চৌরঙ্গিতে দুই জাতীয় সড়কের সংযোগস্থলে আলো-আঁধারিতেই অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
পুজোর পরে মেদিনীপুর- খড়্গপুর, দুই শহরের মধ্যবর্তী চৌরঙ্গির সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের উদ্বোধন হতে পারে। এমকেডিএ সূত্রে খবর, সেই মতোই কাজ এগোচ্ছে।
এই এলাকায় স্বামী বিবেকানন্দের পূর্ণাবয়ব মূর্তি বসানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এমকেডিএ কর্তৃপক্ষ। মূর্তির চারপাশে আলো থাকবে। মেদিনীপুর- খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এমকেডিএ) চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি বলেন, “চৌরঙ্গির সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের কাজ চলছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়েছে। কাজ শেষ হয়ে গেলেই প্রকল্পের উদ্বোধন হবে। পুজোর পরে কাজ শেষ হওয়ার কথা।” তাঁর কথায়, “চৌরঙ্গিতে পর্যাপ্ত আলো দেওয়া হচ্ছে। এরফলে, রাতেও আর সমস্যা হবে না।”
পশ্চিম মেদিনীপুরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর মধ্যে চৌরঙ্গি অন্যতম। এই এলাকার উপর দিয়ে চলে গিয়েছে দু’টি জাতীয় সড়ক। ৬ এবং ৬০ নম্বর জাতীয় সড়ক। বস্তুত, জেলার উপর দিয়ে এই দু’টি জাতীয় সড়কই গিয়েছে। চৌরঙ্গিতে দু’টি জাতীয় সড়কের সংযোগ হয়েছে। ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কটি মেদিনীপুরের দিক থেকে চলে গিয়েছে খড়্গপুরের দিকে। ৬ নম্বর জাতীয় সড়কটি ডেবরার দিক থেকে চলে গিয়েছে ঝাড়গ্রামের দিকে। দুই শহরের মধ্যবর্তী এই এলাকাটি দুর্ঘটনাপ্রবণ। মাঝেমধ্যেই ছোট- বড় দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাণহানিও হয়। দিনের থেকে রাতের বেলায় বেশি দুর্ঘটনা ঘটে। এর অন্যতম কারণ চৌরঙ্গি ও তার আশপাশে পর্যাপ্ত আলো নেই। ফলে, পথচলতি মানুষও সমস্যায় পড়েন। সমস্যা নিয়ে এর আগে এমকেডিএ- তেও আলোচনা হয়। পরবর্তী সময় ওই এলাকার সৌন্দর্যায়নে উদ্যোগী হয় পর্ষদ। এলাকায় একটি আইল্যান্ড রয়েছে। আইল্যাণ্ডটি নতুন গাছ লাগিয়ে সাজানো হয়। নতুন আলো বসানোর কাজও শুরু হয়। ইতিমধ্যে এমকেডিএ কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন খড়্গপুর শহরের প্রবেশদ্বারে একটি তোরণ তৈরি করার। তোরণ মানে ওয়েলকাম গেট। পরে সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে চৌরঙ্গিতে স্বামী বিবেকানন্দের মূর্তি বসানোরও সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ।
বস্তুত, বছর কয়েক আগে মেদিনীপুর শহরের প্রবেশদ্বারেও কোনও তোরণ ছিল না। এখন অবশ্য ধর্মায় তোরণ রয়েছে। বছর খানেক আগে তোরণটির উদ্বোধন হয়। এটি তৈরি করেছে এমকেডিএ। পর্ষদের মতে, এর ফলে শহরের সৌন্দর্যায়ন হয়েছে। শহরের সৌন্দর্যায়নের লক্ষ্যে এমকেডিএ বেশ কিছু প্রকল্পের কাজ করেছে। এটি তারই অন্যতম। তোরণে মনীষীদের ছবি রয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুরের সদর শহর মেদিনীপুর। রেলশহর খড়্গপুরেরও গুরুত্ব কম নয়। এমকেডিএ- র চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি বলেন, “মেদিনীপুর শহরের প্রবেশদ্বারে আগে কোনও তোরণ ছিল না। মেদিনীপুরের থেকে অনেক ছোট শহরেও তোরণ রয়েছে। তাই ধর্মায় তোরণ তৈরির উদ্যোগ নিই। এ বার খড়্গপুর শহরের প্রবেশদ্বারেও তোরণ হবে। কাজ এগোচ্ছে। এরফলে, খড়্গপুর শহরের সৌন্দর্যায়নও হবে।” মেদিনীপুর- খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এমকেডিএ) গড়ে ওঠে ২০০৪ সালে। কংসাবতীর দুই তীরের দুই শহর এবং তার আশপাশের ১৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা নিয়ে গড়ে ওঠে এই পর্ষদ। রাজ্যে পালাবদলের পরপরই শহরের সৌন্দর্যায়নের উদ্যোগ নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ জন্য কয়েকটি পদক্ষেপ করা হয়। ত্রিফলা বাতি বসানো হয়। মেদিনীপুর- খড়্গপুর, দুই শহরেই ত্রিফলা বাতি বসানো হয়েছে। অবশ্য পরে দেখা যায়, কিছু বাতি খারাপ হয়ে পড়ে থাকে। কিছু বাতিতে আবার বিদ্যুত্ সংযোগ ছিন্ন হয়। দ্রুত মেরামত করা হয় না। পুর-কর্তৃপক্ষের হেলদোল থাকে না।
এর ফলে, প্রশ্নের মুখে পড়ে শহরের সৌন্দর্যায়নের উদ্দেশ্যও। চৌরঙ্গিতেও এই সমস্যা হবে না তো? এমকেডিএ- র চেয়ারম্যান মৃগেনবাবু বলেন, “এটা বলতে পারি, নজরদারিতে ফাঁকফোকর থাকবে না।” চৌরঙ্গি এলাকাটি মেদিনীপুর শহরের কিছু দূরে। তবে রেলশহর খড়্গপুরের একেবারে কাছেই। খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “চৌরঙ্গির সৌন্দর্যায়নে এমকেডিএ বেশ কিছু প্রকল্প নিয়েছে। গাছ লাগানো হয়েছে। আলো বসানো হচ্ছে। মূর্তি বসানো হবে। এমকেডিএ- র এই উদ্যোগে খড়্গপুরের মানুষ খুশি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy