মেদিনীপুরের বিবিগঞ্জে সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী আরাধনা। ছবি: কিংশুক আইচ।
জগদ্ধাত্রী পুজোয় মেতেছে মেদিনীপুর। বিবিগঞ্জ থেকে হবিবপুর, তাঁতিগেড়িয়া থেকে বাড়মানিকপুর, পুজোর জাঁকে চোখ টানছে সবাই। মেদিনীপুরে সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজোর সংখ্যা কম নয়। আগে এত সর্বজনীন পুজো হত না। পুজো হত বিবিগঞ্জ, সুজাগঞ্জের মতো কয়েক’টি এলাকায়। এখন অবশ্য ভিড় ছুঁয়ে যায় রবীন্দ্রনগর, পঞ্চুরচক, কর্নেলগোলা, বটতলাচক, অলিগঞ্জের মতো এলাকাও।
শহরের বাড়মানিকপুর সর্বজনীন জগদ্ধাত্রীর পুজোর এ বার দ্বিতীয় বর্ষ। পুজোর দিনগুলোয় থাকছে নানা কর্মসূচি। বৃহস্পতিবার পাড়ার বয়ষ্ক ব্যক্তিদের সংবর্ধনা, নৃত্যানুষ্ঠান, সঙ্গীত সন্ধ্যা আয়োজিত হয়। শুক্রবার ছোটদের ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, শঙ্খধ্বনি, মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, ক্যুইজ প্রতিযোগিতা হয়। আজ, শনিবার রয়েছে আঁকা প্রতিযোগিতা। সন্ধ্যায় পুরস্কার বিতরণ ও বিচিত্রানুষ্ঠান। অলিগঞ্জ সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজোর এ বার ১৫ তম বর্ষ। এখানেও পুজোর দিনগুলোয় নানা কর্মসূচি রয়েছে। শুক্রবার সন্ধ্যায় পুজোর উদ্বোধন হয়। আজ, শনিবার সপ্তমী থেকে নবমী পর্যন্ত পুজো হবে। সকালে বাদ্যযন্ত্র সহকারে ঘট ডোবাতে যাওয়া হবে। রাতে আতসবাজি প্রদর্শন। রবিবার রয়েছে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন, শঙ্খবাদন, ধুনুচি নৃত্য, আঁকা প্রভৃতি প্রতিযোগিতা। রয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও।
তাঁতিগেড়িয়া সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজোর এ বার দ্বিতীয় বর্ষ। পুজো উপলক্ষে এখানেও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। হবিবপুর সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজোর এ বার তৃতীয় বর্ষ। শুক্রবার পুজোর উদ্বোধন হয়েছে। পুজোটি হয় ক্ষুদিরাম ব্যায়ামাগারের সামনে। অন্য দিকে, হবিবপুরেরই বিদ্যুৎ বাহিনী অ্যাথলেটিক ক্লাবের মাঠে সর্বজনীন জগদ্ধাত্রীর পুজো হয়। এ বার চতুর্থ বর্ষ। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা দেবাশিস দাসের কথায়, “সীমিত ক্ষমতার মধ্যেও যতটা সম্ভব আয়োজনের চেষ্টা করি।”
বিবিগঞ্জ সর্বজনীন জগদ্ধাত্রীর পুজোর এ বার ২২ তম বর্ষ। ইতিমধ্যে এলাকা নানা রঙের আলোয় সেজে উঠেছে। আলোর নানা কারিকুরিও চোখ টানছে। পুজোর অন্যতম আকর্ষণ জীবন্ত বারোয়ারি। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা তথা এলাকার কাউন্সিলর শম্ভুনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “জীবন্ত বারোয়ারি গ্রামীণ সংস্কৃতিরই অঙ্গ।” কর্ণেলগোলার নবীন-প্রবীণ সম্প্রদায়ের পুজোর এ বার দ্বাদশ বর্ষ। এখানেও নানা সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক কর্মসূচি রয়েছে। অন্যতম উদ্যোক্তা শঙ্কর মাঝি বলেন, “সকলের সহযোগিতা ছাড়া এ ভাবে পুজোর আয়োজন সম্ভব হত না।”
মহাতাবপুর দক্ষিণপাড়ার সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজোর এ বার তৃতীয় বর্ষ। এখানেও নানা সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। রাঙামাটি উড়ালপুলের কাছে অগ্রগামী সেবা সংস্থার পুজোর এ বার পঞ্চম বর্ষ। ইতিমধ্যে ঝলমলে আলোয় সেজে উঠেছে পুরো এলাকা। সিপাইবাজার গির্জাপাড়ার খ্রিস্টান-হিন্দু-মহামেডান অ্যাসোসিয়েশনের পুজো ঘিরেও উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। এই পুজোর সঙ্গে জড়িয়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির সুর। মেদিনীপুর শহরে কয়েক’টি বাড়িতেও জগদ্ধাত্রী পুজো হয়। দিন বদলেছে। তবে বাড়ির পুজোর আকর্ষণ এতটুকুও কমেনি। বছর দশ-বারো আগেও শহরে হাতেগোনা কয়েক’টিই সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজো হত। এখন অবশ্য শহর মেদিনীপুরে পঞ্চাশটিরও বেশি সর্বজনীন জগদ্ধাত্রী পুজো হয়। আগে পুজো হত একদিনে, নবমীতে। এখন অনেক পুজোই হয় চার দিন ধরে। মেদিনীপুরের (সদর) মহকুমাশাসক অমিতাভ দত্ত বলেন, “আশা করি, উৎসব নির্বিঘ্নেই হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy