Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

৩ কর্মীকে বহিষ্কার, উত্তাল রেলশহর

রেল কারখানার তিন কর্মীকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত ঘিরে আলোড়ন পড়েছে রেলশহরে। ওই তিন কর্মীকে কাজে ফেরানোর দাবিতে শনিবার থেকে কর্মবিরতি শুরু হয়েছে খড়্গপুর রেল কারখানার ডিজেল শপে। এই ‘টুল ডাউন’ কর্মসূচির জেরে এ দিন ডিজেল শপে কোনও কাজই হয়নি।

অচলাবস্থা: রেল কারখানার ডিজেল শপে কর্মীদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

অচলাবস্থা: রেল কারখানার ডিজেল শপে কর্মীদের বিক্ষোভ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২১ মে ২০১৭ ০২:২১
Share: Save:

রেল কারখানার তিন কর্মীকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত ঘিরে আলোড়ন পড়েছে রেলশহরে। ওই তিন কর্মীকে কাজে ফেরানোর দাবিতে শনিবার থেকে কর্মবিরতি শুরু হয়েছে খড়্গপুর রেল কারখানার ডিজেল শপে। এই ‘টুল ডাউন’ কর্মসূচির জেরে এ দিন ডিজেল শপে কোনও কাজই হয়নি।

ক্যান্টিনে নিম্নমানের খাবার, ঠিক সময়ে খাবার না দেওয়া-সহ নানা অভিযোগে গত ১৪ মে ডিজেল শপের ডেপুটি চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান কর্মীরা। পুরোভাগে ছিলেন ডিজেল শপের তিন কর্মী বাদল অধিকারী, কৌশিক সরকার ও সেলিম আখতার। সে দিন রেল সুরক্ষা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভরত কর্মীদের হাতাহাতি হয়েছিল। রেল সুরক্ষা বাহিনীর তরফে খড়্গপুর টাউন থানায় পাঁচ কর্মীর নামে অভিযোগ জানানো হয়। তারপর রেল কারখানার চিফ ওয়ার্কস ম্যানেজার (সিডব্লিউএম) কমিটি গড়ে তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্তের পরে শুক্রবার বহিষ্কার করা হয় ওই তিন কর্মীকে।

দক্ষিণ পূর্ব রেলে খড়্গপুরেই একমাত্র রেলের কারখানা রয়েছে। এখানে রেলের ইঞ্জিন থেকে কামরা মেরামতির যাবতীয় কাজ হয়। এখানে তিন কর্মীর চাকরি থেকে বহিষ্কার নজিরবিহীন। এর প্রতিবাদে সরব হয়েছে রেলের মেনস্‌ ইউনিয়ন, মেনস্‌ কংগ্রেস, রেল কারখানা মজদুর সঙ্ঘ-সহ প্রতিটি কর্মী সংগঠন। সকলেরই দাবি, এই সিদ্ধান্ত অগণতান্ত্রিক। তাই বহিষ্কৃত তিনজনকে কাজে ফেরানোর পাশাপাশি রেল আধিকারিকদের শাস্তির দাবিও তুলেছে রেলকর্মী সংগঠনগুলি। রেলের মেনস্‌ কংগ্রেসের কারখানার আহ্বায়ক কোটেশ্বর নায়ডু বলেন, “সব সংগঠন মিলে বৈঠক করেছি। সিডব্লিউএমের সঙ্গেও কথা বলেছি। ওঁদের কাজে না ফেরালে বড়সড় আন্দোলন হবে।” রেলের মেনস ইউনিয়নের অতিরিক্ত সাধারণ সম্পাদক অজিত ঘোষালেরও হুঁশিয়ারি, “এখন ডিজেল শপের কর্মীরা একজোট হয়ে কর্মবিরতি করছেন। দাবিপূরণ না হলে রেল কারখানা জুড়ে কর্মবিরতি হবে।”

রেল কারখানায় তৃণমূলের কোনও শ্রমিক সংগঠন নেই। তবে এ দিন বিকেলে কারখানার গেটের বাইরে একাংশ রেলকর্মীকে নিয়ে বৈঠক করে শহরের তৃণমূল নেতারা। শহর তৃণমূলের সভাপতি প্রদীপ সরকার বলেন, “ওই রেলকর্মীরা শহরের বাসিন্দা। আমরা ওঁদের পাশে আছি।”

কর্তৃপক্ষের অবশ্য বক্তব্য, তদন্তের পরে নিয়ম মেনেই ওই তিনজনকে কাজ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক সঞ্জয় ঘোষ বলেন, “কারখানায় নৈরাজ্য সৃষ্টির জন্য রেলের আইন মেনে ওই তিন কর্মীকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আর এ দিন যাঁরা কর্মস্থলে উপস্থিত থেকেও কাজ না করে আন্দোলন করেছেন, রেলের আইন মেনে তাঁদের বিরুদ্ধেও পদক্ষেপ করা হবে।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE