Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪
‘মিশন নির্মল বাংলা’র টাকা নয়ছয়

বাইনানে শৌচাগার ১০০ দিনের প্রকল্পে

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ‘মিশন নির্মল বাংলা’র টাকা মিলবে না। তাই ১০০ দিনের প্রকল্পে ওই শৌচাগারগুলি তৈরি করা। এটাই অগ্রাধিকার। কারণ, হাওড়াকে ‘নির্মল জেলা’ ঘোষণার তোড়জোড় চলছে।

নুরুল আবসার
বাগনান শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৮ ০৭:০০
Share: Save:

‘মিশন নির্মল বাংলা’ প্রকল্পে শৌচাগার তৈরিতে কোটি কোটি টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে। কিন্তু বাগনান-১ ব্লকের বাইনান পঞ্চায়েতে ওই প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগ আগেই উঠেছিল। প্রকল্পের টাকা নয়ছয় হওয়ায় বেশ কিছু শৌচাগার এ বার ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে তৈরির সিদ্ধান্ত নিল জেলা প্রশাসন।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, ‘মিশন নির্মল বাংলা’র টাকা মিলবে না। তাই ১০০ দিনের প্রকল্পে ওই শৌচাগারগুলি তৈরি করা। এটাই অগ্রাধিকার। কারণ, হাওড়াকে ‘নির্মল জেলা’ ঘোষণার তোড়জোড় চলছে।

প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। গ্রামবাসীদের হয়ে দুর্নীতির অভিযোগটি তুলেছিলেন স্থানীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব। কংগ্রেস নেতা মোর্তজা হোসেন বলেন, ‘‘হিসাব করে দেখেছি, প্রায় ৪২ লক্ষ টাকা নয়ছয় হয়েছে। শৌচাগার না-হয় ফের অন্য খাতের টাকায় তৈরি করে দেওয়া হবে। কিন্তু যারা দুর্নীতিতে যুক্ত, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে না কেন?’’

এ বিষয়ে মুখ খুলতে চাননি বিডিও সত্যজিৎ বিশ্বাস বা অতিরিক্ত জেলাশাসক (পঞ্চায়েত) শঙ্করপ্রসাদ পাল। তবে জেলা প্রশাসনের এক কর্তার আশ্বাস, তদন্ত চলছে। দোষীদের ছাড়া হবে না।

‘মিশন নির্মল বাংলা’ প্রকল্পে প্রতিটি শৌচাগার তৈরির জন্য খরচ ধরা হয় ১০ হাজার ৯০০ টাকা করে। উপভোক্তাকে দিতে হয় ৯০০ টাকা। বাকি টাকা কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যৌথ ভাবে দেয়। ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষে বাইনান পঞ্চায়েতে ৬২৯টি শৌচাগার তৈরির জন্য টাকা বরাদ্দ হয়। নিয়মানুযায়ী ঠিকা সংস্থা কাজটি করে। ঠিকা সংস্থা নির্বাচন করে পঞ্চায়েত সমিতি। তাদের পাওনা টাকাও মেটায় সমিতি।

ওই পঞ্চায়েতে মোট ৪৫০টি শৌচাগার তৈরিতে টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ ওঠে গত বছরের শেষ দিকে। তার আগে মে মাসে বাগনান-১ ব্লককে ‘নির্মল ব্লক’ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু যে ব্লকে ৪৫০টি শৌচাগারই হয়নি, সেই ব্লক ‘নির্মল’ হয় কী ভাবে এ প্রশ্নও ওঠে। উপভোক্তাদের অভিযোগ ছিল, তাঁদের কাছ থেকে ৯০০ টাকা করে ন‌েওয়া হলেও শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হয়নি। তদন্তে অভিযোগের সারবত্তা পায় জেলা প্রশাসন। প্রশাসনের কর্তা জানান, তদন্তে দেখা যায়, ৪৫০টি শৌচাগারের জন্য ঠিকা সংস্থার পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হলেও বেশিরভাগই তৈরি হয়নি। কিছু শৌচাগার অর্ধেক তৈরি হয়েছে।

ঠিকা সংস্থাকে টাকা মেটানো নিয়ে পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি-র মধ্যে চাপান-উতোর এখনও অব্যাহত। প্রধান সাহানা বেগমের দাবি, ‘‘কাজটি করানো হয় পঞ্চায়েত সমিতি এবং ব্লক থেকে। আমরা এ বিষয়ে কিছু জানি না।’’ পক্ষান্তরে, পঞ্চায়েত সমিতির জনস্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ সমীর সামন্তের দাবি, ‘‘পঞ্চায়েতের প্রধান এবং নির্মাণ সহায়কের কাছ থেকে সব কাগজপত্র আসার পরেই ঠিকা সংস্থাকে পাওনা টাকা দেওয়া হয়েছে। কাজ না হওয়ার দায় পঞ্চায়েতেরই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Toilets 100 days work
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE