নিঃসঙ্গ: সুনসান চাতালে বাস আসে না। নিজস্ব চিত্র
যাত্রী সুবিধায় গড়া হবে বাসস্ট্যান্ড। কথা হয়েছিল বেশ কয়েক বছর আগে। সে জন্য দু’দফায় রাজ্য সরকার প্রায় দু’কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। বছর তিনেক আগে সেই বাসস্ট্যান্ডের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও হয়ে গিয়েছে। অভিযোগ একটি বাসও ঢোকে না ওই স্ট্যান্ডে। হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক ও তমলুক স্টেশনের কাছে নতুন বাসস্ট্যান্ড পড়ে রয়েছে তাই পড়ে থাকে সুনসান। ভবিষ্যতের সেখানে বাস ঢুকবে কিনা, তা নিয়ে শুরু হয়ে জল্পনা।
তমলুকে ট্রেন থেকে নেমে বাস ধরতে গেলে এক কিলোমিটার রাস্তা যেতে হয় ভ্যান রিকশা বা টোটোতে চেপে। তাতে সময় যেমন নষ্ট হয়, তেমনই খরচও বাড়ে। জেলা সদর তমলুক শহরের প্রায় মাঝখান দিয়ে চলে গিয়েছে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়ক। হলদিয়া থেকে মেদিনীপুর, বাঁকুড়া, বর্ধমান, ঘাটাল, ঝাড়গ্রাম, কলকাতাগামী বাসগুলি যাতায়াত করে ওই পথেই। আবার তমলুক শহর থেকে পাঁশকুড়াগামী রাজ্য সড়ক এবং মেচেদা কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে শ্রীরামপুর, ময়না, ট্যাংরাখালি, পুরশাঘাটগামী সড়কের বহু বাস চলে তমলুক শহরের উপর দিয়ে। এমন ব্যস্ত শহরে কোনও স্থায়ী বাসস্ট্যান্ড নেই। যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানোর কাজ চালায় বাসগুলি। ফল, রাজ্য সড়কে নিত্য যানজট।
সেই সমস্যা দূর করতে তমলুক স্টেশনের কাছে নতুন বাসস্ট্যান্ড তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তমলুক রেগুলেটেড মার্কেটের জন্য রাজ্য কৃষি বিপনন দফতরের অধিগৃহীত জমির একাংশ দিয়ে দেওয়া হয় বাসস্ট্যান্ডের জন্য। প্রথমে রাজ্য পরিবহণ দফতর বরাদ্দ করে প্রায় এক কোটি টাকায়। বাসে দাঁড়ানোর চাতাল, ছাউনি, অফিস ঘর ইত্যাদির তৈরির পর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হয় যায় ২০১৪ সালের মার্চে। তারপর থেকে তমলুক-ঘাটাল রুটের হাতে গোনা কয়েকটি বাস ছাড়া অন্য কোনও বাস সেখানে আসেনি বলে অভিযোগ।
প্রায় অব্যবহৃত বাসস্ট্যান্ডের চাতাল মাত্র দু’বছরের মধ্যেই নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ২০১৬ সালে পুরসভার প্রস্তাবে স্ট্যান্ড সংস্কারের জন্য রাজ্য ফের প্রায় এক কোটি টাকা বরাদ্দ করে। সেই কাজ চলছে। কিন্তু তারপরেও কি সুরাহা হবে স্থানীয় বাসিন্দাদের? প্রশ্ন তুলছেন তাঁরাই।
পুরপ্রধান রবীন্দ্রনাথ সেনের আশ্বাস, ‘‘বাসস্ট্যান্ডের চাতাল সংস্কারের কাজ আগামী এক মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ হবে। তারপর ওখান থেকে যাতে বাস ছাড়ে, সে বিষয়ে উদ্যোগী হব আমরাই।’’
কিন্তু গত দু’বছরে কেন সে চেষ্টা করা হল না? পুরপ্রধানের দাবি, ‘‘কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ড থেকে হলদিয়া-মেচেদা রাজ্য সড়কের সংযোগকারী রাস্তা অপ্রশস্ত ছিল। হলদিয়া উন্নয়ন পর্ষদের বরাদ্দ অর্থে ওই রাস্তা সম্প্রসারণ করা হয়েছে। এ বার আর কোনও সমস্যা নেই।’’
কিন্তু সে কথা মানতে নারাজ ‘ডিস্ট্রিক্ট বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক সুকুমার বেরা। তিনি সাফ জানিয়েছেন, ‘‘সংযোগকারী রাস্তা চওড়া হলেও সব বাস কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে দাঁড় করানো সম্ভব হবে না। কারণ দূরপাল্লার বাস ওখানে গেলে আমাদের সময় নষ্ট হবে। যাত্রীদের অসুবিধা হবে। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে
আলোচনা করব।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy