পুলিশের তথ্যচিত্রের সিডি।
রাজ্য সরকারের চতুর্থ বর্ষপূর্তির মেলায় প্রদর্শিত হচ্ছে জেলা পুলিশের তথ্যচিত্র— ‘সাফল্যের চার বছর’। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, ‘জঙ্গলমহল হাসছে’। তথ্যচিত্রেও দাবি করা হয়েছে, ‘রাজ্যে পালাবদলের পরে সূচনা হয়েছে নতুন অধ্যায়ের। জঙ্গলমহল তথা পশ্চিম মেদিনীপুরের মানুষ আজ উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে সামিল। জেলা পুলিশও এই উন্নয়নে সামিল হতে পেরে গর্বিত।’
রাজ্য সরকারের চতুর্থ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মেদিনীপুরে বিদ্যাসাগর হলের মাঠে আয়োজিত মেলায় পুলিশের স্টলে এই তথ্যচিত্র প্রদর্শিত হচ্ছে। মিনিট আটেকের তথ্যচিত্রটির পরিকল্পনা জেলা পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষের। তাঁর কথায়, “জঙ্গলমহলের ছবিটা গত কয়েক বছরে অনেকটা বদলেছে। সর্বত্র শান্তি ফিরেছে। এই ছবিটাই তথ্যচিত্রে তুলে ধরা হয়েছে।”
তথ্যচিত্রের শুরুতেই দেখানো হয়েছে, জঙ্গলমহলের পথঘাট, ধানে ভরা খেত, পুকুর-নদী-গ্রাম। পুলিশের মতে, ২০০২ সালে জেলা ভাগের পর থেকেই পশ্চিম মেদিনীপুর সাক্ষী থেকেছে রক্তক্ষয়ী মাওবাদী নাশকতার। জঙ্গলমহলের মানুষের প্রতি বঞ্চনা, অনুন্নয়নকে হাতিয়ার করে মাথাচাড়া দেয় বিভেদকামী শক্তি। সন্ত্রাস-খুন-হুমকি হয়ে ওঠে রোজকার ঘটনা। ক্রমে সূচিত হল ঐতিহাসিক পট পরিবর্তন (রাজ্যে পালাবদল)। এই মুহূর্ত বোঝাতে তথ্যচিত্রে দেখানো হয়েছে সূর্যোদয়, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শপথগ্রহণ। এরপরই দেখানো হয়েছে, মাওবাদী বিদায়, পুলিশের উদ্যোগে সামাজিক কর্মসূচি, বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প, জঙ্গলমহল উৎসবের দৃশ্য। ‘কমিউনিটি পোলিসিং’- এর মাধ্যমে জেলার প্রায় ৫৭,২০০ মানুষ উপকৃত বলে দাবি পুলিশের। একই সঙ্গে তথ্যচিত্রে দাবি করা হয়েছে, জঙ্গলমহলে আর কর্মহীনতার আঁধার নেই। কত জন পুলিশে চাকরি পেয়েছেন, সেই খতিয়ানও দেওয়া হয়েছে তথ্যচিত্রে।
জেলা পুলিশের এই তথ্যচিত্র নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। শাসককে বিঁধছেন বিরোধীরা। বিজেপির জেলা সভাপতি তুষার মুখোপাধ্যায়ের মন্তব্য, “এ ভাবে ধাপ্পা দিয়ে, মিথ্যা কথা বলে আর কতদিন চলবে? জঙ্গলমহলের মানুষ এই সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফুঁসছে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক তরুণ রায়ের মতে, ‘‘জঙ্গলমহলে শ্মশানের শান্তি বিরাজমান। মানুষ নীরবে কাঁদছেন। ক্ষোভের মাধ্যমেই সেই কান্নার বহিঃপ্রকাশ হবে একদিন।’’
জবাবে তৃণমূলের জেলা সভাপতি দীনেন রায় বলেন, “মা-মাটি-মানুষের সরকারই জঙ্গলমহলে শান্তি ফিরিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিষ্ঠা নিয়ে কাজ করেছেন। মানুষ ওঁর কথা আর কাজে বিশ্বাসযোগ্যতা খুঁজে পেয়েছেন। এই পরিবেশ রক্ষা করতে হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy