দিঘার সমুদ্রসৈকত। ছবি: সংগৃহীত
শারদোৎসবের তিন মাসও বাকি নেই। বেড়ানো-প্রিয় বাঙালির একটা বড় অংশ এখন থেকেই পুজোর ছুটিতে বেড়াতে যাওয়ার পরিকল্পনা ছকে ফেলেছেন। শুরু হয়ে গিয়েছে হোটেল বুকিং। পাহাড়ে অশান্তির আগুন না নেভায় সৈকত শহর দিঘাই হতে চলেছে বহু পর্যটকের পুজোর গন্তব্য।
কিন্তু দিঘার সমুদ্র নিরাপদ তো? সমুদ্রস্নানে নেমে একের পর এক মৃত্যুতে সেই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে পর্যটকদের মনে।
শুক্রবারই নদিয়ার এক যুবক দিঘায় সমুদ্রস্নানে নেমে জোয়ারের টেনে তলিয়ে যান। ১৫ এপ্রিল থেকে ১৫ জুলাই, এই তিন মাসে দিঘা, মন্দারমণি ও তাজপুরে মোট ১০জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে শুধু দিঘায় মৃতের সংখ্যা ৬। তলিয়ে যেতে যেতেও নুলিয়াদের তৎপরতায় প্রাণে বেঁচেছেন জনা চল্লিশেক পর্যটক।
চলতি সপ্তাহে দিঘায় এসে সৈকতে নজরদারি বাড়ানোর কথা বলে গিয়েছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নুলিয়াদের সংখ্যা বাড়ানো, বিপদ এড়াতে হুটার বাজানোর মতো নানা ঘোষণা করেছেন তিনি। সেই মতো পুজোর আগে নিরাপত্তা বাড়ানোর তোড়জোড় শুরু হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নিজেই নিরাপত্তা বাড়ানোর কথা বলে গেছেন। নতুন নুলিয়া ও পুলিশকর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু
হয়ে গিয়েছে। আশা করছি পুজোর আগেই উপকূলবর্তী থানাগুলো নুলিয়া ও অতিরিক্ত পুলিশকর্মী পেয়ে যাবে।’’
ওল্ড দিঘা থেকে নিউ দিঘা— প্রায় আড়াই কিলোমিটার এলাকায় রয়েছেন ১৫জন নুলিয়া ও ৪জন বিপর্যয় মোকাবিলা দলের কর্মী। এ ছাড়া, স্থানীয় থানার পুলিশকর্মীরাও রয়েছেন। নুলিয়ারা কাজ করেন সকাল ৬টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত। তারপর সৈকতে নজরদারির ভার বর্তায় শুধু পুলিশকর্মীদের উপর। অভিযোগ, সকাল হোক বা রাত নজরদারিতে ফাঁক থেকেই যায়। আর সেই সুযোগে ঘটে বিপদ। তবে সমুদ্রস্নানের সময় কোন কোন বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে তা জানাতে নোটিস ঝোলানো হয়েছে। মাইকে প্রচার চলছে। বিপদ বুঝলেই বাজানো হচ্ছে বাঁশি।
এ সব সত্ত্বেও পর্যটকেরা নজর এড়িয়ে মদ্যপ অবস্থায় সমুদ্রে নেমে বিপত্তি ঘটাচ্ছেন বলে পুলিশের দাবি। আর দিঘা শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের যুক্তি, নজরদারিতে নিযুক্ত পুলিশকর্মীর সংখ্যা পর্যাপ্ত নয়। নতুন করে নুলিয়া ও পুলিশকর্মী নিয়োগ হলে এই সমস্যা মিটবে বলেই আশা।
যদিও নতুন করে নুলিয়া নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন বর্তমানে কর্মরত নুলিয়ারা। গত চার মাস এই নুলিয়ারা কোনও বেতন পাননি। ফলে, তাঁরা ক্ষুব্ধ। দিঘার নুলিয়া রতন দাস বলছিলেন, “নিজে জখম হয়েও লোকের প্রাণ বাঁচাচ্ছি। অথচ বেতন না মেলায় সংসার চালাতে পারছি না। নতুন নুলিয়া এলে ভাল। কিন্তু আমরাই যেখানে টাকা পাচ্ছি না, সেখানে নতুনরা কী করবে জানি না।’’ জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, তমলুক ট্রেজারিতে
প্রযুক্তিগত ত্রুটির কারণে নুলিয়াদের বেতন দিতে সমস্যা হচ্ছিল। শীঘ্রই বকেয়া বেতন মিটিয়ে
দেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy