তমলুক জেলা হাসপাতালে পরীক্ষা দিচ্ছে বৈশালী। ছবি: পার্থপ্রতিম দাস।
মাধ্যমিক পরীক্ষা দিতে পারলেন না চণ্ডীপুরে পথ দুর্ঘটনায় জখম ঋত্বিকা প্রধান। অপর জখম বৈশালী বেরা মঙ্গলবার তমলুক জেলা হাসপাতালে পরীক্ষা দিয়েছে।
চণ্ডীপুরের কালিকাখালি সারদেশ্বরী বালিকা বিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী সম্পর্কে আত্মীয় ঋত্বিকা ও বৈশালী এ বার মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। তাঁদের পরীক্ষা কেন্দ্র পড়েছে চণ্ডীপুরের কাণ্ডপশরা দেশপ্রাণ হাইস্কুলে। সোমবার অঙ্ক পরীক্ষা শেষে ঋত্বিকার বাবা রাজেশ প্রধান মোটরবাইকে করে তাঁদের দু’জনকে নিয়ে দিঘা-কলকাতা সড়ক ধরে চণ্ডীপুরে গ্রামে বাড়িতে ফিরছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, চণ্ডীপুর থানার অফিসের সামনে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি মোটরবাইকের সঙ্গে রাজেশবাবুর মোটরবাইকের মুখোমুখি ধাক্কা লাগে। গুরুতর আহত হয় ঋত্বিকা ও বৈশালী। রাজেশবাবু ও অন্য মোটরবাইকের চালকও আহত হন। স্থানীয় লোকেরা আহতদের উদ্ধার করে কাছেই চণ্ডীপুর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করে। গুরুতর আহত ঋত্বিকা ও বৈশালীকে তমলুকে পূর্ব মেদিনীপুরে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় ঋত্বিকাকে এ দিন রাতেই কলকাতায় স্থানান্তর করা হয়। প্রথমে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ঋত্বিকাকে। আহত দুই ছাত্রীর মাথায় আঘাত লেগেছে। শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় মঙ্গলবার জীবনবিজ্ঞান পরীক্ষা দিতে পারেনি ঋত্বিকা।
বৈশালী অবশ্য তমলুক জেলা হাসপাতালের বিছানায় বসেই মাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক অফিস ও মাধ্যমিক পরীক্ষা পরিচালন কমিটির উদ্যোগে এ দিন জেলা হাসপাতালের ‘ফিমেল সার্জিক্যাল বিভাগ’-র একটি ঘরে পরীক্ষা দেয় বৈশালী। এ দিন জেলা হাসপাতালে বৈশালীর পরীক্ষা দেওয়ার সময় পরিদর্শক হিসেবে ছিলেন তাঁর পরীক্ষাকেন্দ্র কাণ্ডপশরা দেশপ্রাণ হাইস্কুলের শিক্ষক চিত্তরঞ্জন সিংহ। জেলা হাসপাতালে এসেছিলেন জেলার সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক রবিকান্ত সিমলাই ও মাধ্যমিক পরিচালন কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক জয়ন্ত দাসও।
রবিকান্তবাবু বলেন, ‘‘আহত দুই পরীক্ষার্থী যাতে জীবনবিজ্ঞান পরীক্ষা দিতে পারে সে জন্য আমরা প্রস্তুতি নিয়েছিলাম । কিন্তু ঋত্বিকার শারীরিক অবস্থা খারাপ থাকায় আজ সে পরীক্ষা দিতে পারেনি। বৈশালী পরীক্ষা দিয়েছে।’’ এ দিন জেলা হাসপাতালে পরীক্ষা দেওয়ার সময় বাইরে অপেক্ষা করছিলেন বৈশালীর মা খুকু বেরা। তিনি বলেন, ‘‘মাধ্যমিক পরীক্ষার শেষ দিকে এসে এমন দুর্ঘটনা ঘটবে ভাবতে পারিনি। বৈশালী ও ঋত্বিকা একসঙ্গে পরীক্ষা দিচ্ছিল। দুর্ঘটনার পর মেয়ে আজ কষ্ট করে হলেও পরীক্ষা দিতে পারায় কিছুটা স্বস্তি পেয়েছি। কিন্তু ঋত্বিকা পরীক্ষা দিতে না পারায় কিছুটা খারাপ লাগছে।’’ তাঁর কথায়, ‘‘আমরা চাই আগে ওরা সুস্থ হয়ে উঠুক। আশা করি, ওর পরীক্ষা দেওয়ার জন্য সরকার কোনও ব্যবস্থা নেবে।’’
পরীক্ষা দেওয়ার পর এ দিন বিকেলে বৈশালী বলে, ‘‘পরীক্ষা ভাল হয়েছে। আগে যে টুকু প্রস্তুতি নিয়েছিলাম তাতেই পরীক্ষা দিয়েছি। আমি চাই ঋত্বিকা সুস্থ হয়ে ভাল করে পরীক্ষা দিক।’’ মঙ্গলবার মাধ্যমিক পরীক্ষা চলার মাঝে মহিষাদলের মধ্য হিংলি হাইস্কুলের ছাত্র সুরজিৎ মাইতি পেটের যন্ত্রণায় অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাঁকে প্রথমে মহিষাদলের বাসুলিয়া গ্রামীণ হাসপাতাল ও পরে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy