Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

ঝাড়গ্রামে মমতা, বিপাকে পর্যটকরা

ঝাড়গ্রাম হোটেল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মধুসূদন কর্মকারেরও মত, সরকারি ভাবে ঝাড়গ্রামে বড় অতিথিশালা দরকার।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ঝাড়গ্রাম শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৫০
Share: Save:

পুজোর ছুটি ফুরোয়নি। তার মধ্যেই তিন দিনের ঝাড়গ্রাম জেলা সফরে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আর তাই ঠাঁই নেই অরণ্যশহরের সরকারি-বেসরকারি লজ-হোটেলগুলিতে। পর্যটনের ভরা মরসুমে এমনিতেই হোটেলের ঘর বাড়ন্ত। তার উপর আগাম বুকিং বন্ধ হওয়ায় ব্যবসায়ী থেকে পর্যটক, সকলেই ক্ষুব্ধ।

মুখ্যমন্ত্রী আসবেন ৯ অক্টোবর। ১০ তারিখ প্রশাসনিক বৈঠক ও ১১ তারিখ হবে প্রশাসনিক জনসভা। ওই তিন দিনের আগাম বুকিং বাতিল করা হয়নি। অথচ তিন দিনের জন্য সরকারি অতিথিশালার সব ঘর প্রয়োজন বলে জানিয়েছে প্রশাসন। বাঁদরভুলার জঙ্গলে বন উন্নয়ন নিগমের যে প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র রয়েছে, সেখানকার ৬টি ঘরও ৯-১১ অক্টোবর প্রশাসন চেয়েছে। ফলে, ওই সময় যাঁদের আগাম বুকিং রয়েছে, তাঁরা এসে চরম হয়রানিতে পড়বেন বলেই আশঙ্কা।

প্রশাসন সূত্রের খবর, উত্তরবঙ্গ সফরের সময় হোটেলের আগাম বুকিং বাতিল হওয়ায় মমতার কাছে অভিযোগ করেন কিছু পর্যটক। তাই ঝাড়গ্রামে এ বার প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র এবং ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্সের আগাম বুকিং বাতিল করা হয়নি। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী এলে নিরাপত্তার যে কড়াকড়ি থাকে, তাতে তখন আদৌ সরকারি অতিথিশালায় পর্যটকরা থাকতে পারবেন কিনা সংশয়। এক সরকারি অতিথিশালার কর্মী বলছিলেন, “প্রশাসন সব ঘর চেয়েছে। পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা ঘর চাইলে দিতেই হবে। তখন পর্যটকরদের ঘর দেব কোত্থেকে?”

নিয়মমতো বিশেষ প্রয়োজনে শেষ মুহূর্তেও সরকারি অতিথিশালার আগাম বুকিং বাতিল হতে পারে। কিন্তু বেসরকারি হোটেল-লজের ঘর নেওয়ার ক্ষেত্রে প্রশাসন কোন নিয়মে গাজোয়ারি করছে, সেই প্রশ্ন উঠছে। ঝাড়গ্রামকে বরাবর পর্যটন মানচিত্রে তুলে ধরার কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। অথচ তিনি সফরে এলেই সব সরকারি লজ-হোটেলে ঠাঁই নেই দশা হয়। কপাল পোড়ে পর্যটকদের। কারণ, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আসেন রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষকর্তারা, নানা স্তরের আমলা ও নিরাপত্তার দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশকর্মীরা। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরাও হোটেলে বুকিং করেন। বন্দোবস্ত করতে কালঘাম ছোটে জেলা প্রশাসনের। এ বারও তা-ই।

বাস্তব হল, ঝাড়গ্রামে বেশি বাইরের লোকের থাকার যথাযথ পরিকাঠামো নেই। পর্যটন সংস্থা ‘ঝাড়গ্রাম ট্যুরিজম’-এর কর্তা সুমিত দত্ত বলছিলেন, “ঝাড়গ্রামে সাধারণ পর্যটকদের জন্য থাকার জায়গা সীমিত। মমতার সফরের সময় তাই সমস্যা হয়।” ঝাড়গ্রাম হোটেল ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মধুসূদন কর্মকারেরও মত, সরকারি ভাবে ঝাড়গ্রামে বড় অতিথিশালা দরকার।

পালা বদলের পরে ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ির বাইরে পর্যটন উন্নয়ন নিগমের ‘ট্যুরিস্ট কমপ্লেক্স’ হয়েছে। এখানে ২২টি ঘরে ৪৪ জন থাকতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রী এলে এখানেই ওঠেন। তা ছাড়া, ঝাড়গ্রাম রাজবাড়ির নিজস্ব অতিথিশালার ১০টি ঘরে ২৫ জন থাকতে পারেন। মুখ্যমন্ত্রীর সফরে দু’জায়গাতেই সাধারণের প্রবেশাধিকার থাকে না। ঝাড়গ্রাম জেলা পরিষদের সভাধিপতি সময় মাণ্ডি বলেন, “পর্যটকদের স্বাচ্ছন্দ্যের বিষয়টি প্রশাসনের নজরে রয়েছে। উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE