Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বয়কটের নালিশ, স্মারকলিপি

গ্রামে একঘরে করে রাখার অভিযোগে আগেই জেলাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নারায়ণগড়ের দশরুই গ্রামের দলিত সম্প্রদায়ের একাংশ বাসিন্দা। তারপরেও সমস্যা না মেটায় এ বার বয়কটের শিকার দলিত পরিবারের লোকেদের নিয়ে শুক্রবার বিডিও ও নারায়ণগড় থানায় স্মারকলিপি জমা দিলেন সারা ভারত মতুয়া সঙ্ঘের প্রতিনিধিরা।

দাবি: নারায়ণগড়ে স্মারকলিপি প্রদান। নিজস্ব চিত্র

দাবি: নারায়ণগড়ে স্মারকলিপি প্রদান। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ২৯ এপ্রিল ২০১৭ ০২:১৩
Share: Save:

গ্রামে একঘরে করে রাখার অভিযোগে আগেই জেলাশাসকের দ্বারস্থ হয়েছিলেন নারায়ণগড়ের দশরুই গ্রামের দলিত সম্প্রদায়ের একাংশ বাসিন্দা। তারপরেও সমস্যা না মেটায় এ বার বয়কটের শিকার দলিত পরিবারের লোকেদের নিয়ে শুক্রবার বিডিও ও নারায়ণগড় থানায় স্মারকলিপি জমা দিলেন সারা ভারত মতুয়া সঙ্ঘের প্রতিনিধিরা। তাঁদের সঙ্গে ছিলেন পূর্ব মেদিনীপুর ও পুরুলিয়ার তফসিলি জাতি ও উপজাতি সংগঠনের সদস্যরাও।

মতুয়া সঙ্ঘের সম্পাদক সুকেশ চৌধুরী বলেন, “কয়েকটি দলিত পরিবারকে গ্রামের কয়েকজন সামাজিকভাবে বয়কট করে রেখেছে। প্রশাসন বলছে, সমস্যা মিটে গিয়েছে। যদিও এখনও ওই পরিবারের সদস্যেরা রাস্তা দিয়ে গেলেই কটূক্তি করা হচ্ছে। তাই আমরা ওদের পাশে দাঁড়িয়েছি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘স্থানীয় প্রশাসনকে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে বলছি। এরপরেও কাজ না হলে আমরা রাজ্যপালের কাছে যাব।”

কুশবসান গ্রাম পঞ্চায়েতের দশরুই গ্রামে দলিত পরিবারের লোকেদের বয়কট করে রাখার অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সুদীপ সরকার। তিনি বলেন, “ওই গ্রামে জাত-পাত নিয়ে সামাজিক বয়কটের অভিযোগ ঠিক নয়। আমি নিজে ওই গ্রামে গিয়ে দেখেছি, সকলে গ্রামে ঘোরাফেরা করছে, জলও পাচ্ছে।’’ মহকুমাশাসকের দাবি, ‘‘ওদের বেশ কয়েকটি পরিবারের এ নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। অথচ একাংশ পরিবার এমন অভিযোগ তুলছে। নিজেদের মধ্যে বিরোধ থেকেই ওঁরা অকারণে পরিস্থিতি ঘোরালো করছে।”

গত বছর শীতলা পুজোকে কেন্দ্র করেই গোলমালের সূত্রপাত। পুজোর প্রসাদ বিতরণের সময়ে গ্রামের বাসিন্দা দলিত পরিবারের খোকন রুইদাসের দশ বছরের ছেলে শুভম জল দিতে গেলে গ্রামের মাতব্বরেরা বাধা দেয় বলে অভিযোগ। এ নিয়ে গ্রামে উত্তেজনা ছিলই। এ বছর শীতলা পুজো নিয়ে ফের অশান্তি চরমে পৌঁছয়। গ্রামের ১৪টি দলিত পরিবারকে পুজোয় যোগ দিতে দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। যদিও ওই গ্রামেরই বাসিন্দা আরও ১২টি দলিত পরিবারের লোকেরা পুজোয় যোগ দেয়। বয়কটের অভিযোগ নিয়ে গত মার্চ মাসে পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনার কাছে স্মারকলিপি জমা দেয় দশরুম গ্রামের একাংশ বাসিন্দা। তারপর এলাকায় গিয়ে পরিস্থিতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন মহকুমাশাসক ও বিডিও। দশরুই গ্রামের বাসিন্দা বিজয় দাস, খোকন রুইদাস, খগেন কারিকরদের অভিযোগ, প্রশাসন বললেও ওই গ্রামে এখনও পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি। এখনও দশরুই গ্রামে ঢোকা-বেরোনোর পথে তাঁদের নানা কটূক্তির মুখে পড়তে হচ্ছে। সমস্যা সমাধানে প্রশাসন উপযুক্ত পদক্ষেপ না করায় মতুযা সঙ্ঘের সঙ্গে তাঁরা যোগাযোগ করেন। এরপরেই সমাজকর্মী রবীন্দ্রনাথ সিংহের উদ্যোগে শুক্রবার বিডিও ও পুলিশের কাছে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

All India Matua Mahasangha Dalit
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE