানানো হয়েছিল। কিন্তু সেখানে সদুত্তর না মেলায় রিতাদেবী হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন।’’ মামলাটি শুনানির অপেক্ষায় রয়েছে বলে তিনি জানান।

হুগলির জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, ‘‘আগে পরিবহণ দফতরের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী টোটোর রেজিস্ট্রেশন করত পুরসভা। কিন্ত এখন আর সেটা কার্যকর নয়। কোনও টোটোর যদি আগে রেজিস্ট্রেশন থেকেও থাকে, এখন নতুন নিয়মে আরটিও দফতর থেকে ফের নতুন করে ওই টোটোকে রেজিস্ট্রেশন করাতেই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Public interest litigation Toto
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE