গরমে রক্তের সঙ্কট মেটাতে থানা ও পুরসভাগুলিতে রক্তদান শিবির করার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। থানাগুলিতে শিবিরের পর রক্তের জোগানের সঙ্কট কিছুটা কাটানো গিয়েছে বলে জানিয়েছিল স্বাস্থ্য দফতর। অথচ জেলার সবং গ্রামীণ হাসপাতালে ‘ব্লাড স্টোরেজ ইউনিট’-ই না থাকায় সমস্যা থেকে রেহাই পাননি রোগী ও তাঁর পরিজনেরা।
পশ্চিম মেদিনীপুরে এখন ৩টি ব্লাড ব্যাঙ্ক রয়েছে। মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল, ঘাটাল মহকুমা হাসপাতালে ও খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে। ‘ব্লাড স্টোরেজ ইউনিট’ রয়েছে চন্দ্রকোনা গ্রামীণ হাসপাতালে ও বেলদা গ্রামীণ হাসপাতালে। বছর কয়েক আগে সবং গ্রামীণ হাসপাতালেও এই ইউনিট গড়ে তোলার পরিকল্পনা হয়। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তাও বলছেন, “এখন সবং, পিংলা ও তার আশপাশের এলাকার মানুষ রক্তের জন্য খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে আসেন। খড়্গপুরে রক্ত না পেলে মেদিনীপুরে এসে খোঁজখবর করেন। সবংয়ে এই ইউনিট চালু হলে আর ওখানকার মানুষকে খড়্গপুর-মেদিনীপুরে আসতে হবে না।” যদিও সবংয়ে এই ইউনিট আজও গড়ে ওঠেনি।
অনেক সময়ে সঙ্কটজনক রোগীর জন্য দ্রুত রক্তের প্রয়োজন হয়। কিন্তু তা মেলে না। সবংয়ের কাছাকাছি ব্লাড ব্যাঙ্ক বলতে খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে ব্লাড ব্যাঙ্ক। প্রয়োজনে এখান থেকে রক্ত নিয়ে যেতে হয় সবংয়ে। এ ক্ষেত্রে ঝক্কিও রয়েছে। অথচ, গ্রামীণ হাসপাতালে ওই ইউনিট চালু হলে অনেকেই উপকৃত হতেন। শুধুমাত্র রক্তের জন্য আর সঙ্কটজনক রোগীদের জেলার সদর কিংবা মহকুমা সদরের হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হত না।
কী থাকার কথা এই ইউনিটে? জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, প্রতিটি ইউনিটে একজন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট (এমটি) ও একজন মেডিক্যাল অফিসার (এমও) থাকার কথা। প্রতিটি গ্রুপের অন্তত দু’ইউনিট করে রক্ত (২ বোতল) থাকার কথা। সবং গ্রামীণ হাসপাতালে ৬০টি শয্যা রয়েছে। রোগী ভর্তি থাকেন গড়ে ৭০- ৮০ জন। শয্যার অভাবে একাংশ রোগীকে মাটিতেও থাকতে হয়।
পরিস্থিতি দেখে ফের জেলা স্বাস্থ্য দফতরে দরবার করেছেন স্থানীয় বিধায়ক মানস ভুঁইয়া। মানসবাবুর কথায়, “জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সঙ্গে কথা হয়েছে। সবং হাসপাতালে এই ইউনিট গড়ার কথা জানিয়েছি। উনি উপযুক্ত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন।” এই গ্রামীণ হাসপাতালে যে ‘ব্লাড স্টোরেজ ইউনিট’ গড়া জরুরি তা মানছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরও। পশ্চিম মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক গিরীশচন্দ্র বেরা বলেন, “এই ইউনিট চালু করতে হলে নূন্যতম কয়েকটি পরিকাঠামো জরুরি। সবং গ্রামীণ হাসপাতালে ওই ইউনিট গড়ে তোলা প্রয়োজন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। জেলার দিক থেকে যা পদক্ষেপ করার করা হচ্ছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy