Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ঘুষ নেওয়ায় অস্থায়ী নিয়োগ স্থগিত হাওড়ায়

চাকরিপ্রার্থীর নাম পাঠানোর নামে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল হাওড়া পুরসভায়। সেই অভিযোগে সরাসরি নাম জড়ালো বেশ কয়েক জন কাউন্সিলরের। এর জেরে বিরক্ত মেয়র স্থগিত করে দিলেন অস্থায়ী ভিত্তিতে কর্মী নেওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটাই।

দেবাশিস দাশ
শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৫৮
Share: Save:

চাকরিপ্রার্থীর নাম পাঠানোর নামে দুর্নীতির অভিযোগ উঠল হাওড়া পুরসভায়। সেই অভিযোগে সরাসরি নাম জড়ালো বেশ কয়েক জন কাউন্সিলরের। এর জেরে বিরক্ত মেয়র স্থগিত করে দিলেন অস্থায়ী ভিত্তিতে কর্মী নেওয়ার পুরো প্রক্রিয়াটাই।

সম্প্রতি মেয়র পরিষদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছিল হাওড়া পুরসভায় অস্থায়ী ভিত্তিতে ৬০০ জনকে চাকরি দেওয়া হবে। এ জন্য পুরসভার ৬৬টি ওয়ার্ডের প্রত্যেক কাউন্সিলরকে নিজের এলাকার ৮-১০ জন বেকার যুবক-যুবতীর নামও পাঠাতে বলা হয়েছিল।

সমস্যার সূত্রপাত এর পরেই। কিছু দিনের মধ্যেই কয়েক জন কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে মোটা টাকা চাওয়ার অভিযোগ আসতে শুরু করে পুরকর্তাদের কাছে। অভিযোগ, হাওড়া পুরসভায় ওই অস্থায়ী চাকরির জন্য প্রার্থীদের থেকে ২০ হাজার থেকে ২ লক্ষ টাকা পর্ষন্ত ঘুষ চাওয়া হচ্ছে। এই অভিযোগ আসার পরে অস্বস্তিতে পড়েন পুর কতৃর্পক্ষ। বিরক্ত পুরসভার মেয়র রথীন চক্রবর্তী ইতিমধ্যেই পুর কমিশনারকে নির্দেশ দিয়েছেন, প্রার্থী বাছাইয়ে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে ওই প্রক্রিয়া আপাতত বন্ধ রাখা হোক।

হাওড়া পুরসভায় তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে বিভিন্ন দফতরে কর্মী সংখ্যা বাড়াতে প্রায় ন’ হাজার কর্মী নিয়োগ করে পুর বোর্ড। স্বাস্থ্য দফতরে সাড়ে তিন হাজার, সাফাই দফতরে ১০০ দিনের কাজের ভিত্তিতে আড়াই হাজার, অফিসের বিভিন্ন কাজে তিন হাজার বেকার যুবক-যুবতীকে নিয়োগ করা হয়। পুরকর্তাদের বক্তব্য, কর্মসংস্থানের পাশাপাশি ‘নিজ শহর নিজে গড়ো’ এই বার্তা সফল করতে বেকারদের যুক্ত করা হয়েছে। পুরসভার মতে, অন্য জেলা থেকে আসা যুবক-যুবতীদের তুলনায় এই পুর এলাকার বাসিন্দারাই হাওড়ার উন্নয়নে একাত্ম হতে পারবেন। হাওড়া পুরসভা সূত্রের খবর, প্রথম দিকে কাউন্সিলরদের পাঠানো তালিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন দফতরে ন’ হাজার কর্মী নিয়োগ করা হয়। পরে পরীক্ষার মাধ্যমে তাঁদের যোগ্যতা যাচাই হয়। এর পরে তাঁদের দফতরের মধ্যে বদলিও করা হয়।

সম্প্রতি মেয়র পরিষদের বৈঠকে ফের কর্মী নিয়োগের সিদ্ধান্ত হয়। পুরসভা সূত্রের খবর, কোন দফতরে কত কর্মী প্রয়োজন, তার তালিকাও তৈরি করেন কর্মচারী সংক্রান্ত বিষয়ের মেয়র পারিষদ বাণী সিংহরায়। এর মধ্যেই পুরকর্তাদের কাছে চাকরি দেওয়ার নামে টাকা চাওয়ার অভিযোগ আসতে শুরু করে। সরাসরি মেয়রের কানেও সেই অভিযোগ পৌঁছে যায়।

হাওড়া পুরসভা সূত্রের খবর, এই অভিযোগ বেশি এসেছে বালির ৫১-৬৬ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন কাউন্সিলরের নামে। তবে ১-৫০ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যে কয়েকটি ওয়ার্ড থেকেও অভিযোগ জমা পড়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক পুরকর্তা বলেন, ‘‘পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, বিভিন্ন পুর আধিকারিকদের কাছে চিরকুটে লিখে প্রার্থীদের পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’

এই সব অভিযোগের জবাবে মঙ্গলবার মেয়র রথীন চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুরসভায় কাজের লোক প্রয়োজন, কর্মসংস্থানও জরুরি। কিন্তু সেই প্রক্রিয়াকে কেন্দ্র করে জন প্রতিনিধিদের নামে যে টাকা চাওয়ার অভিযোগ আসছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। আপাতত নিয়োগ প্রক্রিয়া বন্ধ থাকবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Bribe Recruitment Howrah Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE