ডেঙ্গি-জ্বরে কাবু রেলশহর। খড়্গপুরে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ইতিমধ্যে ৭০-এ পৌঁছেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় সোমবার বৈঠকে বসে স্বাস্থ্য দফতর, পুরসভা ও রেলের আধিকারিকেরা। খড়্গপুরে এই ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে একটি নজরদারি কমিটি গড়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শহরে আবর্জনা সাফাইয়ের কাজ ঠিকমতো হচ্ছে কি না, তা দেখবে এই কমিটি। বৈঠক শেষে খড়্গপুরের পুরপ্রধান প্রদীপ সরকার বলেন, “নজরদারি কমিটিতে স্বাস্থ্য দফতর, পুরসভা, রেলের প্রতিনিধিরা থাকবেন। পাশাপাশি সচেতনতামূলক প্রচারে আরও জোর দেওয়া হবে।
শহরের বিভিন্ন এলাকায় হোর্ডিং টাঙানো হবে।’’
মাস কয়েক আগে থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুরের বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গির প্রকোপ দেখা দেয়। জেলায় ৭৪ জন এই রোগে আক্রান্ত বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। তার মধ্যে খড়্গপুর শহরেরই ৭০ জন। এ ছাড়া, গড়বেতা-৩ ব্লক, কেশপুর, ঘাটাল, পিংলায় একজন করে ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে।
খড়্গপুরে গত বছর শীতের মরসুমেও ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছিল। তারপর এ বার অনেকটা আগে থেকেই ডেঙ্গি মোকাবিলায় অভিযানের কথা বলেছিল স্বাস্থ্য দফতর ও পুরসভা। বাড়ি বাড়ি ঘুরে সমীক্ষাও শুরু হয়েছিল। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই সেই কর্মসূচি মুখ থুবড়ে পড়ে। শহরবাসীর অভিযোগ, অধিকাংশ জায়গাতেই সমীক্ষকরা গৃহকর্তাকে দিয়ে সই করিয়েই দায় সেরেছেন। চারপাশের পরিবেশ সম্পর্কে কোনও তথ্যই সংগ্রহ করেননি। ফলে, শহরের নানা প্রান্তে রাস্তা জুড়ে আবর্জনা, ডাবের খোলায় জল জমার ছবিটা পাল্টায়নি। পাল্লা দিয়ে ভবানীপুর, ইন্দা, গোলবাজার, কৌশল্যা, মালঞ্চ, তালবাগিচা, শ্রীকৃষ্ণপুর, দেবলপুর, খরিদা, উত্তর সিমলা, সুভাষপল্লি, নিউ সেটেলমেন্ট প্রভৃতি এলাকায় ডেঙ্গি ছড়িয়েছে।
দিন কয়েক আগেও রেলশহরে নতুন করে ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। পরিস্থিতি দেখে সোমবার তড়িঘড়ি ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়। বৈঠকে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক অরিন্দম নিয়োগী, পশ্চিম মেদিনীপুরের জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা, খড়্গপুরের মহকুমাশাসক সুদীপ সরকার, রেলের আধিকারিকরা। ডেঙ্গি রোধে কী করণীয় তা স্কুলে স্কুলে জানানো হবে বলেও বৈঠকে ঠিক হয়। মশার জন্ম প্রতিরোধে আগাম ব্যবস্থা না নেওয়ার অভিযোগ অবশ্য মানতে নারাজ খড়্গপুরের পুরপ্রধান। তিনি বলেন, “তেল স্প্রে করা হয়। ধোঁয়াও ছড়ানো হয়। এই কাজ এ বার আরও বেশি করে হবে।” আর জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের বক্তব্য, “মশাবাহিত রোগ প্রতিরোধে সচেতনতামূলক কর্মসূচি আরও বেশি করে হবে।”
পূর্ব মেদিনীপুরে ডেঙ্গি তেমন না ছড়ালেও পাশের জেলা ঝাড়গ্রামে ডেঙ্গি আক্রান্তের খোঁজ মিলেছে। ঝাড়গ্রাম শহরে পুরসভার সমীক্ষক দলের সদস্যরা দেখেছেন, একাধিক বাড়ির পিছনে ও আশপাশে জমা জলে কিলবিল করছে মশা। জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনী মাঝি বলেন, “গত কয়েকদিনের পুর-সমীক্ষায় ভাল রকম এডিস মশার লার্ভা মিলেছে। পুরসভাকে সচেতনতা প্রচার ও মশা মারার কর্মসূচিতে আরও জোর দিতে বলা হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy