Advertisement
১৬ এপ্রিল ২০২৪

বাড়তি পুলিশ দিঘা-মন্দারমণিতে

সপ্তাহান্তে ছুটি কাটাতে বাঙালির কাছে দিঘা বরাবরই প্রিয়। তার উপর আবার আজ বড়দিন। তাই আগে থেকে অনেকেই পরিকল্পনা করে ফেলেছিলেন সৈকতে ধারে সান্টার সঙ্গে আনন্দে মাতবেন। সেই পরিকল্পনাকে বাস্তব রূপ দিতে বুধবার সকাল থেকেই দিঘায় ভিড় জমল পর্যটকের। আর বড়দিনের আনন্দে পর্যটকের ঢল দেখে হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ীদের মুখেও।

ভিড়ে জমজমাট দিঘা। সোহম গুহর তোলা ছবি।

ভিড়ে জমজমাট দিঘা। সোহম গুহর তোলা ছবি।

সুব্রত গুহ
কাঁথি শেষ আপডেট: ২৫ ডিসেম্বর ২০১৪ ০০:২১
Share: Save:

সপ্তাহান্তে ছুটি কাটাতে বাঙালির কাছে দিঘা বরাবরই প্রিয়। তার উপর আবার আজ বড়দিন। তাই আগে থেকে অনেকেই পরিকল্পনা করে ফেলেছিলেন সৈকতে ধারে সান্টার সঙ্গে আনন্দে মাতবেন। সেই পরিকল্পনাকে বাস্তব রূপ দিতে বুধবার সকাল থেকেই দিঘায় ভিড় জমল পর্যটকের। আর বড়দিনের আনন্দে পর্যটকের ঢল দেখে হাসি ফুটেছে ব্যবসায়ীদের মুখেও।

রাজ্যের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পযর্টকদের পছন্দের বিচারে দিঘা ও মন্দারমণি অন্যতম প্রিয় জায়গা বলেই গণ্য হয়েছে। এ বারও তার কোনও ব্যতিক্রম ঘটেনি। বুধবার সারা দিন ধরেই হরেক কিসিমের গাড়ি ঘুরপাক খেয়েছে শহরে। তাদের অধিকাংশেরই অভিমুখ ছিল দিঘা, মন্দারমণি, তাজপুরের দিকে। দিঘাও পর্যটকদের স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। সমুদ্রশহর সেজে উঠেছে নানা রঙের আলোকমালায়। ওল্ড দিঘা ও নিউ দিঘার বিভিন্ন হোটেল ও লজগুলিকে সাজিয়ে তোলা হয়েছে আলোয়। এছাড়াও বেশ কিছু হোটেল বড়দিন উপলক্ষে সান্টাক্লজ ও ক্রিসমাস ট্রি দিয়ে সাজানো হয়েছে। অনেক হোটেলে আয়োজন করা হয়েছে বড়দিন উপলক্ষে নানা অনুষ্ঠানের। দিঘার একটি হোটেল সূত্রে জানা গিয়েছে, তারা পর্যটকদের জন্য বিনামূল্যে নানা জায়গা ঘুরে দেখানোর ব্যবস্থা করেছে।

কেমন ভিড় হয়েছে দিঘায়?

দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের অন্যতম যুগ্ম সম্পাদক বিপ্রদাস চক্রবর্তী জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই দিঘার হোটেল ও লজগুলির প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ আগে থেকেই পযর্টকরা বুক করে রেখেছেন। তবে বাকি ঘরগুলোও যে ফাঁকা পড়ে থাকবে না সে বিষয়ে আশাবাদী তিনি। তবে শুধু হোটেল-লজই নয়, বড়দিন উপলক্ষে প্রচুর মানুষ দল বেঁধে বাস, পিক-আপ ভ্যান এমনকী লরি নিয়ে দিঘায় চড়ুইভাতি বা পিকনিক করতে দিঘায় আসেন। নিউ দিঘার একটি হোটেলের মালিক সতীনাথ পাল বলেন, “আমার হোটের ৩৬টি ঘরের সবক’টি ভর্তি। আমরা আমাদের হোটেলের অতিথিদের দিঘা স্টেশন থেকে হোটেলে আনা ও ফেরার সময় স্টেশনে গাড়ি করে পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থাও করেছি।”

প্রশাসনের অনুমান, বড়দিনে দিঘায় প্রায় লক্ষাধিক মানুষের ভিড় হবে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমুদ্রস্নানের সময় পর্যটকরা যাতে নিরাপদে স্নান করতে পারেন ও কোনও বিপদ না হয় তার জন্য সমুদ্রে স্পিড বোট নিয়ে নজরদারিতে থাকবেন নুলিয়ারা। এছাড়াও রাতে জোর কদমে চলবে পুলিশি টহল। সৈকত শহর দিঘা-সহ চারটি সৈকত পযর্টনকেন্দ্রে পুলিশ বাহিনী ছাড়াও সাদা পোশাকের পুলিশ ও মহিলা পুলিশ মোতায়েন করা হচ্ছে। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পষর্দের পক্ষ থেকেও পযর্টকদের জন্য সহায়তা বুথ খোলা হচ্ছে। কাঁথির এসডিপিও ইন্দ্রজিত্‌ বসু বলেন, “জেলার পুলিশ সুপার সুকেশ জৈনের নির্দেশে পর্যাপ্ত পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। মন্দারমণিতেও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ নিরাপত্তার নানা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”

অন্য দিকে, দিঘা-কলকাতা সড়কের রামনগরের চাউলখোলা থেকে মন্দারমণি যাওয়ার রাস্তায় দাদনপাত্রবাড় পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার রাস্তা সম্প্রতি সম্প্রসারণের কাজ চলছে। পূর্ত ও সড়ক দফতরের পক্ষ থেকে শুরু হওয়া এই কাজের জেরে বড়দিনে মন্দারমণিতে আসার পথে যানযটের আশঙ্কা রয়েছে পর্যটকদের। পর্যটকদের হয়রানির বিষয়ে তাই কিছুটা ক্ষোভের আঁচ রামনগর-২ পঞ্চায়েত সমিতির ভূমি কর্মাধ্যক্ষ মানস দাস, মন্দারমণি হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক দেবদুলাল দাসমহাপাত্রের গলাতেও। তাঁদের কথায়, “বছরের এই সময় বহু পর্যটক দিঘা-মন্দারমণি আসেন। এই সময় এমন অসুবিধা হলে পর্যটকদের ভোগান্তি বাড়বে।”

তবে এমন সমস্যাকে তেমন আমলই দিতে রাজি নন অনেক পর্যটক। বর্ধমান থেকে ছেলে-স্বামীকে নিয়ে দিঘায় ঘুরতে এসেছেন মৌমিতা দে। তাঁর কথায়, “ছেলের পরীক্ষা শেষ। তাই নতুন ক্লাসে ওঠার আগে এই দিঘায় ঘুরতে নিয়ে আসাই, আমার ওকে বড়দিনের উপহার।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

subrata guha kanthi
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE