মুখ্যমন্ত্রীর জঙ্গলমহল সফরের আগে লালগড়ের নেতাই-সহ আশেপাশের এলাকায় রেশনে নিম্ন মানের আটা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, ওই সমস্ত প্যাকেটে আটার পরিবর্তে নিম্নমানের চালের গুঁড়ি রয়েছে। এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে প্রশাসন। বিষয়টিকে হাতিয়ার করে আসরে নেমে পড়েছেন বিরোধীরা।
চলতি সপ্তাহ থেকে রেশনে অন্ত্যোদয় যোজনায় গমের পরিবর্তে আটার প্যাকেট দেওয়া হচ্ছে। প্যাকেট পিছু দাম দেড় টাকা। বিপিএল রেশন গ্রাহকরা অবশ্য আগে থেকে রেশনে পাঁচ টাকা দামে সাড়ে সাতশো গ্রাম আটার প্যাকেট পেতেন। চলতি সপ্তাহ থেকে বিপিএল গ্রাহকরা ২ টাকা ৬৩ পয়সা দামে সাড়ে সাতশো গ্রাম আটার প্যাকেট পাচ্ছেন।
নতুন দামে রেশনে আটার প্যাকেট পাওয়ার পরে লালগড়, বেলপাহাড়ি ও সাঁকরাইল ব্লকের বেশ কিছু এলাকায় আটার মান নিয়ে অভিযোগ করেন গ্রাহকরা। দেখা যায়, কিছু প্যাকেটে দুর্গন্ধ যুক্ত চালগুঁড়ি রয়েছে। কোনও প্যাকেটে আবার আটার সঙ্গে চাল গুঁড়ি মেশানো রয়েছে। লালগড়ের নেতাই গ্রামের বাসিন্দা অঞ্জলি রায়, মঞ্জু রানা-রা বলেন, “রুটি করতে গিয়ে আটার প্যাকেট খুলে দেখি চালগুঁড়ি দেওয়া হয়েছে।” নেতাইয়ের রেশন ডিলার উদয়শঙ্কর রায় বলেন, “এ সপ্তাহে অন্ত্যোদয় ও বিপিএল গ্রাহকদের আটার প্যাকেট দেওয়া শুরু করেছিলাম। কিন্তু রবিবার কিছু গ্রাহক এসে আটার মান ভাল নয় বলে অভিযোগ করেন।”
জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দফতর সূত্রের খবর, মোট পাঁচটি আটা প্রস্তুতকারী সংস্থাকে ঝাড়গ্রাম মহকুমায় ওই আটা সরবরাহের বরাত দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে চারটি সংস্থা ঝাড়গ্রামের ও একটি সংস্থা খড়্গপুরের। ঝাড়গ্রামের একটি আটা প্রস্তুতকারক সংস্থার সরবরাহ করা আটার প্যাকেট নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। ওই সংস্থার আটা লালগড়, বেলপাহাড়ি ও সাঁকরাইল ব্লকের কয়েকটি এলাকায় রেশন ডিলারদের কাছে গিয়েছিল। অভিযোগ পাওয়ার পরে তড়িঘড়ি ওই সংস্থার আটার প্যাকেট দেওয়া বন্ধ রাখা হয়েছে।
পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা খাদ্য নিয়ামক পার্থপ্রতিম রায় বলেন, “ওই আটার নমুনা কলকাতায় কোয়ালিটি কন্ট্রোল টেস্টে পাঠানো হবে। কেন এমন হল খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।”
কংগ্রেসের ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুব্রত ভট্টাচার্য বলেন, “এমন আটা গরুও খাচ্ছে না। জঙ্গলমহলের জংলি মানুষদের এই সরকার কী চোখে দেখেন সেটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে।” বিজেপি-র ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী বলেন, “পুরোটাই লোক দেখানো উন্নয়ন হচ্ছে। আমরা ওই আটার প্যাকেট নিয়ে খাদ্য দফতরে স্মারকলিপি দেব।” তৃণমূল প্রভাবিত পশ্চিমবঙ্গ এমআর ডিলার জাতীয়তাবাদী সংগঠনের রাজ্য সভাপতি কাঞ্চন খান বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী জঙ্গলমহলের প্রতিটি মানুষের কাছে খাদ্য পৌঁছে দিতে বদ্ধপরিকর। কিন্তু এক শ্রেণীর আধিকারিকের গাফিলতির জন্য এমন অস্বস্তিকর পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। বিরোধীরা তার সুযোগ নিচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy