বার্তা: পুরবাসীকে সচেতন করতে ঝাড়গ্রাম পুরসভার সেই ব্যানার। নিজস্ব চিত্র
নির্মূল করতে হবে মশা। আর তাই মশা ও মশাবাহিত অসুখ-নিধনে দশ দাওয়াই নিয়ে পুরসভার ব্যানারে হাজির দুর্গা। যেখানে দেখা যাচ্ছে দেবীর ত্রিশূলে অসুর নয়, বিদ্ধ মশা!
পুজোর আগে ঝাড়গ্রাম শহরে মশা দমনের অভিযানে এ ভাবেই পুরবাসীকে সচেতন করতে সামিল হয়েছেন দশভূজা। ‘ডেঙ্গির পরাজয়, সুস্বাস্থ্যের জয়’, ‘ডেঙ্গির বিনাশে হোক শুভ শক্তির সূচনা’ শীর্ষক ব্যানারটি দেখলে আচমকা পুজোর কোনও ব্যানার বলে ভ্রম হতে বাধ্য। দুর্গার ছবি দেওয়া ওই ব্যানারে লেখা রয়েছে, ‘মশা-বাহিত রোগ প্রতিরোধে দশভূজার দশ উপদেশ’। যার মধ্যে রয়েছে, মশারি ব্যবহার, পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা, সপ্তাহে একদিন এয়ারকুলার, চৌবাচ্চা, জলের ট্যাঙ্ক, ফুলের টব প্রভৃতির জমা জল ফেলে ভাল ভাবে শুকিয়ে নেওয়া, দরজা-জানালায় মশা নিরোধক সূক্ষ্ম জাল ব্যবহার, নিকটবর্তী জলাশয়ে মশাভোজী মাছের চাষ, জ্বর হলে দ্রুত রক্ত পরীক্ষা করা, হাত-পা ঢাকা হালকা পোশাক পরার মতো ১০টি দাওয়াই। রঙচঙে ব্যানারটি চোখে পড়বে সহজেই।
হঠাৎ কেন এ ধরনের উদ্যোগ?
স্বাস্থ্য দফতরের নির্দেশে মশা-বাহিত রোগ প্রতিরোধে ঝাড়গ্রাম পুরসভা গত ১ মে থেকে শহরের ১৮টি ওয়ার্ডে বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে। চলবে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত। পুরসভা সূত্রে দাবি, প্রথম দফার সমীক্ষায় ১৮টি ওয়ার্ডের ১৪ হাজার ৩৮১ টি বাড়িতে তথ্য সংগ্রহ ও সমীক্ষা শেষ হয়েছে। ১৯ হাজার ৭৪৭টি চৌবাচ্চা, জলভর্তি পাত্র-সহ বিভিন্ন জলপূর্ণ আধার পরীক্ষা করে ২০৭টি জায়গায় মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে। যা চিন্তায় ফেলেছে পুরসভাকে। যদিও মশানাশক স্প্রে করার ফলে পরিস্থিতির অনেকটা উন্নতি হয়েছে বলে পুর কর্তৃপক্ষের দাবি।
কিন্তু জুন মাসে দু’টি পর্যায়ে ৩১ হাজার ৬২২টি জমা জলের জায়গা ও পাত্র পরীক্ষা করে ৪৫টি জায়গায় মশার লার্ভা মেলে। জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহে মাত্র পাঁচ দিনে (৭-১১ জুলাই) ১৮টি ওয়ার্ডে ১৪ হাজার ০৬৪টি পরিষ্কার জমা জলের জায়গা পরীক্ষা করে ৬৯টি জলাধার ও পাত্রে মশার লার্ভা পাওয়া গিয়েছে। পুরসভা সূত্রের দাবি, এখনও পুরবাসীর একাংশ বিশেষত, বস্তি এলাকার মানুষ মশা ও মশাবাহিত রোগ সম্পর্কে সচেতন নন। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, অনেকেই মশারি ব্যবহার করেন না। পুরকর্মীরা নোংরা পরিষ্কার করে মশা নাশক তেল স্প্রে করে আসার পরে ফের একাংশ বাসিন্দা চারপাশের পরিবেশ অপরিচ্ছন্ন করে তুলছেন। জল জমিয়ে রাখছেন। জুলাইয়ের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে শহরে ৪১ জন জ্বরে আক্রান্ত হয়েছেন। তবে এখনও কারও ডেঙ্গি ধরা পড়েনি।
পুরসভার ভাইস চেয়ারপার্সন শিউলি সিংহ বলেন, “জনসাধারণকে সচেতন করতে স্বাস্থ্য দফতরের সহযোগিতায় নানা ধরনের প্রচারপত্র ও ব্যানার তৈরি করা হয়েছে। শারদোৎসবকে ঘিরে বাঙালির আবেগ সর্বজনীন। তাই শহরজুড়ে ‘দশভূজার দশ উপদেশ’ ব্যানার দিয়ে শহরবাসীকে বিশেষ ভাবে সচেতন করতে চাইছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy