মেদিনীপুরে মিছিল তৃণমূলপন্থী শিক্ষক সংগঠনের।—নিজস্ব চিত্র।
সারদা কাণ্ডে সিবিআই ইতিমধ্যে কয়েকজন তৃণমূল সাংসদ গ্রেফতার করেছে। সম্প্রতি গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী মদন মিত্রও। তৃণমূলের তরফে তার প্রতিবাদও শুরু হয়েছে। কলকাতায় পথে নেমেছেন একাংশ খেলোয়াড়। এ বার পথে নেমে সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে সুর চড়াল তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনগুলি। তাদের অভিযোগ, সিবিআইকে রাজনৈতিক উদ্দেশে ব্যবহার করছে বিজেপি। অন্যায় ভাবে তৃণমূলের মন্ত্রী-সাংসদদের গ্রেফতার করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার মেদিনীপুরে মিছিল-জমায়েতের কর্মসূচি ছিল তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনগুলোর। পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি আয়োজিত মিছিল থেকে স্লোগান ওঠে ‘বিজেপি আর সিবিআই, চোরে চোরে মাসতুতো ভাই!’ মিছিলে বেশ কয়েকজন কলেজ শিক্ষকও পা মেলান। কাজের দিনে স্কুল শিক্ষকদের নিয়ে কর্মসূচি হওয়ায় বিভিন্ন মহলে কিছু প্রশ্ন ওঠে। শিক্ষক কম থাকায় কিছু স্কুলে পড়াশোনা ব্যাহত হয় বলেও অভিযোগ। তৃণমূলের শিক্ষক নেতৃত্বের অবশ্য দাবি, যে সব শিক্ষকেরা এদিন কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন, তাঁরা ছুটি নিয়েই এসেছেন।
এ দিন দুপুরে শহরের গাঁধীমূর্তির পাদদেশের সামনে থেকে মিছিল শুরু হয়। মিছিল শেষে এখানেই সভা হয়। ছিলেন তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায়, জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোত্ ঘোষ, নির্মল ঘোষ প্রমুখ। গাঁধীমূর্তির পাদদেশে শহরের গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোর একটি। এখানে রাস্তার একপাশে সমাবেশ চলায় এদিন যান চলাচলও ব্যাহত হয়। অবশ্য যান চলাচল স্বাভাবিক রাখতে বাড়তি পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। সভায় দীনেনবাবু বলেন, “বিজেপি ধর্মের নামে বিভাজনের চেষ্টা করছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একের পর এক চিটফান্ডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন, তাই ওদের এত রাগ! কংগ্রেস, সিপিএম, বিজেপি সব ধান্দাবাজ! সকলে মিলে শান্ত বাংলাকে অশান্ত করতে চাইছে!”
এ ভাবে পথে নেমে প্রতিবাদ কেন? তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির জেলা সভাপতি চন্দন সাহা বলেন, “বিজেপি রাজনৈতিক উদ্দেশে সিবিআইকে ব্যবহার করছে! আমাদের প্রতিবাদ এখানেই!” তাঁর কথায়, “কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে লাগাতার কুত্সা ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে এবং রাজ্যে শান্তি-শৃঙ্খলা-সম্প্রীতি-উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতেই আমরা পথে নেমেছি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে অপমান করা মানে বাংলার সাড়ে ন’কোটি মানুষকে অপমান করা।”
এই কর্মসূচিকে অবশ্য কটাক্ষ করতে ছাড়ছে না বিরোধীরা। বিজেপির জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “একের পর এক চোর ধরা পড়ছে, সেটা তৃণমূল মেনে নিতে পারছে না। সঙ্গে শিক্ষিত লোকজন আছে এটা বোঝানোর জন্যই তৃণমূল এদিন শিক্ষকদের পথে নামিয়েছে।” সিপিএমের শিক্ষক সংগঠন এবিটিএ-র জেলা সম্পাদক অশোক ঘোষ বলেন, “কী জন্য এই আন্দোলন? সিবিআই তো সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে তদন্ত করছে।” তাঁর মন্তব্য, “শিক্ষকদের সঙ্গে সবথেকে বেশি বঞ্চনা তো রাজ্য সরকারই করছে। ৪৯ শতাংশ ডিএ বাকি। সেই নিয়ে আন্দোলন নেই। যারা চুরি করছে, তাদের জন্য ওরা পথে নামছে। চুরিকে কেউ সমর্থন করে না কি!” অশোকবাবুর দাবি, “আন্দোলন করে শিক্ষকেরা যে সব অধিকার পেয়েছিল, রাজ্য সরকার তাকেই খর্ব করার চেষ্টা করছে। এই সংগঠনগুলো সরকারের ধামাধরা। ধান্দাবাজদের মানুষ চিনতে পারছেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy