জোরকদমে চলছে কেনাকাটা। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।
সামনেই খুশির ঈদ। হাতে আর সময় নেই। তাই তমলুকে জমে উঠেছে ঈদের বাজার। জেলার সদর শহর তমলুকে পোশাক, গয়না, জুতো, মনোহারি, আতর, টুপি, লাচ্ছা, সিমাইয়ের দোকানগুলিতেও এখন জমজমাট ভিড়।
ঈদের বাজার ধরতে হাল ফ্যাশনের পোশাকের পসরা নিয়ে হাজির বিক্রেতারাও। সেখানে যেমন বাজার মাতাচ্ছে মেয়েদের আনারকলি, মধুবালা চুরিদার। ছেলেদের ফ্যাশনের নতুন আইকন মোদী জ্যাকেট। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পোশাকের অনুকরণে তৈরি কুর্তা-সহ জ্যাকেট ও ট্রাউজার সেট এবার বাজারে ভালই বিক্রি হচ্ছে।
বুধবার সকাল থেকেই তমলুক শহরের পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ড, মসজিদ পাড়া, বাদামতলা, হাসপাতাল মোড় এলাকার দোকানগুলিতে ঈদের কেনাকাটার ভিড় জমে। শুধু তমলুক শহর, শহর সংলগ্ন সোনামুই, ধলহরা, চনশ্বরপুর, দনিপুর এলাকার বাসিন্দারাও সপরিবারে শহরের বিভিন্ন দোকানে কেনাকাটা করতে ভিড় জমিয়েছেন। ব্যবসায়ীদের আশা, ঈদের আগে ভিড় আরও বাড়বে। বাদামতলার একটি দোকানের ব্যবসায়ী আশরফ মল্লিক জানান, সোমবার থেকে দোকানে ঈদের কেনাকাটা বেড়েছে। এবার মেয়েদের শাড়ির পাশপাশি চুড়িদার, লেহেঙ্গা কেনার আগ্রহ আগের চেয়ে বেড়েছে। চুড়িদারের মধ্যে মধুবালা, আনারকলির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। তিনি আরও জানান, ছেলেদের জন্য হাল ফ্যাশনের প্যান্ট, জামা, টি-শার্টের চাহিদা তো আছেই। এবার বাজারে নতুন আকর্ষণ হিসেবে এসেছে মোদী জ্যাকেট। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পোশাকের অনুকরণে সাদা পাজামা ও সাদা জামার সঙ্গে লাল, নীল, হলুদ রঙের জ্যাকেট সেট এবারই প্রথম বাজারে এসেছে। এই জ্যাকেটের চাহিদাও বেশ ভাল।”
ঈদের কেনাকাটা করতে সপরিবারে তমলুক শহরে এসেছেন সোনামুই গ্রামের আশেকা বেগম, আলেমারা বেগম, চনশ্বরপুর গ্রামের পারভিন সুলতানা। তাঁদের কথায়, “মাঝে কয়েকদিন বৃষ্টির জন্য আসতে পারছিলাম না। হাতে আর বেশি সময় নেই। তাই আজ বাড়ির সবাই মিলে বেরিয়েছি।” ঈদের কেনাকাটা কেমন চলছে? দোকানে বসে চুড়িদার বাছাইয়ের ফাঁকে আশেকা, আলেমারা, পারভিনরা বলেন, “প্রতিবছর কিছুটা করে জিনিসের দাম তো বাড়েই। এবার পোশাকের দাম বেশ চড়া। কিন্তু উৎসবে তো নতুন পোশাক কিনতেই হবে। তাই সবদিক সামলেই কিনতে হচ্ছে।”
কেনাকাটার একই ছবি ধরা পড়ল তমলুক শহরের পাঁশকুড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকার পোশাকের দোকানগুলিতেও। স্থানীয় এক ব্যবসায়ী অজয় দে বলেন, “মেয়েদের চুরিদারের তালিকায় এবার নতুন সংযোজন নেটের ব্রাসো। এরফলে চুড়িদার দেখতে বেশি আকর্ষণীয় হয়েছে। এছাড়াও মহিলাদের শাড়ি, ছেলেদের পাঞ্জাবি তো আছেই।”
ঈদে নতুন পোশাকের সঙ্গে চাই মানানসই গয়নাও। তাই ভিড় জমছে রকমারি গয়নার দোকানগুলিতেও। ঈদ উপলক্ষে এবার বাজারে এসেছে বেশ কিছু নতুন ডিজাইনের কাঁচ- ধাতু-পাথরের চুড়ি ও গয়না। তমলুক শহরের বাদামতলা এলাকার এক ব্যবসায়ী সুনীল দত্ত জানান, কাঁচের রেশমি চুড়ি ছাড়াও এবার ঈদ ঊপলক্ষে বাজারে নতুন এসেছে বিভিন্ন রঙের কাঁচের বাক্সচুড়ি, পালিশ চুড়ি ও দুলহন চুড়ি। এছাড়াও এবার নতুন এসেছে মেটাল চুড়ি (ধাতুর তৈরি) ও স্টোনের (পাথরের তৈরি) চুড়ি। এবার বাজারে দুলহন ও স্টোনের চুড়ির চাহিদা সবচেয়ে বেশি। আর গলার হার, কানের দুল-সহ দুলহন গয়নার সেট পাওয়া যাচ্ছে। ঈদের বাজারে চাহিদা রয়েছে টুপি, আতরেরও।
তমলুক শহরের জুম্মা মসজিদ এলাকার এক ব্যবসায়ী শেখ ইউনুস জানান, ফিরদৌস, মজমোয়া, রহুগোলাপ, হায়াতি, সালমা প্রভৃতি নামের আতরের সাথে আছে তুর্কি আতর লেব্রা। ৫-১৫০ টাকা দামের এইসব আতরের চাহিদাই বেশি। আর সুরমা ১০ থেকে ২০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। ঈদ উপলক্ষে কলকাতার তৈরি সিমাই ছাড়া উত্তরপ্রদেশের হাজি সিমাইও আনা হয়েছে। যার দাম ৪৫ থেকে ৮০ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম। আর ৮০-১০০ টাকা কিলোগ্রাম দরে বিকোচ্ছে লাচ্ছাও। শেখ ইউনুস জানান, ঈদের কেনাকাটা এখনও সেভাবে জমেনি। তবে আর দু’একদিনের মধ্যে ভাল ভিড় হবে বলেই আশা করছি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy