প্রতিবন্ধী ভোটারদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করছে প্রশাসন। সাহায্য করার জন্য বুথে থাকবেন অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবককরা। এমন কথাই জানিয়েছে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসন।
গত ২৫ জানুয়ারি জাতীয় ভোটার দিবসে ‘বেস্ট ইলেকটোরাল রোল ম্যানেজমেন্ট’ ও প্রতিবন্ধী ভোটারদের নিয়ে বিশেষ কাজের জন্য জাতীয় নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকে পুরস্কার পেয়েছিলেন জেলাশাসক। পুরস্কার পেয়েছিলেন রাষ্ট্রপতির হাত থেকে। জেলা প্রশাসনের দাবি ওই সময় দেশের মধ্যে মোট দশটি জেলা এবং পশ্চিমবঙ্গের মধ্যে একমাত্র পূর্ব মেদিনীপুর জেলা পুরস্কৃত হয়। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অভিজিৎ মৈত্র বলেন, “শারীরিক প্রতিবন্ধীদের জন্য আমরা বিশেষ ভাবে বুথ স্তরের আধিকারিকদের দিয়ে সমীক্ষা করেছিলাম। ২ নভেম্বর থেকে প্রতিবন্ধী ভোটার সপ্তাহও পালন করা হয়েছিল জেলা প্রশাসনের তরফে। ভোটারদের কাছ থেকে উঠে আসা নানা সমস্যার সমাধানে আমরা মানবিক ভূমিকা নিচ্ছি।” জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, “একেবারেই বিজ্ঞানসম্মতভাবে আমরা এই কাজ করছি। জেলা সমাজ কল্যাণ দফতর ও প্রতিবন্ধীদের নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংগঠনগুলিকে নিয়ে পরামর্শ করে রূপরেখা তৈরি করা হবে। নির্বাচন কমিশনের নিয়মের মধ্যে থেকেই প্রতিবন্ধী ভোটারদের চাহিদা পূরণ করতে হবে।” জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ওই পুরস্কার পাওয়ার পরে এই ধরণের ভোটারদের ভোটদান একশো শতাংশ নিশ্চিত করাটা তাঁদের কাছে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রশাসন তথা নির্বাচন কমিশনের এই ভূমিকায় অনেকাংশেই আশাবাদী হয়ে পড়েছেন ভোটার ও তাঁদের পরিবার। ভোটকেন্দ্রের অব্যবস্থায় অনেক সময়ই প্রতিবন্ধীদের বুথে নিয়ে আসেন না পরিবারের লোকজন। ফলে ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রেও নিরুৎসাহিত হয়ে পড়েন এই ভোটাররা। প্রশাসনিক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, স্পর্শকাতর ও অতি স্পর্শকাতর বুথে কিংবা যে বুথে ভোটার সংখ্যা বেশি সেখানে বুথমুখো হতেন না তাঁরা। সমীক্ষার সময়ে এই ভোটাররা দাবি করেছেন, আগে ভোট দেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয় না। লাইনে দাঁড়াতে বা মেঝেতে বসে থাকতে বাধ্য করা হয়। তা ছাড়া ভোট কেন্দ্রে ঢুকে ভোট দেওয়ার সময় পরিবারের কেউ পাশে থাকতে চাইলেও তা দেওয়া হয় না। বয়স্কদের ক্ষেত্রেও এই সমস্যা হয়।
অনেকে আবার দাবি করেছিলেন, বাড়ি থেকে কমিশনের গাড়ি করে বুথে তাঁদের যাওয়া আসার ব্যবস্থাও যেন করা হয়। কিন্তু তা সম্ভব নয় বলেই জানিয়েছেন জেলাশাসক। তিনি বলেন, “বুথে ওঠার ঢালগুলি আরও ভালো করা হচ্ছে। প্রতিবন্ধী ভোটারদের অপেক্ষা করার জন্য নির্দিষ্ট কক্ষ বা জায়গা, হুইল চেয়ারের বন্দোবস্ত করা হবে। এমনকী তাঁদের সহযোগিতা করার জন্য অরাজনৈতিক স্বেচ্ছাসেবকও রাখা হবে। সেই সঙ্গে সব প্রতিবন্ধী ভোটারদের ভোটার তালিকায় নাম থাকাও নিশ্চিত করা হচ্ছে।” মঙ্গলবারই নিজের দফতরে এই বিষয় নিয়ে সমাজকল্যাণ দফতর ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিকে নিয়ে বৈঠকে বসছেন জেলাশাসক। তাঁর আশা, ১৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে তাঁরা তথ্য পেয়ে যাবেন কোন বুথে কী ধরণের প্রতিবন্ধী কত জন রয়েছেন। তা দেখেই প্রতিটি বুথে তাঁরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy