Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

কলেজে অশান্তি, ইস্তফা দিতে চান টিচার ইন-চার্জ

কলেজে অশান্তির জেরে ফের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চাইলেন এক টিচার ইন-চার্জ। বৃহস্পতি-শুক্র, পরপর দু’দিন ছাত্র পরিষদ (সিপি) এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল মেদিনীপুর শহরের কৈবল্যদায়িনী মহাবিদ্যালয়ে (কমার্স কলেজ)-এ। অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৪ ০০:৫৫
Share: Save:

কলেজে অশান্তির জেরে ফের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চাইলেন এক টিচার ইন-চার্জ।

বৃহস্পতি-শুক্র, পরপর দু’দিন ছাত্র পরিষদ (সিপি) এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (টিএমসিপি)-এর মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল মেদিনীপুর শহরের কৈবল্যদায়িনী মহাবিদ্যালয়ে (কমার্স কলেজ)-এ। অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ। শনিবার কলেজের টিচার ইন-চার্জ বিবেকানন্দ দাস মহাপাত্র দায়িত্ব থেকে ইস্তফা দিতে চেয়ে পরিচালন সমিতির সভাপতির কাছে চিঠি দেন। তবে তাঁকে এখনও অব্যাহতি দেওয়া হয়নি।

সম্প্রতি পশ্চিম মেদিনীপুরেই ঝাড়গ্রামের মানিকপাড়া বিবেকানন্দ কলেজের টিচার ইন-চার্জ টিএমসিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের চাপে ইস্তফা দিয়েছিলেন। চাপড়ার বাঙালঝি কলেজের অধ্যক্ষও টিএমসিপি-র আচরণে ‘অপমানিত’ হয়ে ইস্তফা দেন। পরে অবশ্য সিদ্ধান্ত বদলান তিনি। এ বার সেই তালিকায় নাম ঢুকল মেদিনীপুর কমার্স কলেজের।

হঠাৎ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি চান কেন? বিবেকানন্দবাবুর জবাব, “যা জানানোর, পরিচালন সমিতিকে জানিয়েছি। আমি চাই, অন্য কাউকে এই দায়িত্ব দেওয়া হোক।” কলেজ পরিচালন সমিতির সভাপতি শ্যামলেন্দু মাইতি-র বক্তব্য, “গত দু’দিনে কিছু অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটে গিয়েছে।”

বৃহস্পতি এবং শুক্রবার মেদিনীপুর কমার্স কলেজ চত্বরে অশান্তি হয়। বৃহস্পতিবার দু’টি ছাত্র সংগঠনেরই প্রতিষ্ঠা দিবস ছিল। পতাকা তোলাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের সংঘর্ষ বাধে। শুক্রবার সিপি পরিচালিত ছাত্র সংসদের ঘরে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে টিএমসিপি-র বিরুদ্ধে। এরপরই অনির্দিষ্টকালের জন্য কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ।

কলেজ সূত্রের খবর, এ দিন সকালে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে কথা হয় শ্যামলেন্দুবাবুর। কলেজের সার্বিক পরিস্থিতি তিনি শিক্ষামন্ত্রীকে জানান। এ-ও জানান যে আপাতত কলেজ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী অবশ্য কলেজ খোলা রাখতে অনুরোধ করেন। পরে পার্থবাবু বলেন, “কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আমি নিজেই যোগাযোগ করেছিলাম। বলেছি, কলেজ বন্ধ রাখা যাবে না। আমাদের দলের জেলা নেতৃত্বকে বিষয়টি দেখতে বলেছি।” তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি তথা দলের শহর সভাপতি আশিস চক্রবর্তী কমার্স কলেজের পরিচালন সমিতির সদস্য। তিনি বলেন, “দল বিষয়টি খুবই গুরুত্ব দিয়ে দেখছে।” শিক্ষামন্ত্রীর কথামতো শনিবার কলেজ খোলাই ছিল। তবে ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতি ছিল সামান্য।

কলেজে বারবার গণ্ডগোল হচ্ছে কেন? বিবেকানন্দবাবু বলেন, “আমি তো পুলিশ নই, শিক্ষক। পুলিশই বলতে পারবে কেন গোলমাল হচ্ছে।”

টিএমসিপি অবশ্য কলেজের পরিস্থিতির জন্য সিপিকে দায়ী করছে। সংগঠনের রাজ্য সভাপতি শঙ্কুদেব পণ্ডা বলেন, “ওই কলেজের ছাত্র সংসদ সিপি-র দখলে। শুনেছি, সিপি-র কিছু কার্যকলাপের জন্যই টিচার ইন-চার্জ ইস্তফা দিতে চাইছেন। ওদের গুন্ডামি বরদাস্ত করা হবে না।” পক্ষান্তরে সিপি-র রাজ্য সভাপতি আশুতোষ চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, “কলেজের ছাত্র সংসদ দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে টিএমসিপি। তাই ওরা বারবার অশান্তি করছে। সে জন্যই টিচার ইন-চার্জ ইস্তফা দিতে চান।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Teacher-in-charge midnapore
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE