Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
কাঁথি ও দিঘায় জবরদখল উচ্ছেদ জেলা প্রশাসনের

এখানে নয় কেন, প্রশ্ন তমলুকে

প্রশাসন সূত্রে খবর, কয়েকদিন আগেই পূর্ত দফতর দখলদারদের সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল। হোটেল, পান-বিড়ির দোকান, চপ, মিষ্টির দোকান এমনকী সাইকেল স্ট্যান্ডও গড়ে উঠেছিল জায়গা দখল করে।

উচ্ছেদ: কাঁথিতে। নিজস্ব চিত্র

উচ্ছেদ: কাঁথিতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাঁথি ও তমলুক শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০১৭ ০১:১৩
Share: Save:

দিঘায় উচ্ছেদ হয়। হয় কাঁথিতেও। অথচ জেলা সদর তমলুক, পাঁশকুড়ায় বাসিন্দারা জবরদখল নিয়ে বার বার অভিযোগ জানালেও সেখানে প্রশাসনের কোনও নজর পড়ে না।

সোমবার কাঁথি শহরে ও দিঘায় দীর্ঘদিনের জবরদখল উচ্ছেদ অভিয়ান চালায় প্রশাসন। আর তা ঘিরেই প্রশ্ন তুলেছেন তমলুক ও পাঁশকুড়ার মানুষ। তাঁদের বক্তব্য, একই জেলা, একই প্রশাসন। অথচ ওখানে পারলেও প্রশাসন এখানে তা পারে না কেন?

এদিন কাঁথি শহরে ও দিঘায় উচ্ছেদ অভিযান নিয়ে উত্তেজনা থাকায় সকাল থেকেই মোতায়েন করা হয়েছিল কমব্যাট ফোর্স ও বিশাল পুলিশবাহিনী। কাঁথিতে এদিন ভেঙে দেওয়া হয় বেআইনি ৪২টি দোকান। কাঁথি-মেচেদা ও কাঁথি-রসুলপুর রাস্তার সংযোগস্থলে, রূপশ্রী সিনেমার ঠিক সামনে পূর্ত দফতরের জায়গা দখল করে তৈরি ঝুপড়ি উচ্ছেদ করা হয়। শহরের সেরপুর এতোয়ারিবাড়ের বাসিন্দা প্রয়াত অবন্তী কুমার পাইকের কয়েকজন শরিক এই ঝুপড়ি উচ্ছেদের জন্য হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন। মামলাকারীদের দাবি পূর্ত দফতর থেকে তাঁরা দীর্ঘকালীন লিজ পেয়েছেন। কিন্তু জবরদখলের জন্য জায়গা ব্যবহার করতে পারছেন না। বাড়ি থেকে বেরানোর পথও বন্ধ হয়ে গিয়েছে। শেষ পর্যন্ত হাইকোর্ট ওই জবরদখল উচ্ছেদের জন্য প্রশাসনকে নির্দেশ দেন। মামলাকারীদের তরফে নিরঞ্জন বেরা ও প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “প্রায় ৪০ বছর ধরে মামলা চলছিল। এতদিনে সুবিচার পেলাম।’’

প্রশাসন সূত্রে খবর, কয়েকদিন আগেই পূর্ত দফতর দখলদারদের সরে যাওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছিল। হোটেল, পান-বিড়ির দোকান, চপ, মিষ্টির দোকান এমনকী সাইকেল স্ট্যান্ডও গড়ে উঠেছিল জায়গা দখল করে। এ দিন পূর্ত দফরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার, কাঁথি মহকুমার উপশাসক কৌশিক চট্টোপাধ্যায়, কাঁথি মহকুমা পুলিশ আধিকারিক পার্থ ঘোষ-সহ বিশাল পুলিশ বাহিনীর উপস্থিতিতে জবরদখল ভেঙে দেওয়া হয়।

দখল-হটাও: দিঘায়। নিজস্ব চিত্র

যদিও শেরপুর এতোয়ারিবাড় ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক কণিষ্ক পাণ্ডা বলেন, “এখানে ৪২টি পরিবার দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করছিলেন। এখন তাঁদের কী হবে? আমরা পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী ও কাঁথি পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন্দু অধিকারীর কাছে এঁদের পুনর্বাসনের দাবি জানাব।’’

ওল্ড দিঘার নেহরু মার্কেটের উল্টোদিকে সৈকতে যাওয়ার রাস্তায় এবং নিউ দিঘায় সৈকত লাগোয়া রাস্তাতেও এদিন জবরদখল উচ্ছেদ অভিযান চালায় শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদ ( ডিএসডিএ )। সৈকতে যাওয়া আসার রাস্তা পরিষ্কার এবং শহরের সৌন্দর্য রক্ষায় এমন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে। ডিএসডিএ-র প্রশাসক সুজন দত্ত বলেন, “২০১২-’১৩ সালে পর্ষদ এক সমীক্ষা করে তালিকা তৈরি করে। সেই তালিকায় যে সব হকার বা ঝুপড়ি মালিকের নাম রয়েছে তাদের অবশ্যই পুনর্বাসন দেওয়া হবে।’’

দিঘায় ও কাঁথিতে উচ্ছেদ অভিযান শুরু হওয়ায় তা নিয়ে সরব হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের জেলা সদর তমলুক এবং পাঁশকুড়ার মানুষ। তাঁদের অভিযোগ, রাস্তা জুড়ে বেআইনি ভাবে দোকান, ঝুপড়ি, ট্রেকার স্ট্যান্ডের জন্য তাঁদের যাতায়াত দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। অথচ দখলদার হটাতে প্রশাসন নির্বিকার। অথচ একই কাজ তাঁরা করছেন কাঁথি ও দিঘায়। তা হলে তাঁদের এলাকায় কেন উচ্ছেদ অভিযান হবে না সেই প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।

যদিও প্রশাসন সূত্রে খবর, তমলুক শহরের মানিকতলা থেকে নিমতলা সড়কের ধারে সরকারি জায়গায় গড়ে ওঠা ৭০০টি দোকানকে চিহ্নিত করে তাদের সরানোর পরিকল্পনা হয়েছে। ওই সব দোকানদারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করতে কয়েকটি মার্কেট কমপ্লেক্স তৈরি করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE