Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

গোপগড়ে ঐতিহ্যের ভবনে অবাধে মদ্যপানের আসর

লাল রঙের ভাঙাচোরা ‘হেরিটেজ’ ভবনের দেওয়ালে জ্বলজ্বল করছে সাইন বোর্ড। বিপদ হলে কর্তৃপক্ষ যে দায়ী নন, লেখা আছে তাও। কিন্তু শুনছে কে! নিষেধ উড়িয়ে মেদিনীপুর শহরের অদূরে বন দফতরের গোপগড় ইকো পার্ক চত্বরের ‘হেরিটেজ’ ভবনে মদ্যপান, অসামাজিক কাজকর্ম চলছে বলে অভিযোগ।

জরাগ্রস্ত: অনাদরে ঐতিহ্যের ভবনে। ভিতরে চলে কুকাজ। নিজস্ব চিত্র

জরাগ্রস্ত: অনাদরে ঐতিহ্যের ভবনে। ভিতরে চলে কুকাজ। নিজস্ব চিত্র

কিংশুক গুপ্ত
মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ২৭ মার্চ ২০১৭ ০১:৫৭
Share: Save:

‘প্রবেশ নিষেধ’।

লাল রঙের ভাঙাচোরা ‘হেরিটেজ’ ভবনের দেওয়ালে জ্বলজ্বল করছে সাইন বোর্ড। বিপদ হলে কর্তৃপক্ষ যে দায়ী নন, লেখা আছে তাও। কিন্তু শুনছে কে! নিষেধ উড়িয়ে মেদিনীপুর শহরের অদূরে বন দফতরের গোপগড় ইকো পার্ক চত্বরের ‘হেরিটেজ’ ভবনে মদ্যপান, অসামাজিক কাজকর্ম চলছে বলে অভিযোগ।

মেদিনীপুর শহরের উপকন্ঠে প্রায় ৭৫ হেক্টর এলাকা জুড়ে রয়েছে বন দফতরের ‘গোপগড় হেরিটেজ অ্যান্ড নেচার ইকো ট্যুরিজম সেন্টার’। প্রকৃতির মাঝে বনভোজন, বিনোদন ও বেড়ানোর আদর্শ জায়গা পার্কে রয়েছে বন দফতরের অতিথিশালা, ওয়াচ টাওয়ার, বিভিন্ন প্রজাতির গোলাপ বাগান। সপ্তাহে সাতদিনই খোলা থাকে এই প্রকৃতি পর্যটন কেন্দ্র।

জনশ্রুতি, এই এলাকাটি মহাভারতের বিরাট রাজার স্মৃতি বিজড়িত চত্বর। ‘হেরিটেজ’ এই ভবনেরও পরতে পরতে জড়িয়ে ইতিহাস। অনেকের মতে, ওড়িশার রায়বনিয়া গড়ের রাজা বিরাটগুহ মেদিনীপুরে উঁচু টিলার উপর ওই অট্টালিকাটি তৈরি করেছিলেন। মেদিনীপুরের পুরাতত্ত্ব গবেষক চিন্ময় দাশের অবশ্য দাবি, “হেরিটেজ ভবনটি দেড়শো বছরের পুরনো। হুগলির তেলিনিপাড়ার বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের কোনও এক জমিদার বাগানবাড়ি হিসেবে ওই ভবনটি তৈরি করেছিলেন বলে শোনা যায়।”

অথচ এমন প্রাচীন একটি ভবনে গেলেই চোখে পড়বে, ইতিউতি ছড়িয়ে রয়েছে মদের বোতল। অসামাজিক কাজেরও রমরমা বাড়ছে বলে অভিযোগ। এমন ঘটনা আটকাতে ব্যবস্থা নেন না কেন? প্রশ্ন শুনে থমকালেন পার্কের এক কর্মী। বিরক্তির সঙ্গে তিনি জবাব দেন, “কী করব বলুন তো, যাঁরা ওখানে ঢোকে তাঁদের কোনও লজ্জা নেই। তাকিয়েই দেখুন না। ওদের কাজকর্ম দেখে আমরাই লজ্জা পেয়ে সরে আসি। অন্য দর্শকরাও অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন।”

তখন বিকেল তিনটে। ভবনের ভিতরে ঢুকেই চোখ গেল দুই যুবক-যুবতীর দিকে। প্রকাশ্যেই তাঁরা মদ্যপান করছিলেন। একপাশে ঝোপের আড়ালে আরও দু’জনকে দেখা গেল। মেদিনীপুরের বাসিন্দা কবি সৌতিক হাতি বলছিলেন, “হেরিটেজ ভবনের ভিতরে যাচ্ছেতাই চলে! কর্তৃপক্ষের কড়া হওয়া জরুরি। ওখানে সর্বক্ষণ কড়া নজরদারিও প্রয়োজন।”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Gopegarh Heritage Bhawan
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE