Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

অপহরণ তদন্তের সূত্রে খোঁজ মিলল শিশু পাচার চক্রের

এক কিশোরীকে অপহরণ করা হয়েছে, অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমেছিল কলকাতার ভবানীপুর থানার পুলিশ। ন’মাসের পুরনো অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত সেই তদন্তে মিলল শিশু পাচারের চক্রের হদিস। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থেকে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১৮ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:২৫
Share: Save:

এক কিশোরীকে অপহরণ করা হয়েছে, অভিযোগ পেয়ে তদন্তে নেমেছিল কলকাতার ভবানীপুর থানার পুলিশ। ন’মাসের পুরনো অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত সেই তদন্তে মিলল শিশু পাচারের চক্রের হদিস। পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি থেকে।

সোমবার সন্ধ্যায় কাঁথিতে গিয়ে কলকাতা পুলিশের তদন্তকারীরা স্থানীয় এক চিকিৎসক-সহ ছ’জনকে গ্রেফতার করেন। কাঁথির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) ইন্দ্রজিৎ বসু জানান, ধৃত চিকিৎসকের নাম সুমন হালদার। কাঁথির একটি নার্সিংহোমের ম্যানেজারকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে নার্সিংহোমটি। ভবানীপুর থানার পুলিশ গত বছর এপ্রিল মাসে অভিযোগ পেয়েছিল রামনগরের পদ্মলোচন বেরার বিরুদ্ধে। সোমবার ধরা পড়া ছ’জনের মধ্যে পদ্মলোচনও আছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, পদ্মলোচন ভবানীপুরের একটি বাড়িতে কেয়ারটেকারের কাজ করত। পড়শি এক কিশোরীর বাবা তার বিরুদ্ধে মেয়েকে অপহরণের অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু সেই সময়ে পদ্মলোচন বা ওই কিশোরী, কারও খোঁজ মেলেনি।

তবে ভবানীপুর থানার পাশাপাশি লালবাজারের অ্যান্টি হিউম্যান ট্রাফিক ইউনিট-ও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছিল। ৮ জানুয়ারি কলকাতা পুলিশ জানতে পারে, অপহৃত কিশোরী ও পদ্মলোচন বাঁশদ্রোণীতে রয়েছে। সেখান থেেকই কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়, গ্রেফতার হয় পদ্মলোচনও। তারপরেই হদিস মেলে শিশু পাচার চক্রের। পুলিশ সূত্রের খবর, পদ্মলোচন জানায়, তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের ফলে ওই কিশোরী গত অক্টোবরে এক কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়। সেই মেয়েকেই সে পাচার চক্রের হাতে তুলে দিয়েছে।

ওই কিশোরীকে নিয়ে কলকাতার একাধিক জায়গায় গর্ভপাত করাতে গিয়েছিল পদ্মলোচন। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানান, দেরি হয়ে গিয়েছে। তার পরেই পদ্মলোচন কিশোরীকে নিয়ে কাঁথিতে পালিয়ে যায়। কয়েক মাস সেখানেই ছিল।

অক্টোবরে কাঁথি শহরের থানাপুকুর পাড়ের একটি নার্সিংহোমে ওই কিশোরী কন্যাসন্তানের জন্ম দেয়। জন্মের পর মাকে পদ্মলোচন জানায়, শিশুটি অসুস্থ, চিকিৎসার জন্য তাকে অন্যত্র নিয়ে যেতে হবে। আসলে সে শিশুটিকে পাচার করে দেয়। তার কিছু দিনের মধ্যে ওই কিশোরীকে সে নিয়ে যায় কলকাতায়।

কাঁথি শহরের থানাপুকুর পাড়ের সেই নার্সিংহোমের ম্যানেজার নীলকমল সাহু, একটি ল্যাবের সহকারী কেশব দাস ও শহরের এক পান দোকানি ভবেশ গিরিকেও গ্রেফতার করা হয়েছে। সকলেই শিশু পাচারের ঘটনার সঙ্গে জড়িত বলে পুলিশের দাবি।

ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পারে, কলকাতার বরাহনগরে জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তির কাছে শিশুটি আছে। সোমবারই অভিযান চালিয়ে জয়ন্তবাবুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে তিন মাসের শিশুটিও। তাকে শহরের একটি হোমে রাখা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Child trafficking
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE