প্রতীকী ছবি।
অবৈধ বাজি কারবার বন্ধের দাবিতে ফের সরব হলেন শহরবাসী। সোমবার মেদিনীপুরের বিবিগঞ্জের ধুনুরি বস্তির বাসিন্দারা এই দাবিতে জেলাশাসক এবং জেলা পুলিশ সুপারের দফতরে স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা আনোয়ার খালি খান বলেন, “অবৈধ বাজি কারবার বন্ধের দাবিতে আমাদের এই স্মারকলিপি। আশা করব, পুলিশ- প্রশাসন এ বার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে। আর অন্তত এলাকায় এই কারবার চলবে না।” সামসাদ হোসেনের কথায়, “বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছি আমরা। না হলে পরবর্তী সময় অনশন-আন্দোলন হবে।”
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শহরের এই এলাকায় শেখ শাহজাদার বাড়িতে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। বেআইনি ভাবে বাজি তৈরির সময়ই বিস্ফোরণ ঘটে বলে অভিযোগ। দুই মহিলা ঝলসে মারা যান। ঘটনার পরে শাহজাদাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বাজি তৈরির সময় বিস্ফোরণে দুই মহিলার মৃত্যুর পরেও পুলিশের দাবি, ওই ঘরে বাজি মজুত ছিল। তবে বাজি তৈরি হত না। স্থানীয়দের অবশ্য দাবি, এক- দু’বছর নয়, বহু বছর ধরেই এখানে বাজি তৈরি হয়ে আসছে। বেশ কয়েকবার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। দু’বছর আগেও একই ঘটনা ঘটে। ঠকেও শিক্ষা হয়নি পুলিশের। বেআইনি বাজি কারবার বন্ধে পুলিশ কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি। আনোয়ার বলছিলেন, “বহু দিন ধরে এখানে বেআইনি ভাবে বাজি তৈরি হয়ে আসছে। এর আগে বহুবার এখানে দুর্ঘটনা ঘটেছে। সব জেনেও পুলিশ চুপ থাকে। বেআইনি বাজির কারবার বন্ধ করতে পুলিশ ব্যবস্থাই নেয় না।” গত শনিবার দুপুরে এই এলাকায় পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভও হয়। বিক্ষোভ দেখান এলাকারই বেশ কয়েকজন। স্থানীয়দের অভিযোগ, পুলিশ রাতের অন্ধকারে মজুত বাজি সরিয়ে দিয়েছে।
শুধু শহর নয়, মেদিনীপুর গ্রামীণের একাধিক এলাকায় রমরমিয়ে বেআইনি বাজি তৈরির কারখানা চলে বলে অভিযোগ। সব জেনেও পুলিশ অবশ্য হাত- পা গুটিয়ে বসে থাকে। সেই ভাবে তল্লাশি- অভিযান হয় না। মেদিনীপুর গ্রামীণের এক বাজি প্রস্তুতকারক বলছিলেন, “উৎসবের মরসুমেই ভাল ব্যবসা হয়। মাঝেমধ্যে পুলিশ আসে। তবে এ বার এখনও পর্যন্ত এলাকায় তেমন তল্লাশি হয়নি।” তাঁর কথায়, “আমি অবশ্য তেমন শব্দবাজি তৈরি করি না।” কারখানার মধ্যে মাঝারি মাপের কারখানাই বেশি। দুষ্টচক্রের লোকজন বোমা কেনার ক্ষেত্রে মাঝারি মাপের কারখানাই পছন্দ করে। কারণ, গলিপথের আড়ালে ওই সব কারখানায় পুলিশি নজরদারি কম থাকে। কেন বেআইনি বাজি তৈরির কারখানাগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না? জেলা পুলিশের এক কর্তার জবাব, “ব্যবস্থা যে নেওয়া হয় না তা নয়। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে অভিযান চলে।” কারখানাগুলো যারা চালায়, তারা শাসক দলের ঘনিষ্ঠ হয়। শাসক দলের ছত্রছায়ায় থাকার ফলে বেআইনি বাজি তৈরির কারবারিদের অনেক সময় পুলিশ ধরে না বলে অভিযোগ। কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে তখনই নড়েচড়ে বসে পুলিশ। ধুনুরি বস্তির এক বাসিন্দা বলছিলেন, “আমাদের এলাকায় ওই বাড়িতে বাজি তৈরি যেন কুটির শিল্পে পরিণত হয়েছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy