মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কে কোটি টাকারও বেশি তছরুপের অভিযোগে তাঁকে আগেই গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। মেদিনীপুরের সেই তৃণমূল নেতা সুকুমার ভুঁইয়াকে এ বার হেফাজতে নিল সিআইডি। সোমবার মেদিনীপুরের সিজেএম আদালত সুকুমারবাবুকে ৫ দিনের সিআইডি হেফাজতে পাঠিয়েছে। এ দিন পর্যন্ত তিনি জেল হেফাজতে ছিলেন।
ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্তভার নিয়েছে সিআইডি। আদালতের নির্দেশ পেয়ে গত শনিবার জেলে গিয়ে তাঁকে একপ্রস্থ জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়েছে। এ দিন সুকুমারবাবুকে ১০ দিনের জন্য হেফাজতে চেয়েছিল তদন্তকারী সংস্থা। তবে আদালত ৫ দিনের সিআইডি হেফাজতের নির্দেশ দেয়। ২৭ মে ফের সুকুমারবাবুকে মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে হাজির করাতে হবে। সিআইডি-র এক কর্তা বলেন, “ধৃতকে হেফাজতে নেওয়াটা জরুরি ছিল। ওঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার।’’
ওই সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র সরানো হতে পারে বলেও আশঙ্কা করছেন তদন্তকারী অফিসারেরা। তথ্যপ্রমাণ লোপাটের জন্য ব্যাঙ্কের কেউ কেউ এ কাজ করতে পারেন বলে তাঁদের আশঙ্কা। এ নিয়ে সমবায় দফতরকে সতর্কও করা হয়েছে। ‘মহিলা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট সোসাইটি’ নামে এই মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কের তিনটি কার্যালয় রয়েছে। মূল কার্যালয় মেদিনীপুরে। আর খড়্গপুর এবং চন্দ্রকোনা রোডে দু’টি শাখা রয়েছে। সোমবারই সিআইডির তরফে সমবায় দফতরকে চিঠি দিয়ে অনুরোধ করা হয়েছে, হয় ওই তিনটি শাখার ম্যানেজারকে সরানো হোক, নয়তো কিছু দিনের জন্য ছুটিতে পাঠানো হোক।
কেন এমন চিঠি? মামলার তদন্তকারী অফিসার নীরেন ভট্টাচার্য মুখ খুলতে নারাজ। তবে সিআইডির অন্য এক কর্তা মানছেন, “ব্যাঙ্কে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র রয়েছে। ব্যাঙ্কের একশ্রেণির কর্তা-কর্মীর মদতে ওই নথিপত্র সরানো হতে পারে বলে ব্যাঙ্কেরই কিছু কর্মী আমাদের কাছে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। সেগুলো লোপাট হলে তদন্ত ব্যাহত হবে।’’ সমবায় দফতর সূত্রে খবর, সিআইডির আর্জি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
এই মামলায় ব্যাঙ্কের এক কর্মী গোপন জবানবন্দি দেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে আজ, মঙ্গলবার ওই কর্মী মেদিনীপুর আদালতে এসে গোপন জবানবন্দি দিতে পারেন। তদন্তে নেমে ইতিমধ্যে ব্যাঙ্কের বেশ কয়েকজন কর্তা-কর্মীর সঙ্গে কথা বলেছেন তদন্তকারী অফিসারেরা।
এই মহিলা সমবায় ব্যাঙ্কের পরিচালন সমিতির সম্পাদিক মধুমিতা ভুঁইয়া। মধুমিতাদেবী ধৃত সুকুমারবাবুর স্ত্রী। অভিযোগ, স্ত্রীকে সামনে রেখে ব্যাঙ্কের সব কিছু পরিচালনা করতেন সুকুমারবাবুই। সম্প্রতি এক মহিলা গ্রাহক তছরুপের অভিযোগ দায়ের করেন। তারপর তদন্তে প্রায় ১ কোটি ৩১ লক্ষ ৬০ হাজার টাকা তছরুপের হদিস পায় সিআইডি। আজ, মঙ্গলবার সিআইডির দল ব্যাঙ্কে যেতে পারে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy