উচ্ছেদের প্রতিবাদে কংগ্রেসের অবস্থান। — নিজস্ব চিত্র।
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর ডিভিশনের ডিআরএম (ডিভিশনাল রেলওয়ে ম্যানেজার)-এর বাংলোর মালিকে বাড়ি ছাড়ার নির্দেশে উত্তেজনা ছড়াল খড়্গপুরে। শুক্রবার সকালে আরপিএফ কর্মীরা ডিআরএম বাংলোর আউট হাউসে অবৈধ ভাবে থাকার যুক্তিতে দু’ঘণ্টার মধ্যে ভজহরিকে বাড়ি ছাড়ার কথা বলে। উল্লেখ্য, খড়্গপুরে পুরভোটে ২৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছেন ভজহরিবাবুর ছোট ছেলে আশিস হেমব্রম। ডিআরএমের নির্দেশের খবর চাউর হতেই দলের নেতা-কর্মীদের নিয়ে আউট হাউসের সামনে অবস্থানে বসেন খড়্গপুরের কংগ্রেসের বিদায়ী পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পান্ডে। যদিও এ দিন বেলা দেড়টা নাগাদ রেল কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ স্থগিত রাখার আশ্বাস দেওয়ায় অবস্থান উঠে যায়।
খড়্গপুরে রেলের ডিআরএম গৌতম বন্দোপাধ্যায় ছুটিতে থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। রেলের খড়্গপুর ডিভিশনের জনসংযোগ আধিকারিক মুরলীধর সাহু বলেন, ‘‘কয়েক দিন ধরে উনি ডিআরএমের নির্দেশ মেনে কাজ করছেন না। তাই ডিআরএমের নির্দেশ মতোই তাঁকে সরে যেতে বলা হয়েছে।’’ কংগ্রেসের অভিযোগ, ভজহরিবাবুর ছোট ছেলে ভোটে প্রার্থী হওয়ায় তাঁকে আচমকা সরে যেতে বলা হল। এই অভিযোগ প্রসঙ্গে মুরলীধর সাহু বলেন, ‘‘এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নেই।’’
বছর কুড়ি ধরে ভজহরি হেমব্রম স্ত্রী ও দুই ছেলেকে নিয়ে খড়্গপুরের সাউথসাইডে ডিআরএম বাংলো চত্বরের পাশে আউট হাউসে থাকেন। রেলের কর্মী না হলেও তিনি মূলত ডিআরএম বাংলো চত্বরে বাগানের মালির কাজ করতেন। এই কাজের সূত্রেই তাঁকে সেখানে থাকার জায়গা দেওয়া হয়। এ দিন সকালে হঠাৎ আরপিএফ কর্মীরা ভজহরিবাবুকে বাড়ি খালি করে দেওয়ার কথা বলেন। নির্দেশ না মানলে জোর করে বাড়ি থেকে তাঁদের উচ্ছেদ করে দেওয়া হবে বলে হুমকি দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। এই নির্দেশে বেঁকে বসেন ভজহরি। ঘটনার খবর পেয়ে আসেন খড়্গপুরের বিদায়ী পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে, রেল কংগ্রেসের নেতা দামোদর রাও-সহ শহরের কংগ্রেস নেতারা। ভজহরিকে উচ্ছেদ না করার দাবিতে তাঁরা অবস্থানে বসেন।
কংগ্রেসের অভিযোগ, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারকে খুশি করতে রাজনৈতিক উদ্দেশে ওই প্রার্থীর পরিবারকে উচ্ছেদ করতে চাইছেন ডিআরএম। তাই ভোটের আগেই তাঁদের হঠাৎ সরে যেতে বলা হল। ভজহরি হেমব্রমের বক্তব্য, “বিগত ২০ বছর ধরে এই আউট হাউসে বসবাস করছি। তৎকালীন ডিআরএমের অনুমতি নিয়েই এখানে এসেছিলাম। সেই থেকেই ডিআরএম বাংলো চত্বরের বাগানে কাজ করছি।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘এখন তাঁকে বাড়ি খালি করতে বলা হচ্ছে। তিনি পরিবার নিয়ে কোথায় যাবেন?’’
এ দিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে চলে কংগ্রেসের অবস্থান-বিক্ষোভ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসেন খড়্গপুর টাউন থানার আইসি দীপক সরকার। আসেন আরপিএফ আধিকারিকেরাও। যদিও এ দিন বেলা দেড়টা নাগাদ রেল কর্তৃপক্ষ উচ্ছেদ স্থগিত রাখার আশ্বাস দেওয়ায় অবস্থান উঠে যায়। এ বিষয়ে রেলের আরপিএফ টাউন ওসি অজিত সিংহ বলেন, “এ বিষয়ে কিছু বলতে পারব না। আপাতত ভোটের সময়ে কিছু করা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অবস্থানও উঠে গিয়েছে।” যদিও ভোটের মুখে এক দলের এক প্রার্থীর পরিবারকে উচ্ছেদের নির্দেশে ষড়যন্ত্রের গন্ধ পাচ্ছে কংগ্রেস।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy