Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

দিন বদলাতে পারে শিল্পই, বুঝেছে শালবনি

একটা কারখানা শালবনির গোদাপিয়াশালের চেহারাটাই বদলে দিয়েছে। সেচের হাল ফিরেছে। নতুন রাস্তা, আলো, দোকানপাট হয়েছে। সব থেকে বড় প্রাপ্তি, কারখানায় স্থানীয় বহু ছেলে কাজ পেয়েছে।

বরুণ দে
শালবনি শেষ আপডেট: ২৭ মে ২০১৭ ০১:৪৮
Share: Save:

৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে এলাকাটা বছর কয়েক আগেও ছিল ধু ধু মাঠ। সেচের অভাবে বেশিরভাগ জমিতে চাষ হত না। যেটুকুতে হত তাও একফসলি।

একটা কারখানা শালবনির গোদাপিয়াশালের চেহারাটাই বদলে দিয়েছে। সেচের হাল ফিরেছে। নতুন রাস্তা, আলো, দোকানপাট হয়েছে। সব থেকে বড় প্রাপ্তি, কারখানায় স্থানীয় বহু ছেলে কাজ পেয়েছে। মহিলারাও স্বনির্ভর প্রকল্পে কাজ শিখে রোজগার করছেন। চোখের সামনে বদলটা দেখেছেন বলেই গোদাপিয়াশালে ওসিএল ইন্ডিয়া লিমিটেডের সিমেন্ট কারখানার সম্প্রসারণে আপত্তি নেই এলাকাবাসীর। কারখানার নতুন ইউনিট গড়ার আগে জনশুনানিতে তাঁরা শিল্পের পক্ষে সওয়াল করলেন।

ওসিএলের সিমেন্ট কারখানার সম্প্রসারণ ও নতুন ইউনিট গড়া নিয়ে গ্রামবাসীর মত জানতে শুক্রবার রাজ্যের দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তত্ত্বাবধানে শালবনি কমিউনিটি হলে জনশুনানি হয়। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দা জয়ন্ত মণ্ডল বলেন, “প্রথমে একটা ভয় ছিল, শিল্প হলে এলাকার ক্ষতি হবে না তো। সেই ভয় কেটে গিয়েছে। এলাকার অর্থনীতিটাই বদলে দিয়েছে এই কারখানা।” অরুণ মিদ্যা, শম্পা পণ্ডিতেরও মত, “কারখানা হওয়ায় এলাকার অনেক উন্নয়ন হয়েছে। গ্রামে রাস্তা, আলো, জল— সব হয়েছে।” সন্তুলাল মাইতির কথায়, “জমিদাতারা অনেকেই কারখানায় কাজ পেয়েছেন। কারখানা বাড়লে আরও বেকার ছেলেমেয়ে কাজ পাবে। শিল্প ছাড়া এখন গতি নেই।”

পশ্চিম মেদিনীপুরের শালবনিতেই হচ্ছে জিন্দলদের প্রস্তাবিত সিমেন্ট কারখানা। সেই প্রকল্পে জমিদাতাদের সংগঠনের নেতা পরিষ্কার মাহাতোরও মত, “মানুষ তো শিল্পের আশাতেই জমি দিয়েছেন। কারণ, শিল্প মানে এলাকার উন্নয়ন, কর্মসংস্থান।”

গোদাপিয়াশালে ওসিএলের সিমেন্ট কারখানার কাজ শুরু হয়েছিল ২০০৮ সালে। এখানে বছরে ১.৩৫ মিলিয়ন টন সিমেন্ট উৎপাদন হয়। কর্মী ৪৮০জন। এর মধ্যে ৩৬৩জনই জেলার। ২৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগে নতুন ইউনিট চালু হলে উৎপাদন বেড়ে বছরে ১.৭৫ মিলিয়ন টন হবে। কর্মসংস্থান হবে আরও ৪০০জনের। নতুন ইউনিটের জন্য জমি অধিগ্রহণ করতে হবে না। রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের থেকে পাওয়া ১৫৪.৪৩ একর জমি সংস্থার হাতে রয়েছে।

এ দিনের জনশুনানিতে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সিনিয়র ইঞ্জিনিয়ার সৌভিক গঙ্গোপাধ্যায়, অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) সুরেন্দ্র মিনা, জেলা সভাধিপতি উত্তরা সিংহ, শালবনি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নেপাল সিংহের পাশাপাশি সংস্থার এগ্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টর গণেশ কুন্তিয়ার, ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার জয়ন্ত ঘোষ হাজির ছিলেন। তাঁদের সামনে বেশ কিছু আর্জিও জানান এলাকাবাসী। কেউ চান, খেলার মাঠ সংস্কার হোক। কারও দাবি, কারখানার বাইরেও গাছ লাগানো হোক। সংস্থার এগ্‌জিকিউটিভ ডিরেক্টর গণেশবাবুর আশ্বাস, “মানুষকে সঙ্গে নিয়েই এই কারখানা এগোবে। এলাকার আরও উন্নয়নে সব রকম চেষ্টা হবে।”

জনশুনানির শেষে প্রশাসনিক কর্তাদের মুখে চওড়া হাসি। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) সুরেন্দ্র মিনা বলেন, “জনশুনানি খুব ভাল হয়েছে। কিছু সমস্যার কথা উঠে এসেছে। সেগুলোর সমাধান করেই নতুন কারখানার কাজ এগোবে।”.

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Salboni শালবনি Industry
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE