অর্পিতা বেরা। —নিজস্ব চিত্র।
ছোটবেলায় ডাক্তার সেজে খেলার ছলে পুতুলের চিকিৎসা করত অর্পিতা বেরা। মাধ্যমিকে ভাল ফল করে এ বার বাস্তবে চিকিৎসক হতে চায় সে। ভগবানপুরের ভেড়ির বাজার যোগদা সৎসঙ্গ হাইস্কুলের ছাত্রী অর্পিতা মাধ্যমিকে ৬৬১ নম্বর পেয়েছে।
ছোট থেকেই অভাব চলার পথে বারবার বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তবু পড়াশোনার জেদ কখনও ছেড়ে দেয়নি সে। বাবা, মা, চার বছরের ভাইকে নিয়ে চার জনের সংসার। সামান্য ১০ কাঠা জমিতে চাষ ও লোকের বাড়িতে দিনমজুরি করে নুন আনতে পান্তা ফুরোয়। অর্পিতা অঙ্কে ১০০, জীবন বিজ্ঞানে ৯৯, ভৌত বিজ্ঞানে ৯৭, ইতিহাসে ৯৬, ইংরেজিতে ৯২, ভূগোলে ৯০ ও বাংলায় ৮৭ নম্বর পেয়েছে।
ভগবানপুর-১ ব্লকের হাড়মশানি গ্রামের বাসিন্দা অর্পিতার কথায়, ‘‘বড় হয়ে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। তবে জানি না বাবার এই অবস্থায় তা কী করে সম্ভব হবে।’’ পড়ার পাশাপাশি বাবাকে চাষের কাজেও সাহায্য করে অর্পিতা। এক প্রতিবেশী ও স্কুলের শিক্ষকের সাহায্য না পেলে ভাল ফল করতে পারতাম না, বলে চলে সে। বাবা বিষ্ণুপদ বেরা অভাব থাকা সত্ত্বেও মেয়েকে পড়ানোর বিষয়ে আশাবাদী। তিনি বলেন, ‘‘সেই ছোট থেকেই মেয়ের জন্য অনেকের সাহায্য পেয়েছি। আশা করছি, এ বারও কোন সহৃদয় ব্যাক্তি এগিয়ে আসবেন মেয়েকে সাহায্য করতে। তবে মেয়েকে আমি বড় করবই।’’
অর্পিতার ভাল ফলে তার স্কুলের শিক্ষকেরাও খুশি। স্কুলের প্রধান শিক্ষক প্রদীপকুমার মাইতি জানান, পঞ্চম শ্রেণি থেকে প্রতি বছরই প্রথম হয়ে এসেছে অর্পিতা। অমায়িক ব্যবহার ও অদম্য ইচ্ছাই ওকে সাফল্য এনে দিয়েছে। প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘আশা করি, বড় হয়ে ও স্কুল ও এলাকার মুখ উজ্জ্বল করবে।’’ অর্পিতার কথায়, ‘‘বড় আমাকে হতেই হবে। ডাক্তার হয়ে স্থানীয় মানুষদের সেবা করতে চাই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy