Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মাওবাদী যোগের অভিযোগ, সভা ভন্ডুল পুলিশের

যাদবপুরের ছাত্র আন্দোলনে মাওবাদী যোগের অভিযোগ করেছে শাসক তৃণমূল। এ বার সেই যাদবপুর-কাণ্ডের প্রতিবাদে ডাকা বন্দি মুক্তি কমিটির কনভেনশনে চড়াও হল পুলিশ। পুলিশের দাবি, ওই কনভেনশনেও রয়েছে মাওবাদীরা। রবিবার মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্র নিলয়ে রাজনৈতিক বন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং যাদবপুরে ছাত্র নিগ্রহে অভিযুক্ত পুলিশকর্মী ও আধিকারিকদের শাস্তির দাবিতে কনভেনশনের আয়োজন করেছিল বন্দি মুক্তি কমিটির মেদিনীপুর শাখা।

সভা ভন্ডুল হওয়ার পরে খুলে নেওয়া হচ্ছে ব্যানার। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

সভা ভন্ডুল হওয়ার পরে খুলে নেওয়া হচ্ছে ব্যানার। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল

নিজস্ব সংবাদদাতা
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০১:২১
Share: Save:

যাদবপুরের ছাত্র আন্দোলনে মাওবাদী যোগের অভিযোগ করেছে শাসক তৃণমূল। এ বার সেই যাদবপুর-কাণ্ডের প্রতিবাদে ডাকা বন্দি মুক্তি কমিটির কনভেনশনে চড়াও হল পুলিশ। পুলিশের দাবি, ওই কনভেনশনেও রয়েছে মাওবাদীরা।

রবিবার মেদিনীপুর শহরের রবীন্দ্র নিলয়ে রাজনৈতিক বন্দিদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং যাদবপুরে ছাত্র নিগ্রহে অভিযুক্ত পুলিশকর্মী ও আধিকারিকদের শাস্তির দাবিতে কনভেনশনের আয়োজন করেছিল বন্দি মুক্তি কমিটির মেদিনীপুর শাখা। আচমকা সেখানে কোতয়ালি থানার আইসি, ডিএসপি (অপারেশন) সৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়, ডিএসপি (প্রশাসন) মনোরঞ্জন ঘোষের নেতৃত্বে হাজির হয়ে যায় সাদা পোশাকের পুলিশ। অভিযোগ, তাঁরা কনভেনশনে হাজির হওয়া সকলের ছবি তুলতে শুরু করে। সভায় মাওবাদী রয়েছে বলে চেঁচামেচিও করতে থাকে। সভায় থাকা অশোকজীবন ঘোষকে থানায় দেখা করতে বলা হয়। এ সবের জেরে ভন্ডুল হয়ে যায় ওই কনভেনশন।

এই ঘটনায় স্তম্ভিত কমিটির রাজ্য সম্পাদক ছোটন দাস বলেন, “রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করলে বামফ্রন্ট সরকারের পুলিশও আমাদের লাঠিপেটা করে ধরে নিয়ে যেত। কিন্তু কোনও সভাকক্ষে সভা করলে সেখানে ঢুকে এমন অসভ্যতা করেনি। কিন্তু এ দিন পুলিশ যা করল তাতে আমরা অশনি শঙ্কেত দেখতে পাচ্ছি।” অশোকজীবনবাবু বলেন, “তখন সভায় রাজ্য সম্পাদক ছোটন দাসের বক্তব্য চলছে। আমি পুলিশকে বললাম, বক্তব্য শেষ হোক, তারপরেই থানায় যাব। কিন্তু ওঁরা তখনই যাওয়ার জন্য চাপ দিতে থাকেন।” ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে কমিটির সদস্যরা পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনার কাছে যান। জেলাশাসক বাংলোতে না থাকায় কমিটির পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ জানানো হয়। তারপরই অশোকজীবন ঘোষকে রাত পর্যন্ত থানায় আটকে রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।

আগেও ‘মাওবাদী’ অভিযোগে পুলিশি হেনস্থার শিকার হন শিলাদিত্য চৌধুরী। একটি সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে মুখ্যমন্ত্রীর ‘কার্টুন’ শেয়ার করায় যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক অম্বিকেশ মহাপাত্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করে পুলিশ। বন্দি মুক্তি কমিটির সদস্য দীপক বসু বলেন, “শাসক দল এখন সবেতেই ‘মাওবাদী’ জুজু দেখছে। তাই এ দিনও মাওবাদীরা রয়েছে অছিলায় পুলিশ আমাদের সভা ভন্ডুুল করল।”

সভা ভন্ডুল করার অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ পুলিশ। জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “সিপিআই (মাওবাদী) রবিবার তাঁদের দশম বর্ষ পূর্তি পালনের কথা আগেই ঘোষণা করেছিল। সেজন্য আগে থেকেই মাওবাদী অধ্যুষিত এলাকায় সতর্কবার্তা জারি ছিল। পুলিশকে না জানিয়ে এ দিন অশোকজীবন ঘোষ কয়েকজন মাওবাদীকে নিয়ে সভা করছিল। তাই খবর পেয়ে পুলিশ সেখানে যায়।” মাওবাদীদের নিয়ে সভা করার খবর পেলেও কাউকে গ্রেফতার করা হল না কেন? ভারতী ঘোষ বলেন, “অশোকজীবন ঘোষকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তদন্ত চলছে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE