জয়ী: তথ্য সংস্কৃতি আধিকারিকের সঙ্গে শ্রীকৃষ্ণ। নিজস্ব চিত্র
মূক-বধির যুবকটি দৌড়বিদ হিসেবে ইতিমধ্যে পরিচিত মুখ। গোয়ালতোড়ের সেই শ্রীকৃষ্ণ মাহাতোকে লোকশিল্পীদের দলে দেখে অবাকই হয়েছিলেন জেলার তথ্য-সংস্কৃতি দফতরের কর্তারা। পরে তাঁরা মানছেন, “অসম্ভব ইচ্ছে আর জেদ না থাকলে এটা হয় না।’’
শ্রীকৃষ্ণের বাবা ভরতচন্দ্র মাহাতোর লোকশিল্পীদের দল রয়েছে। সেখানেই ঝুমঝুমি বাজান শ্রীকৃষ্ণ। এ বার শারদোৎসবের মঞ্চেও দেখা যাবে তাঁকে। অনুষ্ঠান হবে কেশপুরের পঞ্চগ্রামে। পশ্চিম মেদিনীপুরের তথ্য-সংস্কৃতি আধিকারিক অনন্যা মজুমদার বলছিলেন, “ঝুমুর গানের সঙ্গে ঝুমঝুমির তাল মেলানোটাই বড় কথা। শ্রীকৃষ্ণ সেটা খুব ভাল ভাবেই করছে। ইচ্ছে থাকলে যে প্রতিবন্ধকতা বাধা নয়, ও তা প্রমাণ করে দিয়েছে।”
জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকস্তরের একের পর এক প্রতিযোগিতায় জেলার মুখ উজ্জ্বল করেছেন দৌড়বিদ শ্রীকৃষ্ণ। বছর একুশের শ্রীকৃষ্ণের বোন টুসু মাহাতো বলছিলেন, “দাদার প্রথম প্রথম ভালবাসা দৌড়। দ্বিতীয় ভালবাসা লোকশিল্প। আমাদের বাড়িতে লোকশিল্পের চর্চা বহুদিনের। দাদাও বেশ ভালই ঝুমঝুমি বাজায়।’’ ছোট থেকে অভাবের সঙ্গে লড়াই। তার উপর রয়েছে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা। জন্ম থেকেই মূক-বধির এই যুবক। সেই বাধা জয় করেই এগিয়ে চলেছেন শ্রীকৃষ্ণ। গত জুলাইয়ে তুরস্কে ‘সামার ডেফ অলিম্পিক’-এ দলগত রিলে দৌড়ে সপ্তম স্থান পেয়েছে ভারতের দল। ওই দলে ছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। ব্যক্তিগত ইভেন্টে ১০০ ও ২০০ মিটার দৌড়েও যোগ দিয়েছিলেন। ভরতচন্দ্রবাবু বলছিলেন, “গ্রামের বাড়িতে মাড়-ভাত খেয়ে অলিম্পিকে যোগ দেওয়াটাই বড় কাজ।’’ গত মার্চে চেন্নাইয়ে অনুষ্ঠিত ‘ন্যাশনাল গেমস ফর ডেফ’- এ ১০০ মিটার দৌড়ে দ্বিতীয় ও ২০০ মিটার দৌড়ে প্রথম স্থান পেয়েছিলেন গোয়ালতোড়ের এই যুবক। ভরতচন্দ্রবাবুর আক্ষেপ, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় সফল হয়েও কাজের সুযোগ পায়নি ছেলেটা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy